বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ আল মামুন হত্যা মামলার অন্যতম আসামি বিএনপি নেত্রী নায়াব ইউসুফ আহমেদ একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
Advertisement
হত্যা মামলার আসামি হওয়া সত্ত্বেও তিনি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে সাধারণ ভোটারসহ বিভিন্ন মহলে। এ হত্যা মামলার আসামি প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিলেও ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি নায়াব ইউসুফ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও গ্রেফতার করেনি পুলিশ। তাকে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গি চৌরাস্তার মোড় এলাকায় একটি চায়ের দোকানে প্রধানমন্ত্রীকে কটূক্তির প্রতিবাদ করায় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ইউসুফ আল মামুনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
Advertisement
এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নিহতের ভাই সোহরাব বেপারী বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। মামলায় নায়াব ইউসুফ আহমেদসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও অনেককে আসামি করা হয়। ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত আসামি কাশেম বেপারীসহ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের পক্ষে গত বৃহস্পতিবার বায়তুল আমানে ও শনিবার সিঅ্যান্ডবি ঘাট এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালান নায়াব ইউসুফ আহমেদ।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসি এ এফ এম নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নায়াব ইউসুফ আহমেদের নাম রয়েছে। তিনি মামলার উল্লেখযোগ্য আসামি। নায়াব ইউসুফকে আইনের আওতায় আনতে তৎপর রয়েছে পুলিশ।
ফরিদপুর কোতোয়ালি আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, শান্ত পরিবেশকে অশান্ত করতে বিএনপি মরিয়া হয়ে উঠেছে। আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফকে নির্মমভাবে হত্যা, এরপর আওয়ামী লীগ অফিস আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা প্রমাণ করে বিএনপি আগুন সন্ত্রাসীর দল। ইউসুফকে হত্যা করার পর তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। এ বিষয়ে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
Advertisement
ফরিদপুর জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক স্বপন পাল বলেন, ময়েজ মঞ্জিলে বসে কামাল ইউসুফ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে নিয়ে চলাফেরা করছেন। হত্যাকাণ্ডের অন্যতম আসামি নায়াব ইউসুফ প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণা চালালেও পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। পুলিশের এ ধরনের আচরণে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন খাঁন বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফ হত্যা মামলার বেশ কয়েকজন এজাহারভুক্ত আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
হত্যা মামলার আসামি নায়াব ইউসুফ প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একজন হত্যা মামলার আসামি কোনোভাবেই এমন কাজ করতে পারে না। মামলার অন্যতম আসামি নায়াব ইউসুফ। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বি কে সিকদার সজল/এএম/এমএস