আদালত-সংসদ-বিরোধীদল এই ত্রিমুখী চাপের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন সদ্যনিযুক্ত শ্রীলঙ্কার বিতর্কিত প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে। তার এ পদত্যাগের মাধ্যমে দেশটিতে গত দুই মাস ধরে চলা রাজনৈতিক অচলাবস্থার অবসান হলো।
Advertisement
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, শনিবার কলোম্বোতে নিজ বাসভবনে সাংবাদিক ও সমর্থকদের সামনে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেন রাজাপাকসে। পদত্যাগ করার পর এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে ৭৩ বছর বয়সী এই নেতা বলেন, পদত্যাগের মাধ্যমে তিনি প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনাকে নতুন সরকার গঠনের পথ করে দিলেন।
গতকাল শুক্রবার শ্রীলঙ্কান পার্লামেন্ট সদস্য ও রাজাপাকসের ছেলে নামাল রাজাপাকসে এক টুইট বার্তার মাধ্যমে জানান, দেশকে স্থিতিশীল করার স্বার্থে তার বাবা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন। নামাল রাজাপাকসে বলেন, ‘জাতীয় স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে আগামীকাল (আজ শনিবার) জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে।’
গত ২৬ অক্টোবর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে রনিল বিক্রমাসিংহকে বরখাস্ত করে তার মন্ত্রিসভা বিলুপ্ত ঘোষণা করলে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয় দ্বীপরাষ্ট্র শ্রীলঙ্কায়। সিরিসেনা ওই দিন রাতেই সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপাকসেকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন।
Advertisement
পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে ক্ষমতা ছেড়ে না দেয়ার ঘোষণা দেন। সিদ্ধান্ত বিরোধিতার মুখে পড়ার পর পার্লামেন্ট ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে প্রকৃত অর্থে কোনো সরকার নেই।
পদচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন থাকায় চাপের মুখে পড়ে সিরিসেনা ও রাজাপাকসে। বিক্রমাসিংহের দলসহ আরও দুটি দল প্রেসিডেন্টের এমন সিদ্ধান্তের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন।
গত বৃহস্পতিবার দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সিরিসেনার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত বাতিল ও নির্বাচন স্থগিতের আদেশ দিলে আরও বিপদে পড়েন রাজাপাকসে। সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া এমন রায়ের পর নিরুপায় হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন রাজাপাকসে।
এসএ/এমএস
Advertisement