ফিচার

‘বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় পতাকা বিক্রি করি’

চোখে-মুখে ক্লান্তির ছাপ। বিষণ্নতার চাদরে মুখ থুবড়ে পড়েছে। তবু যেন বেঁচে থাকার তাগিদে পথচলা। বিজয়ের স্বাদ কতটা পেয়েছেন তিনি জানেন না। সুদুর ফরিদপুর থেকে রামগঞ্জে কাজের সন্ধানে এসেছিলেন । ফেরি করে চলতো তাঁর সংসার। ডিসেম্বরে একটু বাড়তি লাভের আশায় পতাকা বিক্রির কাজ হাতে নেন। বিক্রিতে যে অর্থ মেলে তা দিয়েই চলে তাঁদের সংসার। এতক্ষণ যার কথা বলছিলাম, তিনি পতাকা বিক্রেতা শাকিল খাঁ। শাকিল খাঁ এর পতাকা বিক্রির গল্প শুনাচ্ছেন রিফাত কান্তি সেন

Advertisement

ছিলেন ফেরিওয়ালা বিক্রি করতেন চুড়ি,আলতা,স্নোসহ হরেক রকম প্রস্বাধনী। কিন্তু হঠাৎ ই বন্ধুর দেখাদেখি ১ মাসের জন্য নেমে পড়লেন ভিন্ন রকম এক ব্যবসায়। আর সে ব্যবসাটা জাতীয় পতাকার। বাংলাদেশের ইতিহাস তেমন ভাল জানেন না শাকিল। কারণ লেখাপড়া তেমন করা হয়ে উঠেনি তার। মাত্র পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন তিনি। বাড়ি ফরিদপুরে হলেও জীবিকার তাগিদে থাকেন নোয়াখালী জেলার রামগঞ্জ থানায়।

কিন্তু ডিসেম্বর এলেই মানুষ যে পতাকা কেনার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়েন সেটা একটা বন্ধুর কাছে জানতে পেরেই এ বছরই পতাকা বিক্রির ব্যবসাটি ধরেন। তবে লোকে কিনতে চায়না বলে তেমন ব্যবসা হয়না। ভার্চুয়াল মানুষগুলো এখন পতাকার চেয়ে মোবাইল ফোনে পিকচার ব্যবহারেই বেশি স্বাচ্ছ্বন্দবোধ করে।

তারপরও শাকিলের কাছে রয়েছে বিভিন্ন দামের পতাকা। ১০ টাকা থেকে শুরু করে শতটাকায় বিক্রি হয় পতাকাগুলো।

Advertisement

১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। বিজয়ের ৪৭ পেরিয়ে ৪৮ বছরে পা রাখতে যাচ্ছি আমরা। সে খবর হয়তো শাকিল ভাল করে জানেও না। তবু সে পতাকা বিক্রি করতে আনন্দ পায়।

শাকিল জানায়, " কাম কইরা যে টাহা পাই ঐডা দিয়া কোন রহমে সংসার চলে। কোন কামেই শান্তি পাই না। পতাকা বেইচা যে ভাল কামাই তেমন ও না। লোকে অহন কিনতে চায় না। বন্ধুরা কইলো ব্যবসা অইবো হের লাইগা রাস্তায় নাইম্মা পড়ছি। তয় কামডা কইরা টাহা না পাইলেও আনন্দ পাই। লাল-সবুজের পতাকা বিক্রি করতে আনন্দই লাগে। যুদ্ধ তো দেহি নাই, হুনছি এই পতাকার লইগা কত মাইনসেরে মরতে হইছে।"

এমকেএইচ

Advertisement