প্রয়াত চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের স্ত্রী ক্যাথরিন মাসুদ বলেছেন, বাংলাদেশে যদি আপনি কাউকে খুন করতে চান, তবে সবচেয়ে ভাল উপায় হল তাকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলা। কারণ এতে আপনার কোন বিচার হবে না।বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল সংলগ্ন তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীর স্মরণে সড়ক দূর্ঘটনা স্মৃতি স্থাপনা চত্বরে সড়ক নিরাপত্তা সংলাপ ২০১৫ শীর্ষক স্মরণ সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। ক্যাথরিন, তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীর এর দুর্ঘটনার স্থানটিকে ব্ল্যাকস্পট হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। কারণ হিসেবে তিনি ঢাকা-আরিচার এই জায়গাটিতে এর পূর্বের দুর্ঘটনার কথা উল্লেখ করেন। এ সময় তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরের সড়ক দুর্ঘটনার মামলার বিচার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তিনি প্রধান বিচারপতির কাছে অনুরোধ জানান।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীরের সড়ক দুর্ঘটনা একটি সড়ক হত্যাকাণ্ড। বর্তমান সময়ে সড়ক দুর্ঘটনা মহামারি আকারে দেখা যাচ্ছে।উপাচার্য বলেন, অবৈধ লাইসেন্সধারী চালক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি, বিলম্বিত বিচারকার্য, পথচারীদের অসচেতনতা এসব কারণেই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সকল পর্যায়েই সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনারোধে তরুণ প্রজন্মকে ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানান তিনি। সভায় নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, দেশের কর্তৃপক্ষই আইন মানছেন না, সড়ক একটি বিপদজনক জায়গা আনন্দের জায়গা নয়। কানে হেডফোন লাগিয়েই অনেক পথযাত্রীদেরকে রাস্তা পার হতে দেখা যায়। এতে তারা নিজের বিপদের পাশাপাশি চালকদেরও সমস্যার মুখে ফেলেন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে মহিলাদের ক্ষেত্রে যেসব দুর্ঘটনা হচ্ছে সেগুলোর বেশির ভাগই ওড়না-শাড়ি পেছিয়ে মারা যাচ্ছে। রাস্তায় চলতে হলে ডান পাশ দিয়ে চলতে হয়। তিনি আরো বলেন, আমি তেইশবছর যাবৎ সড়ক নিরাপত্তার আন্দোলনের সাথে জড়িত। আর ৩৯ বছর যাবৎ নিজের গাড়ি নিজেই চালিয়ে আসছি। ১৬ কোটি মানুষের দেশে ২৫ লাখ চালককে আমরা দ্রুত চলতে বলি। একটি জীবন অনেক মূল্যবান আপনার জীবনকে বাঁচাতে আপনাকেই সচেষ্ট হতে হবে। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মিশুক মুনীরের স্ত্রী মঞ্জুরী কাজী, ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর ফর স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশন অ্যান্ড এম্পাওয়ারমেন্ট আসিফ সালেহ। স্মরণ সভাটি সঞ্চালনা করেন মিশুক মুনীরের কনিষ্ঠ সহোদর আসিফ মুনীর। এমএইচ/এসকেডি/পিআর
Advertisement