ইবাদতের জন্য শারীরিক সুস্থতা যেমন জরুরি। ঠিক তেমনি শারীরিক সুস্থতার জন্য বিশ্রাম গ্রহণ করাও ইবাদতের শামিল। অনেক ইবাদত এমন আছে যা ক্লান্তি ও অবসাদগ্রস্ত অবস্থায় আদায় করা যায় না।
Advertisement
নামাজ, রোজ, হজসহ শারীরিক শক্তির সব ইবাদতে প্রশান্তি ও সুস্থ থাকতে হবে। অসুস্থ শরীরে কিংবা ক্লান্তি নিয়ে নামাজসহ শারীরিক শক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত ইবাদতগুলো আদায় করতে নিষেধ করেছিন প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
এ কারণেই প্রিযনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুমিন মুসলমানকে ক্লান্তি ও অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়লে বিশ্রাম গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার মসজিদে প্রবেশ করে দেখতে পেলেন, দুটি খুটির মাঝখানে একটি রশি বাঁধা।তিনি (প্রিয়নবি) বললেন, এটা কিসের রশি?সাহাবাগণ বললেন, এটা জয়নবের রশি। তিনি যখন নামাজ পড়তে পড়তে ক্লান্ত হয়ে পড়েন তখন এ রশিতে ঝুলে থাকেন।রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটা (রশি) খুলে ফেল। তোমাদের প্রত্যেকের উচিত (ক্লান্তিহীন ও প্রশান্ত শরীরে) উদ্যম সহকারে নামাজ পড়া। আর যখন ক্লান্তি আসবে তখনই ঘুমিয়ে পড়া।’ (বুখারি, মুসলিম)
Advertisement
আরও পড়ুন > ইবাদত-বন্দেগিতে কঠোরতা অবলম্বনের বিধান
হাদিসের শিক্ষা
> সব ইবাদতে মধ্যম পন্থা অবলম্বন করা উত্তম। ক্লান্তি ও অবসাদ নিয়ে ইবাদতে কঠোরতা পরিহার করা আবশ্যক।> উম্মুল মুমিনীন হজরত জয়নব রাদিয়াল্লাহু আনহা নিজের ঘুমের ভাব দূর করতে রশির ব্যবস্থা করেছিলেন। যাতে তিনি বেশি করে নামাজ আদায়ে সক্ষম হন। আর তা প্রিয়নবি অনুমোদন করেননি।> ইবাদতকারী ব্যক্তির কর্তব্য হলো, যখনই ঘুম আসে তখনই ঘুম যাওয়া। নফল ইবাদতের জন্য কখনো নিজেদের কষ্ট দেয়া ঠিক নয়।> অনেকেই নামাজে প্রবল ঘুমভাবে নিজেকে ধরে রাখতে পারেন না। বারবার পড়ে যান। সেক্ষেত্রে ইবাদত-বন্দেগি করতে প্রিয়নবি নিষেধ করেছেন।> নামাজ পড়াকালীন সময়ে যদি কোনো ব্যক্তি ঘুম চলে আসে তবে সে ব্যক্তির ঘুমও নামাজের ইবাদতের অন্তর্ভূক্ত হবে।
সুতরাং ক্লান্তি বা অবসাদ নিয়ে কোনোভাবেই শারীরিক ইবাদত করা ঠিক নয়। তাতে ইবাদতের রোকনগুলো যথাযথভাবে আদায় করা সম্ভব নয়। তাই মুমিন মুসলমানের উচিত বিশ্রাম গ্রহণ পূর্বক ধীরস্থির ইবাদতে মনোযোগী হওয়া।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে নামাজসহ সব ইবাদাতে প্রাণচাঞ্চল্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যমে আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমকেএইচ