জাতীয়

ভোটের উত্তাপে উত্তপ্ত হচ্ছে পরিবেশ

>> ফরিদপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আ.লীগ নেতা নিহত>> নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা>> ধুনটে যুবদল নেতার বাড়িতে আগুন, গাড়িবহরে হামলা>> শাহজাদপুরে বিএনপি প্রার্থীর বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর>> ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা-ভাঙচুর>> নড়াইলে ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর>> চট্টগ্রামে কোলাকুলি করে নোমান-নওফেলের প্রচারণা

Advertisement

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নির্বাচনের উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, লক্ষ্য রাখতে হবে উত্তাপের এ পরিবেশ যেন উত্তপ্ত না হয়। উত্তপ্ত হয়ে নির্বাচনী পরিবেশ যেন ব্যাহত না হয়, ব্যাঘাত না ঘটে।

মঙ্গলবার সকালে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটদের ব্রিফিংকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি। সিইসির বক্তব্য অনুযায়ী দেশের সর্বত্র নির্বাচনী উত্তাপ বইছে। সঙ্গে সঙ্গে উত্তপ্ত হচ্ছে পরিবেশও। জাগো নিউজের জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পরিস্থিতি উত্তপ্তের চিত্র উঠে এসেছে।

আরও পড়ুন >> নির্বাচনী উত্তাপ যেন উত্তপ্ত না হয় : সিইসি

Advertisement

নোয়াখালীতে যুবলীগের এক নেতাকে গুলি করে হত্যা, নির্বাচনী প্রচারণার ডামাডোলে বগুড়ার ধুনটে যুবদল নেতার বাড়িতে আগুন, গাড়িবহরে হামলা; সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিএনপিপ্রার্থীর বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর; ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা; নোয়াখালীতে বিএনপির মিছিলে হামলা; নড়াইলে ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর উল্লেযোগ্য।

এছাড়া খোদ রাজধানীতে পোস্টার লাগাতে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা-১২ আসনের বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ আবদুর রহিম সাকি। নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারছেন না- এমন অভিযোগ করেছেন মির্জা আব্বাস, মেজর হাফিজসহ অনেকে। নির্বাচন কমিশনে (ইসি) গিয়ে অভিযোগও করেছেন কেউ কেউ। তবে ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে চট্টগ্রামে। সেখানে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কুশল বিনিময় ও কোলাকুলি করেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই নেতা মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও আবদুল্লাহ আল নোমান।

জাগো নিউজের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-

ফরিদপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আ.লীগ নেতা নিহত

Advertisement

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের প্রচারের দ্বিতীয় দিনেই প্রাণ ঝরল ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে। প্রতিপক্ষের হামলায় খুন হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের কর্মী ইউসুফ আল মামুন (৪০)। তিনি সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক।

মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফরিদপুর সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গি এলাকায় একটি চায়ের দোকানে এই হত্যার ঘটনা ঘটে।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা আফসার উদ্দিন জানান, রাত সাড়ে ৮টার দিকে নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গি এলাকার একটি চায়ের দোকানে আওয়ামী লীগ নেতা ইউসুফের সঙ্গে স্থানীয় বিএনপির সমর্থক মজিদ ও আজিজের কথাকাটাকাটি হয়। এ সময় মজিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে কটূক্তি করে। ইউসুফ এর প্রতিবাদ করলে তাকে কিল-ঘুষি মারে তারা। দোকানের ঝাপের লাঠি দিয়ে আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় ইউসুফ।

এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সমর্থকদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ওসি এএফএম নাছিম বলেন, পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

ধুনটে যুবদল নেতার বাড়িতে আগুন

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় বিএনপিপ্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজের শোডাউনে হামলা চালিয়ে প্রাইভেটকার ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। একই সঙ্গে যুবদল নেতার বাড়িতে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ধুনট শহরে এবং সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার রাঙ্গামাটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আরও পড়ুন >> যুবদল নেতার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ

স্থানীয় বিএনপির অভিযোগ, সংসদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্দের পর ধুনট উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা শুরু করে। সোমবার সন্ধ্যায় এলাঙ্গী বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচারকালে বিএনপি কর্মী নাদিম হোসেন (২৬) ও মাসুদ রানাকে (২২) মারধর করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

রাত সাড়ে ১১টার দিকে এলাঙ্গী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য রাঙ্গামাটি গ্রামের মুরাদ হোসেনের বাড়িতে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এতে যুবদল নেতার প্রায় ১০ লাখ টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।

এ সংবাদ পেয়ে মঙ্গলবার বগুড়া-৫ (শেরপুর-ধুনট) আসনের বিএনপিপ্রার্থী জি এম সিরাজ যুবদল নেতা মুরাদ হোসেনের ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শনে যান। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জি এম সিরাজ ধুনট শহরের কলাপট্টি এলাকায় পৌঁছলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার ওপর হামলা চালায়। জি এম সিরাজের প্রাইভেটকার ও তিনটি মাইক্রোবাস এবং ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরে তারা ধুনট শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে হুকুম আলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নেয়।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা

ওই ঘটনার প্রতিবাদে দুপুর ১টার দিকে হুকুম আলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি প্রার্থী জিএম সিরাজ। উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মহসীন আলম বলেন, বিক্ষুব্ধ জনগণ এসব ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী জড়িত নয়। বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার করছেন।

বগুড়া-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, অগ্নিসংযোগে যুবদল নেতার ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি পরিদর্শন এবং নিমগাছি ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণার উদ্দেশ্যে ধুনট শহরে পৌঁছলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়ে তিনটি জিপ ও ২০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুরসহ বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর করে।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শহরে পরিবেশ এখন শান্ত। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

ধুনট থানার ওসি ফারুকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ঠাকুরগাঁওয়ে মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলা

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গাড়িবহরে হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার বেগুনবাড়ি ইউনিয়নের দানারহাট এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেশকিছু গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বিএনপি চেয়ারপাসরনের প্রেস উইং সদস্য শায়রুল কবীর খান এ তথ্য জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন >> মির্জা ফখরুলের গাড়িবহরে হামলাএকাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ ও বগুড়া-৬ আসনে থেকে নির্বাচন করছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। নির্বাচনী প্রচারণার অংশ হিসেবে মঙ্গলবার তিনি ঠাকুরগাঁওয়ে গণসংযোগ করেন। এদিকে হামলার সত্যতা নিশ্চিত করলেও কারা হামলা করেছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেনি পুলিশ।

ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম দানারহাট এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগে গেলে তার গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। ছয়টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। মির্জা ফখরুলের সফরসঙ্গী কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।

ঠাকুরগাঁও সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমরা দু-তিনটা গাড়ি ভাঙচুর হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে কারা গাড়ি ভেঙেছে সেটা তদন্ত-সাপেক্ষে বলা যাবে।

নোয়াখালীতে মওদুদের প্রচার মিছিলে হামলার অভিযোগ

নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার কবিরহাট পৌর শহরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের প্রচার মিছিলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সময় নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালানো হয়। এতে অন্তত ৫০ নেতাকর্মী আহত হন বলে অভিযোগ করেন ওই এলাকার ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ।

আরও পড়ুন >> মওদুদের প্রচার মিছিলে হামলার অভিযোগতিনি বলেন, প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে আমার নেতাকর্মীরা মঙ্গলবার দুপুরে কবিরহাটে পথসভার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় তারা বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচার মিছিল নিয়ে কবিরহাট বাজারে গেলে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ মিছিলে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমার ৫০ নেতাকর্মী আহত হন। তারা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

মওদুদ আরও বলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় আমি কবিরহাট-কোম্পানীগঞ্জ সড়কের একটি স্থানে নিজের গাড়ি নিয়ে অবস্থান করি। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কবিরহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল হক রায়হান বলেন, সকাল থেকে বিভিন্ন স্থানে আমাদের দলের অন্তত পাঁচজন নেতাকর্মীকে আহত করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ কারণে দলীয় নেতাকর্মীরা উত্তেজিত ছিল। তবে তারা কোনো সহিংসতায় যায়নি।

কবিরহাট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাসান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পায়নি। তবে পথসভা করার জন্য মওদুদ আহমদ রিটার্নিং অফিসার থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

শাহজাদপুরে বিএনপি প্রার্থীর বাড়িতে হামলা

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে বিএনপির প্রার্থী এমএ মুহিতের পৌর এলাকার রামবাড়ীর (খঞ্জনদিয়া) বাড়িতে হামলা হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে ওই ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রায় ৫০ নেতাকর্মী আহত হন বলে দাবি করেছেন বিএনপির নেতারা।

এর আগে সকালে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি এমদাদুল হক নওসাদ (৫৫) ও পৌর যুব দলের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ (৩৫) শহরের টাউন মসজিদের পাশে হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন হিরু অভিযোগ করে বলেন, কোন কারণ ছাড়াই দুপুরে আওয়ামী লীগের কর্মীরা আমাদের এমপি প্রার্থী এমএ মুহিতের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এ সময় তিনটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করা হয়। হামলায় বিএনপির প্রায় অর্ধশতা নেতাকর্মী আহত হন। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানা পুলিশ এমএ মুহিতের বাড়ি গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

নড়াইলে ধানের শীষ প্রার্থীর নির্বাচনী কার্যালয়ে ভাঙচুর

অন্যদিকে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিরুল ইসলাম শাহু বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা মোটরসাইকেল বহর নিয়ে যাওয়ার সময় ওই বাড়ি থেকে অতর্কিত হামলা চালানো হয়। এ সময় আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হন। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার ওসি খাজা গোলাম কিবরিয়া বলেন, কে বা কারা হামলা করেছে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরও পড়ুন >> ধানের শীষের প্রার্থীর কার্যালয় ভাঙচুরনড়াইলে ধানের শীষের প্রার্থীর কার্যালয় ভাঙচুর

একাদশ সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে ধানের শীষ প্রতীকের ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদের লোহাগড়ার নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়েছে। এতে ধানের শীষের এ প্রার্থীর কর্মীসভা পণ্ড হয়ে যায়। মঙ্গলবার বিকেলে লোহাগড়া বাজারের শীতলা মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত ধানের শীষের প্রার্থী ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নির্বাচনী কার্যালয়ে এ ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। কার্যালয় ভাঙচুরের পর নিজের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ।

ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ফরিদুজ্জামান বলেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুলের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন নেতাকর্মী লাঠিসোঁটা নিয়ে আমার নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলা চালায়। এ সময় কার্যালয়ের চেয়ার, টেবিল, ফ্যান, টেলিভিশন, জানালা-দরজা ভাঙচুর করে আমাদের পোস্টার-ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে তারা। বিষয়টি জেলা রিটার্নিং অফিসার, পুলিশ সুপার এবং লোহাগড়া থানার ওসিকে জানিয়েছি।

এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানা পুলিশের ওসি প্রবীর কুমার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন বিএনপিপ্রার্থী। লিখিত পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পোস্টার লাগাতে বাধা দেয়ার অভিযোগ সাকির

নির্বাচনী প্রচারের শুরুতেই পোস্টার লাগাতে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন ঢাকা-১২ আসনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের প্রার্থী গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ আবদুর রহিম সাকি। তিনি কোদাল মার্কা প্রতীক বরাদ্দ পেয়ে পাওয়ার পর গতকাল আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামেন। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ঢাকার নিউ ইস্কাটন নিজ বাসভবনের সামনে থেকে সাকি তার নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেন। গণসংযোগ শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে সাকি গত সোমবার রাতে কোদাল মার্কার পোস্টার লাগানোর সময় তার কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ করেন।

নোয়াখালীতে যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা

নোয়াখালীর সদর উপজেলার এওজবালিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফকে (২৪) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার বিকাল পৌনে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘আমি ঘটনাস্থলে যাচ্ছি। সেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ইমন ভট্ট বলেন, এওজবালিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে।’

চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন মির্জা আব্বাস : বাসার সামনে সব সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ঘোরাঘুরি ও গ্রেফতারের কারণে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। তিনি আতঙ্কিত ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। আত্মীয়স্বজন ও নেতাকর্মী কেউ তার বাসায় যেতে পারছেন না।

মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর শাজাহানপুরে নিজ বাড়িতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ঢাকা-৮ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মির্জা আব্বাস। এ সময় তার স্ত্রী ও ঢাকা-৯ আসনে বিএনপির প্রার্থী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আব্বাস বলেন, আমার ওয়ার্কার আজকে পলাতক কিংবা জেলে, প্রায় তিন হাজার। তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার ওয়ার্কার যদি জেলে থাকে কিংবা পলাতক থাকে, তাহলে একজন প্রার্থী কীভাবে নির্বাচনী প্রচারণা করবে, নির্বাচনী কাজ করবে।

গতকাল প্রতীক বরাদ্দ ও প্রচারণার প্রথম দিনেও বিএনপির নেতাকর্মীদের আটক করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা আব্বাস। তার নিজ বাড়ির সামনে থেকেই ১০ থেকে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার নির্বাচনী প্রচারে নানাভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে, আমার নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বী উন্মুক্তভাবে প্রচার চালাচ্ছেন। অথচ আমাকে বাধা দেয়া হচ্ছে। আমি নিজেও নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমরা রাজনৈতিকভাবে কারো প্রতিদ্বন্দ্বী ঠিক আছে, কিন্তু আমরা তো কারো প্রতিপক্ষ নই। আমরা কেউ কারো শত্রু নই। তাহলে কেন আমাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা হচ্ছে?’

মির্জা আব্বাস জানান, তার স্ত্রী ঢাকা-৯ আসনের বিএনপির প্রার্থী আফরোজা আব্বাসকেও নানাভাবে প্রচারে বাধা দেয়া হচ্ছে। এ সময় বিএনপিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাস।

চট্টগ্রামে কোলাকুলি করে নোমান-নওফেলের প্রচারণা শুরু

আরও পড়ুন >> ভয়ে এলাকায় যেতে পারছি না : ইসিতে মেজর হাফিজভয়ে এলাকায় যেতে পারছি না : ইসিতে মেজর হাফিজ

ভোলা-৩ আসনের ছয়বারের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ অভিযোগ করেছেন, সন্ত্রাসীদের ভয়ে তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় যেতে পারছেন না। নিরীহ নেতাকর্মীদের পথে-ঘাটে ধারালো অস্ত্র নিয়ে আঘাত করা হচ্ছে। জেলা যুবদলের সভাপতি জামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক সেলিমসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনে গিয়ে এসব অভিযোগ করেন তিনি।

চট্টগ্রামে নোমান-নওফেলের নির্বাচনী কোলাকুলি

চট্টগ্রামে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কুশল বিনিময় ও কোলাকুলি করলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই নেতা মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও আবদুল্লাহ আল নোমান। মঙ্গলবার নগরীর শাহ আমানত মাজার জিয়ারত করে নিজেদের নির্বাচনী এলাকায় যাওয়ার পথে এই সাক্ষাৎ হয় তাদের। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু হওয়ার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় রাজনৈতিক উত্তাপ এবং কোথাও কোথাও সংঘর্ষের খবরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ চেহারায় দেখা গেল চট্টগ্রামের এই দুই নেতাকে।

বর্ষীয়ান রাজনীতিক নোমান চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে তরুণ আওয়ামী লীগ নেতা নওফেল এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসনে। এর আগে আসন থেকেই নির্বাচন করতেন নোমান, ১৯৯১ সালে প্রথম নওফেলের বাবা প্রয়াত এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন >> কোলাকুলির মাধ্যমে নোমান-নওফেলের প্রচারণা শুরুপ্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি, তিনবার চট্টগ্রাম সিটির মেয়র ছিলেন তিনি। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নোমান একাধিকবার চট্টগ্রাম থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়ে খালেদা জিয়ার সরকারে মন্ত্রী ছিলেন।

রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ হলেও সব সময় ব্যক্তিগত সম্পর্ক ভালো ছিল মহিউদ্দিন-নোমানের। দুজনেরই পৈত্রিক বাড়ি চট্টগ্রামের রাউজানে। চট্টগ্রামে ‘মামা-ভাগ্নে’ হিসেবে পরিচিতি ছিল তাদের।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা সোয়া ১২টার পর নগরীর শাহ আমানত মাজারের অদূরে জেল রোড মোড়ে নোমানকে দেখে গাড়ি থেকে নামেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নওফেল। নোমান শাহ আমানত মাজার জিয়ারত শেষে তার নির্বাচনী এলাকায় যাচ্ছিলেন। তখন নওফেল নির্বাচনী প্রচারণার জন্য যাচ্ছিলেন বক্সিরহাট এলাকার আনসার ক্লাবের দিকে। এ সময় জেল রোডের মুখে আবদুল্লাহ আল নোমানকে দেখে গাড়ি থেকে নেমে করমর্দন করেন তিনি। পরে কোলাকুলি ও কুশল বিনিময় হয় তাদের। এরপর দুজনই তাদের কাজে চলে যান।

নওফেলও সকালে শাহ আমানত মাজার জিয়ারতের মধ্য দিয়ে তার নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন।

এমএআর/বিএ