রাজনীতি

দেশে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নাই

বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড মহামারী আকারে ধারণ করছে এমন অভিযোগ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন কিংবা গুম-খুনের সঠিক তদন্ত হওয়া উচিত এবং এ জন্য সরকারের জবাবদিহি করা উচিত।

Advertisement

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে রাজনীতি ও মানবাধিকার শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

কামাল হোসেন বলেন, দেশে স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নাই। দেশে গণতন্ত্র না থাকার কারণে এসব হত্যাকাণ্ড বাড়ছে। দেশে আইনের শাসন ও সুশাসন নিশ্চিত হওয়া জরুরি। দেশের মালিক জনগণ আর জনগণের মালিকানা তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে।

ঐক্যফ্রন্টের এই শীর্ষ নেতা বলেন, বিনা বিচারে হত্যাকাণ্ড ভয়াবহভাবে বেড়েছে। ২০১১ সালে ছিল ৬০ জন, ২০১২ সালে ৫০ জন, ২০১৩ সালে ৪০ জন। আর ২০১৮ সালে তা বেড়ে ৩২১ জন হয়েছে। ডেইলি স্টারে এই তথ্য প্রকাশ করেছে। এটা মহামারী। এটা মহারোগ। এটি কীভাবে হয়েছে? কীভাবে সম্ভব? শাসন ব্যবস্থার রুগ্ন অবস্থার কারণে এটি হয়েছে।

Advertisement

তিনি বলেন, এভাবে মানুষ বিচারহীন মরতে পারে না। এটি বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের সব উচ্চস্তরের ব্যক্তিদের নিয়ে তদন্ত করতে হবে। এটি বন্ধে পদক্ষেপ নিতে হবে। এর কারণগুলো বের করে প্রতিকার কীভাবে করা যায় তা করতে হবে। মানবাধিকার নিশ্চিত করা সরকার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব-কর্তব্য। ৪৭ বছর পরও অস্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এটা দেখে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারছি না।

সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এর বিরুদ্ধে জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে আবেদন করছি। আপনারা সব ক্ষমতা রাখেন। এটি কেন হলো তা বের করুন। আপনারা না পারলে আমাদের বলুন, আমরা সহযোগিতা করতে এক পায়ে দাঁড়িয়ে আছি।

কামাল হোসেন বলেন, সুযোগ কাজে লাগান। আপনাদের তো আয়ু শেষ হয়ে যাচ্ছে। আরও ২০ দিন আছে। এই ২০ দিনের মধ্যে সময়কে কাজে লাগান। আপনাদের যদি কাজ করার সুযোগ চান, আমাদের বলেন। আমরা সাহায্য করব। কিছু একটি করুন। আর কয়েকদিন পর তো সাধারণ মানুষ হয়ে যাবেন। আপনাদের যেন ৩১ তারিখ মোবারকবাদ দিতে পারি সে সুযোগ দেন। কিছু ভালো কাজ করে না গেলে পরে আফসোস করবেন এই বলে যে সুযোগ পেয়েও ভালো কাজটি করলাম না!

নির্বাচনের সময় মাঠে থাকবেন কি-না এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি তো আছিই। কথা বলছি, জনমত গঠন করছি, সমর্থন সৃষ্টি করছি। এই ৮০ বছর বয়সে এর চেয়ে আর কী করার আছে?

Advertisement

মানুষ ভোট দিতে পারবে আশা করে তিনি বলেন, মানুষ ভোট দিতে না পারলে স্বাধীনতা থাকবে না। আমরা সবাই ভোট দিব। রাস্তা, ঘাট পাড়ায় মহলায় নেমে যান। ভোট চাওয়া অপরাধ নয়। সবাই জনগণের ভোট চান।

বাংলাদেশ মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল হুদা মিলু চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক রাষ্ট্রদূত মোফাজ্জল করিম, মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ পরিষদের মহাসচিব ফরিদ উদ্দিন ফরিদ, আফজাল হোসেন সেলিম, অ্যাডভোকেট ড. মো. শাহজাহান প্রমুখ।

এমএএস/এআর/জেএইচ/এমকেএইচ