প্রার্থিতা ফিরে পেতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে আপিল করা ব্যক্তিরা রায়ের সার্টিফায়েড কপির জন্য আবারও বিক্ষোভ করেছেন। রোববার সকাল থেকে রাজধানীর নির্বাচন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন তারা।
Advertisement
আপিলে জেতা ও হারা- সবাই বিক্ষোভ করছেন। সকাল থেকে ভিড় করলেও দুপুর পর্যন্ত রায়ের কপি না পেয়ে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন তারা। অনেকে ইসির অভ্যর্থনা ডেস্কে কর্মরতদের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। দুপুর সোয়া ১টার পর তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। গত ৭ ডিসেম্বরও তারা একই কারণে বিক্ষোভ করেন। ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৯ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত মাত্র এক প্রার্থীকে রায়ের কপি দিতে পেরেছেন। আর আপিল মঞ্জুর হওয়া ও না হওয়া প্রার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। আদালতে রায়ের কপি লাগায় নামঞ্জুর হওয়া প্রার্থীরাই পড়েছেন বিপাকে।
নামঞ্জুরের রায়ের কপি নিতে আসা ব্যক্তিরা বলছেন, আজ (৯ ডিসেম্বর) মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষদিন। ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রার্থীরা প্রচার শুরু করবেন। এখন দুপুর ১টা বাজে। তারা রায়ের কপি দিচ্ছে না।
‘কপি নেবই-বা কখন, আর আপিলই বা করব কখন! আদালতে আপিল করতে গেলে তো ইসির রায়ের কপি লাগবে। অন্যথায় নির্বাচন থেকে প্রার্থীকে ছিটকে পড়তে হবে’- অভিযোগ করেন তারা।
Advertisement
ইসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা যায়, প্রথম ও দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে ১৯ প্রার্থীর নামঞ্জুর হওয়া রায়ের কপি ইসিতে রয়ে গেছে। চারজনের রায়ে কপি খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।
সার্টিফাইড কপি না পেয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের মো. মোশারফ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার আপিল আবেদন নামঞ্জুর হয় শুনানির দ্বিতীয় দিন (৭ ডিসেম্বর)। এরপর ৮ ডিসেম্বর, শনিবার সকাল থেকে রাত ২টা পর্যন্ত নির্বাচন ভবনে রায়ের কপি নেয়ার জন্য অপেক্ষা করি। আমার চাচাতো ভাই রফিকুল হায়দার। তারপরও কপি না পেয়ে ফিরে যেতে হয়। আজ সকালে আবার আসি। কিন্তু দুপুর ১টা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন রায়ের কপি দেয়নি।’
মোশারফ হোসেনের মতো মনোনয়নপত্র আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিনে নামঞ্জুর হওয়া কারও রায়ের কপিই এখন পর্যন্ত দিতে পারেনি ইসি। রায়ের কপি না পেলে আদালতে রিট করার সুযোগ পাবেন না নামঞ্জুর হওয়া প্রার্থীরা।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষদিন আজ রোববার। এদিন বিকাল ৫টার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রার্থীকে নিজে অথবা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মাধ্যমে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে হবে। এবার নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলই নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে।
Advertisement
আগামীকাল ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এরপরই শুরু নির্বাচনী ডামাডোল। প্রতীক বরাদ্দের পরই সবাই প্রচারে নামবেন।
নির্বাচনের তফসিল ও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, দল ও জোটগুলোকেও চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে পাঠাতে হবে। যার অনুলিপি দিতে হবে নির্বাচন কমিশনে।
গত ২৮ নভেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময়। মোট তিন হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। এর মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে জমা পড়ে মোট দুই হাজার ৫৬৭টি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ৪৯৮টি মনোনয়নপত্র।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা কর্তৃক বাতিল হওয়া ২৪৩ জন তাদের প্রার্থিতা ফেরত পেয়েছেন। টানা তিনদিন শুনানির শেষদিন শনিবার ৮৫ জন প্রার্থিতা ফিরে পান। প্রথম দিন বৃহস্পতিবার শুনানিতে ৮০ জন প্রার্থিতা ফিরে পান। দ্বিতীয় দিন শুক্রবার পান ৭৮ জন।
তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া তার প্রার্থিতা ফেরত পাননি। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হওয়ায় তিন আসনেই তার প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন।
৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদের ভোটগ্রহণ।
এইচএস/এমএআর/জেআইএম