জাতীয়

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের কলেজ কর্মসূচির পুরস্কার বিতরণ

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের একাদশ শ্রেণির বইপড়া কর্মসূচির বিজয়ী পাঠকদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়েছে। শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা প্লাজায় এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Advertisement

আইএফআইসি ব্যাংকের সহযোগিতায় এ অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগরের সেরা ২১টি কলেজ এবং কেন্দ্রভিত্তিক বইপড়া কর্মসূচির মোট ৭৪৪ জন শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও অবসরপ্রাপ্ত সচিব খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মুখ্যসচিব কবি কামাল চৌধুরী, বিশিষ্ট লেখক ও নাট্যকার আনিসুল হক, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব আবদুন নূর তুষার, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শরিফ মো. মাসুদ, আইএফআইসি ব্যাংকের ডিএমডি শাহ মো. মঈনউদ্দিন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক মেসবাহ উদ্দিন আহমেদ সুমন।

Advertisement

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পরিচালক শরিফ মো. মাসুদ বক্তব্যের শুরুতেই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীরাসহ উপস্থিত সবাইকে শুভেচ্ছা জানান এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এই মহৎ কাজের সঙ্গী হওয়ার জন্য আইএফআইসি ব্যাংককে বিশেষ ধন্যবাদজ্ঞাপন করেন।

তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের তত্ত্বাবধানে ২৪ লাখ ছাত্রছাত্রী বইপড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। আগামী বছর সারা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বইপড়া কর্মসূচি সম্প্রসারিত হবে।

শাহ মো. মঈনউদ্দিন বলেন, বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়ার মতো একটি ভালো কার্যক্রমের সঙ্গে সংযুক্ত থাকতে পেরে আমাদের ধন্য মনে করছি। সাহিত্যের পৃষ্টপোষকতার অংশ হিসেবে ভবিষ্যতেও এমন সুন্দর কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

কবি কামাল চৌধুরী বলেন, পুরস্কার হচ্ছে ক্ষণস্থায়ী প্রজাপতির জীবনের মতো, পুরস্কারের সম্মান, মর্যাদা ও তাৎপর্য তোমাদের ধরে রাখতে হবে।

Advertisement

তাদের সময়ে বইয়ের দুষ্প্রাপ্যতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন তোমরা সহজেই বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মাধ্যমে বিশ্বসেরা বইপড়ার সুযোগ পাচ্ছো এবং ভবিষ্যতে তোমাদের হাত ধরেই উন্নত বাংলাদেশে বিনির্মাণ হবে।

আনিসুল হক, মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস ও বিখ্যাত প্রকৌশলী এফ আর খানের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তাদের স্বপ্ন সফল হয়েছে শুধুমাত্র বই পড়ে। পুরস্কৃতদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, তোমরা বই পড়বে, আনন্দের সঙ্গে বাঁচবে। সব হতাশা ও দুঃখের সঙ্গে লড়াই করে বাঁচবে।

আবদুন নূর তুষার বলেন, একটি দেশ শুধু ভৌগোলিকভাবেই বড় হয় না, দেশ বড় হয় সে দেশের মানুষ যখন জ্ঞানী হয়। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ৪০ বছর ধরে সেই জ্ঞানী মানুষ তৈরির কাজই করছে। যার দ্যুতি দেশ ও দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়ছে।

সভাপতির বক্তব্যে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের অন্যতম ট্রাস্টি এবং অবসরপ্রাপ্ত সচিব খোন্দকার মো. আসাদুজ্জামান উপস্থিত শিক্ষক ও অভিভাবকদের বইপড়ার উৎসাহ ও সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে পুরস্কার বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, জীবন শুধু যাপনের নয়, জীবনকে উদযাপন করতে হবে, আর এই উদযাপন করা যায় বইপড়ার মাধ্যমে। বই পড়ে তোমরা যে আনন্দ পাও, তা চারপাশের সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। একাদশ শ্রেণির বইপড়া কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারীরা বাংলা সাহিত্য ও পৃথিবীর কিশোর সাহিত্যের সেরা ১২টি বই পড়ার সুযোগ পায়। একটি ছোট সরস পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদের বইপাঠ মূল্যায়ন করে পঠিত বইয়ের ওপর ভিত্তি করে ৪টি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার বিজয়ীদের নির্বাচন করা হয়।

মূল্যায়ন পর্বে যারা ৬টি বই পড়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে, তারা পায় স্বাগত পুরস্কার। যারা ৮টি বই পড়েছে বলে প্রতীয়মান হয়, তারা পায় শুভেচ্ছা পুরস্কার। যারা ১০টি বই পড়েছে বলে প্রতীয়মান হয়, তারা পায় অভিনন্দন পুরস্কার। আর যারা ১২টি বই পড়েছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে, তারা পায় সেরা পাঠক পুরস্কার।

এমবিআর/পিআর