দেশজুড়ে

দাকোপে প্রাক-প্রাথমিকের মালামাল ক্রয়ে অনিয়ম

খুলনার দাকোপ উপজেলার ১১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের প্রাক-প্রাথমিক এর মালামাল (শিক্ষা উপকরণ) ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর চলতি অর্থবছরে ১৭ মে এ উপজেলার ১১৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অনুকূলে প্রাক-প্রাথমিকে শিখন শেখানো সামগ্রী ক্রয়ের জন্য প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ের অনুকূলে পাঁচ হাজার টাকা করে বরাদ্দ দেয়া হয়। এছাড়া স্পি কমিটির মাধ্যমে প্রত্যেকটি বিদ্যালয় পায় ত্রিশ হাজার টাকার অনুদান। তবে মালামল ক্রয়ের ক্ষেত্রে নীতিমালার ‘ক’ কলামে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক/শিক্ষিকাসহ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির উপর দায়িত্ব রয়েছে। কিন্তু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আব্দুল গণি এ নীতিমালাকে অবজ্ঞা করে জুলাই মাসের মাসিক মিটিং এর সভায় ঘোষণা দেন প্রাক-প্রাথমিকের মালামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে পানখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-২ এর প্রধান শিক্ষক মো. শফিউল আলম সেলিমকে প্রধান করে শিক্ষক নেতা মো. আব্দুর রব, রজত শুভ্র এর মাধ্যমে মালামাল ক্রয় করা হয়েছে। স্ব স্ব স্কুলের শিক্ষকগণ উল্লেখিত শিক্ষক নেতাদের নিকট থেকে মালামাল বুঝে নেবেন। সূত্র আরা জানায়, পাঁচ হাজার টাকার পরিবর্তে তিন হাজার ৬ শত টাকায় কেনা নিম্নমানের মালামাল সরবরাহের সময় বির্তকের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া স্পি কমিটির ত্রিশ হাজার টাকা থেকে স্ব স্ব বিদ্যালয় আরো এক হাজার টাকা বেশি নিয়ে ভাল মালামাল ক্রয় করার কথা বলে। প্রতিটি স্কুল থেকে পাঁচ হাজার ছয়শত টাকা তোলার দায়িত্ব হরিণটানা দক্ষিণপাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার এর উপর ন্যস্ত হয়। সে মোতাবেক তিনি উক্ত টাকা উত্তোলন করে উল্লিখিত মো. শফিউল আলম সেলিমসহ আরো ৩/৪ জনের কাছে জমা দেন। সূত্রে আরো জানা যায়, নিম্নমানের মাল ও বেশি দামের কারণে দক্ষিণ কামিনীবাসিয়া দোলখোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্বপন কুমার রায় মালামাল ফেরত দেন। কামিনীবাসিয়া হামিদা খাতুন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হিমাংশু কুমার সরকার পাঁচ হাজার ছয়শত টাকার স্থলে তিন হাজার ছয়শত টাকার মাল ক্রয় করার কারণে মালামাল ফেরত দিয়েছেন। এমনকি রামনগর জগন্নাথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র মন্ডল একই অভিযোগ এনে মালামাল ফেরত দিয়েছেন। এ সকল শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা এ কাজ করার কারণে শিক্ষক এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি  হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রত্যেক স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির অনুকূলে ব্যাংকে তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হয়েছে। স্ব স্ব স্কুলের প্রধানরাই মালামাল ক্রয় করেছেন। এ ব্যাপারে আমার কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। তিনি অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এ ব্যাপারে শিক্ষক মো. শফিউল আলম সেলিম বলেন, মানসম্মত মালামাল ক্রয় করে সরবরাহ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি দে বলেন, নিম্মমানের মালামাল ক্রয়ের বিষয়টি মৌখিক শুনেছি। লিখিত কোনো অভিযোগ পায়নি। শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি নিয়ে খোঁজ-খবর নিতে বলেছি।আলমগীর হান্নান/এসএস/পিআর

Advertisement