সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রতি বছরের মতো এবারও মাহফিলে প্রবাসী বাংলাদেশিসহ ভারত, পাকিস্তান, স্থানীয় আরবি ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে দুবাইয়ে মুনিরীয়া যুব তবলিগ কমিটি বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত শাখা ও সালতানাত অব ওমান শাখাসমূহের উদ্যোগে সর্ববৃহৎ জশনে জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (দ:) মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
Advertisement
প্রধান অতিথি সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে আমিরাতের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় এই মাহফিল করার সুযোগ করে দেয়ায় দুবাইসহ আমিরাতের সাতটি প্রদেশের শাসকদের ধন্যবাদ প্রদান করেন ও তাদের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শুক্রবার (০৭ ডিসেম্বর) দুবাইস্থ আল মারাবিয়া স্ট্রিট, ডাসকু ক্লাবে সর্ববৃহৎ এ মাহফিল আয়োজিত হয়। প্রধান অতিথি আসার পূর্বে মাহফিল প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। ঈদে মিলাদুন্নবী (দঃ) উপলক্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এটিই সর্ববৃহৎ জমায়েত।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মোর্শেদ, আওলাদে রাসূল (দঃ) হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মহান মোর্শেদে আজম মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব।
Advertisement
নূরে মোস্তফার হেদায়তময় বিশ্বায়ন গাউছুল আজম এর কালজয়ী দর্শনে উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, নবীর যুগের ১৪৫০ বছর পর এসে প্রিয় রাসুলের প্রেমের রুশনিতে মহান মোর্শেদ হযরত গাউছুল আজম (রাঃ) জগতবাসীকে জাগালেন তাকওয়ার উপলব্ধিতে। কাগতিয়ার নিভৃত পল্লি থেকে যে তরিক্বতের সূচনা হয়েছিল তা আজ গাউছুল আজমের অশ্রুসিক্ত দোয়ার ফলশ্রুতিতে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তরে পৌঁছে গেছে।
এ যেন বিন্দু থেকে সিন্ধু। তিল তিল শ্রম সাধনায় গড়ে তুলেছেন বিশ্বজোড়া তরিক্বতের অদ্বিতীয় পাঠশালা কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফ। বিশ্বের প্রান্তে প্রান্তে সমস্ত দিগন্তে নবীর নূরের ঐশী আলোতে দিশেহারা মানুষকে নিয়ে আসলেন খোদা পাবার সামিয়ানায়। ঘুমন্ত অন্তরাত্মায় দিলেন নবী প্রেমের প্রেরণা।
গাউছিয়্যতের কণ্ঠে ঘোষণা দিলেন হে যুবক! নামাজ পড়, রোজা রাখ, নবী করিম (দঃ) এর উপর দরুদ পড় মাতৃভূমি শান্ত কর। এ ডাক পৌঁছে গেল পৃথিবীর রন্ধ্রে রন্ধ্রে জনপদে লোকালয়ে তারই ধারাবাহিকতায় জজিরাতুল আরবের মরু প্রান্তরে মোখলেছ তরিক্বতপন্থিদের আনাগোনা।
তিনি আরো বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের মারাত্মক আগ্রাসন থেকে মুসলিম যুবক-যুবতিদের চরিত্র, ঈমান ও আক্বিদা রক্ষা করতে হলে গাউছুল আজমের গাউছিয়্যতের প্রযুক্তি গ্রহণ করা এখন সময়ের দাবি। তিনি সকলকে গাউছুল আজমের এ কালজয়ী দর্শন নিয়ে গবেষণা করার জন্য বিশেষ আহ্বান জানান।
Advertisement
কমিটির সাংগঠনিক তদারক পরিষদের আহ্বায়ক আলহাজ্ব নূর মুহাম্মদ সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এশায়াত মাহফিলে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সংযুক্ত আরব আমিরাত ওলামা পরিষদের আহবায়ক আলহাজ্ব মাওলানা শফিউল আলম, মাওলানা মাহাবুবুল আলম বোগদাদী সহ আরো অনেকে।
বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কমিটির দুবাই শাখার সভাপতি আলহাজ্ব মনির উদ্দিন, মাহফিল বাস্তবায়ন পরিষদের আহবায়ক আলহাজ্ব হারুন এম. আজাদ সহ আমিরাতের বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতৃবৃন্দরা।
প্রবাসীদের অনুরোধে কষ্ট করে বাংলাদেশ থেকে আমিরাতে এসে বিশ্ব মুসলিমকে ধন্য করায় প্রধান অতিথির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রবাসী বক্তারা। সূদুর জজিরাতুল আরবে এসে প্রধান অতিথি হুজুর কেবলা মাদ্দাজিল্লুহুল আলী ছাহেব প্রিয় নবীর নূর সম্পর্কে যেভাবে বিশদ আলোচনার মাধ্যমে প্রিয় নবীজিকে নূরের নবী হিসাবে আখ্যায়িত করলেন তা বর্তমান মুসলিম বিশ্বে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে মনে করেন উপস্থিত বিভিন্ন দেশের মুসলমানেরা।
প্রতি বছর ধর্মীয় এই বৃহৎ জমায়েতের মাধ্যমে মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ, সংযুক্ত আরব আমিরাতে বাংলাদেশের ইমেজ বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে মন্তব্য করেন উপস্থিত আমিরাতের কমিউনিটি নেতারা।
মাহফিল শেষে প্রধান অতিথি দেশ,জাতি, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর শান্তি, অগ্রগতি ও উপস্থিত সকলের ইহকালীন কল্যাণ, পরকালীন মুক্তি এবং কাগতিয়ার গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন।
এমআরএম/এমকেএইচ