ক্যাম্পাস

শেকৃবিতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, আটক ৪

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হয়েছে। পরীক্ষায় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে জালিয়াতির অভিযোগে চার পরীক্ষার্থীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

আটককৃত পরীক্ষার্থীরা হলেন শেরেবাংলা নগর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মো. ইকবাল মাহাবুব, রোল নম্বর ১২১৫৯, পিতা: হামিদুর রহমান, রানীশংকৈল, ঠাকুরগাঁও। মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মোছা. রাশিদা আক্তার রজনী, রোল নম্বর ২১১৯৯, পিতা: মো. রবিউল ইসলাম, বড়ভিটা, ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমি কেন্দ্র থেকে জয় পাল, রোল নম্বর ১৩৫৪৭, পিতা: জিতেন পাল, ভোড়ালিয়া, রাজশাহী। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে মাহিম খান, রোল নম্বর ৪১৭৪৬, পিতা: মো. মহিউদ্দিন খান, মাতুয়াইল, কেরানী পাড়া, ঢাকা।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর ১৫টি কেন্দ্রে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার হলে ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, মোবাইল ফোনসহ যোগাযোগ করা যায়-এমন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ছিল। তবে নিষেধ অমান্য করে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষায় জালিয়াতি করায় ওই চারজনকে আটক করা হয়।

আটককৃত ভর্তিচ্ছুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই থেকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে তারা জালিয়াতি চক্রের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। আটক হওয়া মাহিম খান জানান, তিনি ভর্তি হওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম অয়নবের সঙ্গে চুক্তিবন্ধ হন। অয়নব তাকে বলেন, ‘যারা চান্স পায়, তারা এভাবেই চান্স পায়। ডিভাইসে উত্তর পাঠানোর পর যদি তুমি চান্স পাও তবেই চার লাখ টাকা নেব।’

Advertisement

কর্তৃপক্ষ আটকের পর চার পরীক্ষার্থীকে শেরেবাংলা নগর এবং মোহাম্মদপুর থানার কাছে হস্তান্তর করেছে। তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াদিয়া শাবাব। প্রশ্ন ফাঁসের মূল হোতাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. সেকেন্দার আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কেন্দ্রে প্রবেশের সময় মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ে ব্যবহার বাধ্যতামূলক ছিল। এর মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থী মেটাল ডিটেক্টর ও আর্চওয়ে ব্যবহার সময়ই ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস সহকারে ধরা পড়ে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পরীক্ষায় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও ফোন নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও এক শিক্ষার্থী এর মাধ্যমে উত্তরপত্র সংগ্রহ করা চেষ্টা করেছিল। তাই আমরা তাকেসহ চারজনকে আটক করেছি। এদের কাছ থেকে মূল্যবান তথ্য পাওয়া গেছে। পরে তাদেরকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।’

ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি, অসদুপায় অবলম্বন ও অনিয়ম ঠেকাতে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি টিম। বিশ্ববিদ্যালয়ের চারটি অনুষদে ৬২০ আসনের বিপরীতে চলতি শিক্ষাবর্ষে আবেদন করেছিল ৩৩ হাজার ৩০১ জন প্রতিযোগী। একটি আসনের বিপরীতে ছিল ৫৪ জন শিক্ষার্থী।

Advertisement

উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ বলেন, ‘কোনো ধরনের অনিয়ম ছাড়া সকলের সার্বিক সহযোগিতায় উৎসবমুখর পরিবেশে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।’ কৃষিতে নারীদের অংশগগ্রণ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এবারের পরীক্ষায়ও অধিকাংশ মেয়ে। ছেলেদের সংখ্যা তুলনামূলক একটু কম। প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ শতাংশই মেয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর আগে পরীক্ষায়ও একই চিত্র দেখা গেছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন আহাম্মদ, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. সেকেন্দার আলী, ট্রেজারার অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল হক বেগসহ চারটি টিম পরীক্ষা চলাকালীন হল পরিদর্শন করেন। ভর্তি পরীক্ষা ফলাফল এবং ভর্তি-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট www.sau.edu.bd -এ পাওয়া যাবে।

মো. রাকিব খান/এসআর/পিআর