নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য আপিল করে প্রার্থিতা ফেরতের পরও রায়ের সার্টিফায়েড কপি না পাওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন প্রার্থীরা।
Advertisement
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৈধ প্রার্থীরা বিক্ষোভ-হট্টগোল করেন। এর আগে তারা ইসির আইন শাখায় বার বার যোগাযোগ করে রায়ের সার্টিফায়েড কপি সংগ্রহের চেষ্টা করেন। কিন্তু আইন শাখা থেকে কপি তো দূরের কথা কবে দেয়া হবে সে তথ্যও পাননি তারা।
বিক্ষোভকারীরা বলছেন, তারা আপিল করলে শুনানি করে নির্বাচন কমিশন প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু রায়ের সার্টিফায়েড কপি দেয়া হচ্ছে না। এতে দলের চূড়ান্ত নমিনেশন না পাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন তারা।
শুনানি শুরুর আগের দিন মঙ্গলবার রাতে নির্বাচন কমিশনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, শুনানির পরপরই আমরা রায়ে সার্টিফায়েড কপি দিয়ে দেব।
Advertisement
ভুক্তভোগীরা বলছেন, সচিব সেদিন নিজেই একথা বলার পর, এখন আমাদের ভোগান্তির মধ্যে ফেলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী মো. এরশাদ উল্লাহ। তফসিল ঘোষণার আগেই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলার কারণ দেখিয়ে মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। কিন্তু সেই অ্যাকাউন্টে অন্য কোনো লেনদেন না করায় আপিলে নির্বাচন কমিশনে তার প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়েছেন।
নির্বাচন কমিশনে প্রার্থীর ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তি এম হামেশ রাজু দু’দিন থেকে ঘোরাঘুরি করছেন। কিন্তু রায়ের সার্টিফায়েড কপি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তার। তিনি বলেন, ‘আমরা আপিলে বৈধতা পেয়েছি। কিন্তু রায়ের সার্টিফায়েড কপি না দেয়ার কারণে আমরা শঙ্কায় আছি। কেননা, এটা পার্টি অফিসে না দিতে পারলে তো চূড়ান্ত মনোনয়ন পাব না। নির্বাচন কমিশন বুধবার জানিয়েছিল আজ সকালে দেবে। কিন্তু এখনও দিচ্ছে না। তাই আমরা বিক্ষোভ করছি।’
জাতীয় পার্টির মাদারীপুর-১ আসনের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম মিন্টু। তার প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল হলফনামায় স্বাক্ষর না করায়। নির্বাচন কমিশন শুনানি করে মনোনয়নপত্র ফিরিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সকালে বলল নামাজের পর দেবে, নামাজের পর বলল বিকেলে দেবে। এখন বলছে যার যার জেলা-উপজেলা থেকে সংগ্রহ করতে। সময় আছে মাত্র দু’দিন। এ সময়ের মধ্যে এলাকায় গিয়ে সংগ্রহ করে আবার ঢাকায় পার্টি অফিসে জমা দেয়ার সময়। কেননা, দলগুলো ৯ ডিসেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীর নাম ইসিকে জানাবে।’
Advertisement
এ সময় নড়াইল-২ আসনের জেএসডি প্রার্থী ফকির শওকত আলী বলেন, ‘যদি কোনো কারণে স্থানীয় পর্যায়ে পৌঁছাতে দেরি হয়, তাহলে তো জমাই দেয়া যাবে না। এ গড়িমসির কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারি।’
এদিকে টানা দুই দিন প্রার্থিতা নিয়ে শুনানি করেছে ইসি। শুক্রবার বিকেলে নির্বাচন কমিশন ভবনের অস্থায়ী এজলাসে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বে শুনানি করা হয়। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, বেগম কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী ও ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আপিল শুনানির পর শুক্রবার ৭৮ জন প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। ৬৫টি আপিল খারিজ হয়ে যায়। আর ৭টি পেন্ডিং রাখা হয়।
আগামী ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। এবং ভোটগ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর।
এইচএস/এনডিএস/এমকেএইচ