খেলাধুলা

ওপেনিংয়ে তামিমের সঙ্গী ইমরুল, তিনে সৌম্য

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রানবন্যায় মাঠ ভাসিয়েছেন ইমরুল কায়েস ও লিটন দাস। তিন ম্যাচের সিরিজে দুই সেঞ্চুরিসহ ৩৪৯ (১৪৪*+৯০+১১৫) রান করেছিলেন ইমরুল। সে তুলনায় অনেক পিছিয়ে ছিলেন লিটন (৪+৮৩+০)। তিন নম্বর ম্যাচে সুযোগ পেয়ে দারুণ এক সেঞ্চুরি হাঁকান সৌম্য সরকার। তামিম ছাড়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই ছিলো টিম টাইগার টপঅর্ডারের ব্যাটিং হালহকীকত।

Advertisement

এখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ শুরুর সময় ঘনিয়ে এলো। ৪৮ ঘণ্টা পর মিরপুরের শেরে বাংলায় মাঠে গড়াবে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডে।

এদিকে, ওই ম্যাচের ৭২ ঘণ্টা আগে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তাই সিরিজ শুরুর সময় যতো ঘনিয়ে আসছে, ততই গুঞ্জন হচ্ছে দ্বিগুণ; ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ইনিংসের সূচনা করবেন কোন দুজন?

দেশসেরা ওপেনার ও তিন ফরম্যাটে দেশের সবচেয়ে সফল তামিম ইকবাল তো থাকবেনই। তার সঙ্গী হবেন কে? ইমরুল না সৌম্য? নাকি লিটন দাস?- এ প্রশ্ন এখন বাংলাদেশ সমর্থকদের মুখে।

Advertisement

একেকজন একেকরকম হিসেব কষছেন। কেউ তামিমের সঙ্গে লিটনকেই যোগ্য সঙ্গী মনে করছেন। তাতে বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশনটা থাকে। প্রতিপক্ষ তথা ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ফাস্ট বোলাররা তখন বাধ্য হবেন লাইন ও লেন্থ বদলাতে। দুজন বাঁহাতি ওপেনার হলে পেসারদের লাইন-লেন্থ ঠিক করা খুব সহজ হয়। ক্রিকেটীয় যুক্তিতে ওই ধারণা মন্দ নয়।

আবার কেউ-বা চাচ্ছেন তামিম-ইমরুল জুটি। কারণ তামিমের সাথে ইমরুলের রসায়নটা ভাল। টেস্ট-ওয়ানডেতে অনেকগুলো বড় বড় জুটি রয়েছে এ দুই বাঁহাতির। দুই ফরম্যাটেই জুটি গড়ে দুই হাজারের বেশি রান করেছেন এ দুজন। পারস্পরিক বোঝাপড়াটাও চমৎকার। একজন আরেকজনকে জানেন, বোঝেন কে কখন কি করতে পারেন। সে ধারণাটাও খুব বেশি। তাই তামিম-ইমরুল জুটির ট্র্যাক রেকর্ড সবার চেয়ে ভালো।

এখন প্রশ্ন হলো সৌম্য কোথায় খেলবেন? জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি করার পরেও ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে অবহেলিত ছিলেন বাঁহাতি এ ড্যাশিং ব্যাটসম্যান। শেষ ম্যাচে ডাক পেয়েই দারূণভাবে জ্বলে ওঠা। সেঞ্চুরিতে মাঠ মাতানো, পাশাপাশি টপঅর্ডার হিসেবে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়ে রাখেন সাতক্ষীরার ২৫ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান।

ওদিকে কাল (বৃহস্পতিবার) বিকেএসপিতে প্র্যাকটিস ম্যাচে আবার সেঞ্চুরি সৌম্যের ব্যাটে। কাজেই এবার তাকে ফেলে দেয়া কঠিন। রানের মধ্যেই যেন বসবাস সৌম্যর। তাই বিষয়টা জটিল। কাকে রেখে কাকে খেলালো হবে? টিম ম্যানেজম্যান্ট ও নির্বাচকরা কি ভাবছেন?

Advertisement

নানা আলোচনা, পর্যালোচনা ও ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ চারিদিকে। তবে ভেতরের খবর টিম ম্যানেজম্যান্ট ও নির্বাচকরা তামিম-লিটন নয়; তামিম-ইমরুলকেই বেঁছে নিতে যাচ্ছেন। সবকিছু ঠিক থাকলে ৯ ডিসেম্বর দিবারাত্রির ম্যাচে মাশরাফি বাহিনীর ব্যাটিং সূচনা করতে নামবেন তামিম ও ইমরুল।

তাহলে লিটন দাসের কি হবে? একদম ভেতরের খবর প্রথম ম্যাচে দলেই থাকবেন না লিটন। খুব স্বাভাবিকভাবে চলে আসে সৌম্য প্রসঙ্গ। তাকে কি এরপরেও খেলানো হবে না? কিংবা খেললেও কোথায় নামবেন সৌম্য? তারও উত্তর আছে।

শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন সকালে জাগোনিউজের সাথে আলাপে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু জানালেন উদ্বোধনী জুটি তামিম-ইমরুলের, তিনে খেলবেন সৌম্য। প্রধান নির্বাচকের কাছে প্রশ্ন, মাঝে তিন নম্বরে প্রায় নিয়মিত খেলা সাকিব আল হাসান তাহলে কোথায় খেলবেন? নান্নুর জবাব, ‘সাকিব খেলবে পাঁচ নম্বরে।’

তার মানে তামিম, ইমরুল, সৌম্য, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ- এই ছয় স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানের সাথে অধিনায়ক মাশরাফি-বাঁহাতি মোস্তাফিজ থাকবেন নিশ্চিতভাবেই। দিবারাত্রির ম্যাচ, সন্ধ্যা নামতেই শিশিরে সয়লাব হয়ে আউটফিল্ড। সন্ধ্যার পর স্পিনারদের চেয়ে পেসারদের কার্যকরিতাই বেশি থাকার সম্ভাবনা প্রবল। সেই ভাবনা থেকে আরেকজন বাড়তি পেসার তো অবশ্যই খেলানো হবে।

তিনি কে? রুবেল হোসেন? নাকি? পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাঈফউদ্দীন? সেটাই দেখার। তবে ব্যাটিং জানার কারণে সাঈফউদ্দীনের সম্ভাবনাই বেশি। তৃতীয় পেসার হিসেবে হয়তো ফেনীর এই ক্রিকেটারকেই দেখা যাবে।

স্পেশালিস্ট স্পিনার হিসেবে সাকিবের সাথে ফর্মের চূড়ায় থাকা মেহেদি হাসান মিরাজের অবস্থান নিশ্চিত। ছয় ব্যাটসম্যান তিন পেসার ও অফস্পিনার মিরাজকে ধরে দশ জন, রইলো বাকি একটি পজিশন। সেটা নিয়েই হয়তো আগামীকাল প্র্যাকটিস সেশনেও চলবে হিসেব-নিকেশ।

সাত নম্বরে মোহাম্মদ মিঠুন বা আরিফুল হকের কাউকে খেলানো হবে? নাকি সাঈফউদ্দীনকে সাতে খেলিয়ে একজন বাড়তি স্পিনারের অন্তর্ভুক্তি ঘটানো হবে- সেটাই দেখার।

এআরবি/এসএএস/এমএস