ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল নিয়ে খুব একটা চিন্তা করতে হয় না নির্বাচকদের। সীমিত ওভারের ফরম্যাটে বেশ কয়েক বছর ধরেই ধারাবাহিক পারফর্ম করে যাচ্ছে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। তবু ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে চিন্তা ছিলো দলের কিছু খেলোয়াড়ের ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফেরার কারণে।
Advertisement
সে চিন্তাও যেন দূর হয়ে গেল বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে হওয়া একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে। ইনজুরি কাটিয়ে মাঠে ফিরেই ঝড়ো শতক হাঁকিয়েছেন তামিম ইকবাল, খেলেছেন ৭৩ বলে ১০৭ রানের ইনিংস। সেঞ্চুরি করেছেন সৌম্য সরকারও, অপরাজিত ছিলেন ১০৩ রান করে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও বল হাতে ৮ ওভারে ১ মেইডেনের সাহায্যে ৩৭ রান খরচায় নিয়েছেন ১টি উইকেট।
ডি-এল মেথডে বিসিবি একাদশ জয়টাও পেয়েছে ৫১ রানের বড় ব্যবধানে। মাত্র ৪১ ওভারেই ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করেছে বিসিবি একাদশ। পুরো পঞ্চাশ ওভার খেলার সুযোগ হলে চারশ কিংবা চারশ ছুঁইছুঁই সংগ্রহ দাঁড়াত তা ঝুঁকি নিয়ে বলে দেয়াই যায়।
এমন এক প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার পরে সন্তুষ্টি ঝরে পড়ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর কণ্ঠে। একটি প্রস্তুতি ম্যাচে যা যা দরকার তার সবটাই পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Advertisement
ম্যাচ শেষ সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নান্নু বলেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচে যেটা প্রত্যাশা থাকে যে সবার ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং সবদিক থেকে যেন উন্নতি হয়। সেদিক থেকে আমার মনে হয় আমাদের প্রস্তুতি ভালোই হয়েছে। উইন্ডিজ কিন্তু ওয়ানডেতে ভালো দল। শর্টার ফরম্যাটে ওদের সব পরীক্ষিত পারফর্মার আছে। সেই হিসেবে আমাদের জন্য এটি অনেক চ্যালেঞ্জিং একটি সিরিজ।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচটি ভালো হওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কিছু খেলোয়াড় যেমন তামিম ইকবাল অনেক দিন পরে খেলছে, শতক করেছে। তো এটা অনেক বড় একটি প্লাস পয়েন্ট। সবকিছু মিলিয়ে দল পুরোপুরি প্রস্তুত আছে। ইনশাআল্লাহ সামনে আমরা ওয়ানডে সিরিজে ভালো করবো টেস্ট সিরিজের মতো।’
এদিকে ওয়ানডে দলের টপঅর্ডার নিয়ে মধুর সমস্যায় পড়তে হচ্ছে জাতীয় দলের নির্বাচদকের। যেকোনো দিনে বাংলাদেশ দলে অটোমেটিক চয়েজ তামিম ইকবাল। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবশেষ সিরিজে রেকর্ড ৩৪৯ রান করেছেন ইমরুল কায়েস। প্রস্তুতি ম্যাচে সেঞ্চুরি হাঁকালেন সৌম্য সরকার এবং ছন্দে রয়েছেন লিটন দাসও। আবার উইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের স্কোয়াডেও রয়েছেন চারজনই।
দলের মধ্যে এমন সুস্থ প্রতিযোগিতাটা ভালো মনে করছেন প্রধান নির্বাচক। তিনি বলেন, ‘এটি দলের জন্য অনেক ভালো একটি দিক। ব্যাকআপ ক্রিকেটাররাও যথেষ্ঠ ভালো অবস্থানে আছে। আর একটি প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকলে দল সবসময় একটি ভালো অবস্থানে থাকে। অবশ্যই আমি মনে করি যে একটি প্রতিযোগিতা থাকা ভালো। আর যখন যাকে দরকার হবে তখনই খেলানো হবে।’
Advertisement
প্রতিযোগিতা না হয় হলো! তাহলে ওয়ানডে সিরিজের একাদশে নেয়া হবে কাকে? প্রধান নির্বাচক জানালেন তামিম খেলবেন- তা নিশ্চিত। তার সঙ্গী বাছাই হবে শুক্রবার আলোচনা করে। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। এখনও ঠিক করা হয়নি তামিমের সাথে কে ওপেন করবে। এটা আগামীকাল (শুক্রবার) ঠিক করা হবে প্রস্তুতির দিন।’
প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিংটা অসাধারণ হলেও বোলিং নিয়ে ভাবতে হচ্ছেই বাংলাদেশকে। কেননা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা যে ৫০ ওভারে করে ফেলেছে ৩৩১ রান। মাশরাফি, রুবেল, নাজমুল অপু, সৌম্য সরকাররা বোলিং করেও আটকাতে পারেননি ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের।
তবে এটি নিয়ে খুব একটা ভাবতে রাজি নন প্রধান নির্বাচক। তিনি বলেন, ‘বিকেএসপির এই ফ্ল্যাট ট্র্যাকে তো বোলিং সেভাবে বোঝা যায় না। যেহেতু আমরা মিরপুরে খেলবো। সেই হিসেবে সেখানকার পিচের ধারণা করে দল সাজানো হবে যে তিনটি পেসার নাকি স্পিনার খেলবে। এটি আসলে টিম ম্যানেজমেন্টের পার্ট, নির্বাচকদের পার্ট না। একটি আলোচনা হবে। তবে যেটি দলের জন্য ভালো হবে সেটাই করা হবে।’
এসএএস/পিআর