আলোকস্বল্পতার কারণে পুরো ম্যাচ হয়নি। তাতে জয় পেতে সমস্যা হয়নি বিসিবি একাদশের। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে একমাত্র প্রস্তুতি ম্যাচে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৫১ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৫১ রানে হারিয়েছে বিসিবি একাদশ।
Advertisement
মাঠে ফিরেই ঝড়ো সেঞ্চুরি করেছেন তামিম ইকবাল, তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে অপরাজিত সেঞ্চুরি করেছেন সৌম্য সরকারও। দুইজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই মূলত ৩৩২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মাত্র ৪১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৪ রান করে ফেলে বিসিবি একাদশ।
কিন্তু শেষ দিকে আলো কমে আসায় আর বাকি থাকা ১৮ রান করা হয়নি বিসিবি একাদশের। তবে ৪১ ওভারের বিচারে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি অনুসারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে ৫১ রানে এগিয়ে থাকায় বিসিবি একাদশকেই জয়ী ঘোষণা করা হয়।
তামিম ইকবাল মাত্র ৭৩ বলে ১০৭ রান করে আউট হওয়ার পরে সৌম্য সরকার সেঞ্চুরি করেন মাত্র ৭৫ বলে। তিনি অপরাজিত থাকেন ৮৩ বলে ১০৩ রান করে। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার সাথে সপ্তম উইকেটে মাত্র ৩৫ বলে গড়েন ৪৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি। মাশরাফি অপরাজিত ছিলেন ২২ রানে।
Advertisement
বাংলাদেশ দলের ওপেনার তামিম ইকবাল মাঠে ফিরতে পারতেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজেই। কিন্তু সিরিজ শুরুর আগে অনুশীলন করার সময় পাজরের ব্যাথায় বাদ পড়ে যান টেস্ট থেকে। সেই ঝালটাই যেন তিনি মেটান ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে একমাত্র একদিনের প্রস্তুতি ম্যাচে।
সেপ্টেম্বরে এশিয়া কাপে ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া তামিম প্রায় তিন মাস পর ফিরলেন মাঠে। ফিরেই হাঁকালেন দুর্দান্ত এক শতক। তার ঝড়ো সেঞ্চুরিতেই ৩৩২ রানের বিশাল লক্ষ্যটাকেও সহজেই তাড়া করার সাহস পায় বিসিবি একাদশ।
সাভারের বিকেএসপিতে তিন নম্বর মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আগে ব্যাট করে দাঁড় করিয়েছিল ৩৩১ রানের বিশাল সংগ্রহ। মনে হচ্ছিলো এতো রান করা হয়তো কঠিন হবে বিসিবি একাদশের জন্য।
কিন্তু বিসিবি একাদশে যে খেলছেন তামিম ইকবাল! তা হয়তো বুঝতে পারেনি ক্যারিবীয় বোলাররা। সফরকারী বোলারদের পিটিয়ে ছাতু বানিয়ে মাত্র ৭৩ বলে ১০৭ রানের টর্নেডো ইনিংস খেলেন তামিম।
Advertisement
মাত্র ৩৪ বলে হাফসেঞ্চুরি পূরণ করার পরে সেঞ্চুরিতে যেতে তামিম খেলেন ৭০ বল। সেঞ্চুরির পরে ১টি ছক্কা হাঁকিয়ে রস্টন চেজের বোলিংয়ে স্টাম্পিং হন দেশসেরা এ ওপেনার।
এর আগে হাফসেঞ্চুরিতে পৌঁছতে তামিম ৮টি বাউন্ডারির পাশাপাশি হাঁকান ১টি ছক্কা। পরে সেঞ্চুরি করতে যোগ করেন আরও পাঁচটি চার ও দুই ছক্কার মার। সবমিলিয়ে ১৩ চার ও ৪ ছক্কার মারে ৭৩ বলে ১০৭ রান করেই থামেন তিনি।
তামিমের এমন ঝড়ো ব্যাটিংয়ের দিনে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন সৌম্য সরকারও। ইমরুল কায়েস ২৭ রান করে ৮১ রানের মাথায় সাজঘরে ফিরে গেলে দ্বিতীয় উইকেটে ১১৪ রানের জুটি গড়েন তামিম ও সৌম্য। অগ্রজ সতীর্থ ১০৭ রান করে ফিরলেও একপ্রান্ত আগলে মারকাট ব্যাটিং চালিয়ে যান সৌম্য।
তামিম আউট হওয়ার পর মোহাম্মদ মিঠুন ৫, আরিফুল হক ২১, তৌহিদ হৃদয় ০ ও শামীম পাটোয়ারী ৯ রান করে আউট হলে ২৬৫ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলে বিসিবি একাদশ। তখন মনে হচ্ছিল হয়তো জয়টা হাতছাড়া হবে। কিন্তু সৌম্য ও মাশরাফি মিলে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়েই থামান।
মাত্র ৭৫ বলে ৭টি চার ও ৬টি ছক্কার মারে সেঞ্চুরি করা সৌম্য শেষপর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৮৩ বলে ১০৩ রান করে। দুই চার ও ১ ছক্কার মারে ১৮ বলে ২২ রান করেন অধিনায়ক মাশরাফি।
মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী ৯ ডিসেম্বর তারিখে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
এআরবি/এসএএস/পিআর