ধর্ম

যাদের ধন-সম্পদ কোনো উপকারে আসবে না

যাদের ধন-সম্পদ কোনো উপকারে আসবে না

মানুষের জীবন বিধান পবিত্র কুরআন। এখানে বর্ণনা করা হয়েছে জীবন পরিচালনার সব দিক ও বিভাগ। যে আলোকে মানুষ নিজেদের দুনিয়ার জীবন ও সংসার সাজাবে। যারা কুরআনের বিধান পালন করবে তারা পরস্পর নিজেদের সহযোগিতা করবে এবং উপকার লাভ করবে।

Advertisement

আর যারা কুরআনের বিধানকে অস্বীকার করবে, তারা কারো কোনো উপকার লাভ করবে না এমনকি নিজেদের সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতিও তাদের কোনো উপকারে আসবে না। আল্লাহ তাআলা মানুষের সতর্কতার উদ্দেশ্যে সে বিষয়গুলো বার বার তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-আয়াতের অনুবাদ

আয়াতের পরিচয় ও নাজিলের কারণসুরা আল-ইমরানের ১০নং আয়াতে আল্লাহ তাআলা মানুষকে এক দুঃসংবাদ দিয়ে নিজেদেরকে সতর্ক হওয়ার কথা বলেন। যারা আল্লাহকে অবিশ্বাস করবে, কুরআনের বিধান পালনে নিজেদের বিরত রাখতে তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি কোনো উপকারে আসবে না।

ইমাম রাজি রহমাতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত তাফসিরে উল্লেখ করেছেন, ‘সুরা আল-ইমরানের আগের আয়াতগুলোতে মুমিনদের কথা বর্ণনা করা হয়েছে এবং সে আয়াতগুলোর আলোকে নিজেদের পরিচালনা ও প্রতিষ্ঠিত থাকার দোয়াও শিখিয়েছেন। আর এ আয়াতে অবিশ্বাসীদের অবস্থা এবং তাদের ক্ষতি ও কঠোর শাস্তির বিবরণ ওঠে এসেছে।

Advertisement

এ আয়াত নাজিলের কারণ সম্পর্কে দু’টি বর্ণনা পাওয়া যায়-> নাজরানের খ্রিস্টান দলের সম্পর্কে এ আয়াত নাজিল হয়। কেননা এ দলের আবু হারেসা ইবনে আল-কামা তার ভাইকে বলেছিল, আমি জানি ইনি (মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সত্যিই আল্লাহর রাসুল। কিন্তু আমি যদি এ কথা প্রকাশ করি তবে রোমের বাদশাহ আমাকে যে ধন-সম্পদ ও পদ-মর্যাদা দিয়েছেন, তার সবই ছিনিয়ে নেবে। তাদের এ কথার জবাবে আল্লাহ তাআলা এ আয়াত নাজিল করে বলেন-

নিশ্চয় যারা অবিশ্বাসী, তাদের ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতি আল্লাহর কাছে কোনো উপকারে আসবে না। আর তারা হবে জাহান্নামের ইন্ধন।’

অর্থাৎ যারা কাফের অবিশ্বাস, অবাধ্য, বিদ্রোহী, যারা মুতাশাবিহ আয়াতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে না, যারা আল্লাহর একত্ববাদের প্রতি বিশ্বাসী হয় না, তাদের ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্তুতি পরকালে আদৌ তাদের জন্য উপকারি হবে না, তাদেরকে আল্লাহর আজাব থেকে রক্ষা করতে পারবে না আর তারা হবে জাহান্নামের ইন্ধন।’ (তাফসিরে কবির)

আরও পড়ুন > হেদায়েত ও রহমত লাভের কুরআনি দোয়া

Advertisement

> এ আয়াত সম্পর্কে দ্বিতীয় অভিমত হলো যে, তা শুধু নাজরানের খ্রিস্টানদের সম্পর্কেই নাজিল হয়নি বরং বনু কুরায়জা ও বনু নজির গোত্রের ইয়াহুদিদেরকেও সম্বোধন ও সতর্ক করা হয়েছে। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুর মতে (তৎকালীন) আরবের পৌত্তলিকদের সম্পর্কেও বিশেষ হুশিয়ারি রয়েছে এ আয়াতে।’ (তাফসিরে রুহুল মাআনি)

কুরআনুল কারিমের এ আয়াত যুগ যুগ ধরে সব ইসলামের প্রতি সব অবিশ্বাসীর জন্যই প্রযোজ্য। যারাই ইসলাম ও আল্লাহর বিধানের বিরোধীতা করবে তারা তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্তুতি দ্বারা দুনিয়া ও পরকালের কোনো উপকার পাবে না। আর পরকালে তারা হবে জাহান্নামের আগুনের ইন্ধন।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত আয়াত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে ইসলাম ও কুরআনের অবিশ্বাস থেকে নিজেদের বিরত রাখার তাওফিক দান করুন। কুরআনের বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনার তাওফিক দান করুন। পরকালে সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জেআইএম