কলকাতা নাইট রাইডার্স যখন গৌতম গম্ভীরকে ছেঁটে ফেললো, তখন তাকে লুফে নিয়েছিল দিল্লি ডেয়ারডেভিলস (বর্তমানে দিল্লি ক্যাপিটালস)। কিন্তু গত আসরে দিল্লির ভরাডুবির মুলে ছিল গৌতম গম্ভীরের বাজে নেতৃত্ব। যে কারণে আসরের মাঝপথেই গম্ভীরকে পাল্টে ফেলা হয়। নেতৃত্ব তুলে দেয়া হয় তরুণ স্রেয়াশ আয়ারের কাঁধে। সেই দলে একাদশেও জায়গা হারিয়ে ফেলেন গম্ভীর।
Advertisement
আগামী আইপিএলের আগে পুরনো খেলোয়াড়দের মধ্যে যে ক’জনকে ধরে রাখার কথা বলা হয়েছিল, দিল্লির ফ্রাঞ্চাইজি সেখানে রাখেনি গম্ভীরকে। অর্থ্যাৎ দিল্লির দলটিতেও জায়গা হারান সাবেক ভারতীয় ওপেনার। অথ্যাৎ, আগামী আইপিএলের আগে নিলামে তোলা হবে তার নাম। কিন্তু অবস্থা যা দাঁড়িয়েছে, তাতে আগামী নিলামে গম্ভীর বিকোবেন কি না সেটা নিয়েই দেখা দিয়েছে যথেষ্ট সন্দেহ।
সুতরাং, মান-সম্মান থাকতেই গৌতম গম্ভীর ক্রিকেটকে বিদায় বলে দিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তো অনেক আগেই ভ্রাত্য হয়ে গেছেন। এবার সব ধরনের ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়ে নিলেন ভারতের হয়ে ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের এই অন্যতম নায়ক। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় অবসরের ঘোষণা দেন গম্ভীর।
জাতীয় দলের দরজা বন্ধ হয়েছিল আগেই। দিল্লির হয়ে রঞ্জি ট্রফিতেও তার ব্যাটে রান আসেনি। আইপিএলে দিল্লি ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়েও ব্যর্থ। সুতরাং, অবসরটা নিয়েই ফেললেন গৌতম গম্ভীর। ফিরোজ শাহ কোটলায় ৬ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া রঞ্জি ট্রফিতে অন্ধপ্রদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচটাই হবে গম্ভীরের শেষ প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। এরপরই গ্লাভস জোড়া তুলে রাখবেন বাঁ-হাতি এই ওপেনার।
Advertisement
বিদায় বলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শেষ হয়ে গেল গৌতম গম্ভীরের ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার। মঙ্গলবারই ব্যাট তুলে রাখার সিদ্ধান্ত নিলেন ৩৭ বছর বয়সী দিল্লির এই ব্যাটসম্যান। ভারতের হয়ে খেলেছেন ৫৮টি টেস্ট, ১৪৭টি ওয়ানডে এবং ৩৭টি টি-টোয়েন্টি। আইপিএল কলকাতা নাইটরাইডার্সের সবচেয়ে সফল অধিনায়ক তিনি। দু-বার নাইটদের আইপিএলের ট্রফি উপহার দিয়েছেন তিনি।
তিন ফরম্যাট মিলিয়ে ১০ হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট রান রয়েছে এই বাঁ-হাতি ওপেনারের। টেস্টে ৪১৫৪, ওয়ানডেতে ৫২৩৮ এবং টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে করেছেন ৯৩২ রান। ভারতের জার্সি গায়ে সর্বশেষ মাঠে নেমেছিলেন ২০১৬ সালে ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে।
গম্ভীরের ক্যারিয়ারে সাফল্যও কম নয়। ভারতের হয়ে জিতেছেন দুটি বিশ্বকাপ (২০০৭ টি-টোয়েন্টি এবং ২০১১ সালের বিশ্বকাপ)। ২০০৩ ঢাকায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অভিষেক হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের। ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে গম্ভীরের ৯৭ রানের দুরন্ত ইনিংসটিই ২৮ বছর পর ভারতকে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ এনে দেয়।
১৯৮৩ সালে কপিল দেবের পর ২০১১ সালে ধোনির হাত ধরে বিশ্বকাপ জেতে ভারত। এর চার বছর আগে ওয়ান্ডারার্সে ২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গম্ভীরের ব্যাট থেকে এসেছিল ৭৫ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। সেবারও রূদ্ধশ্বাস ফাইনালে গম্ভীরের ব্যাটে পাকিস্তানকে হারিয়ে প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জেতে ভারত।
Advertisement
আইএইচএস/এমকেএইচ