একটা সময় বিশ্ব ক্রিকেটে দুর্দণ্ড প্রতাপশালি ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিপক্ষকে তারা বলে কয়েই হারিয়ে দিতো। ওই সময়ে ক্যারিবীয়দের মূল শক্তি ছিল পেস। অ্যান্ডি রবার্টস, মাইকেল হোল্ডিং, কলিন ক্রফট, জোয়েল গার্নাররা যখন প্রতিপক্ষ ব্যাটসম্যানদের দিকে আগুনের গোলা ছুঁড়তেন; তখন সেটার জবাব দেয়ার ভাষা ছিল না। ওই সময় এমন আক্রমণকে নিয়ে প্রশংসাই হয়েছে।
Advertisement
বাংলাদেশ এখন টেস্টে চার স্পিনার খেলাচ্ছে, সেটি নিয়ে কেন তবে সমালোচনা? এমন প্রশ্ন তুলেছেন খোদ ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাবেক পেসার বাংলাদেশ দলের বর্তমান বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ। তিনি মনে করছেন, এটাই এখন বাংলাদেশের ট্রেন্ড।
প্রথমবারের মতো কোনো দলকে ফলোঅন করানো, ইনিংস ব্যবধানে জয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে প্রথমবারের মতো টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ পাওয়া। এত কিছুর পরও বাংলাদেশ প্রাপ্য প্রশংসা পাচ্ছে না। চার স্পিনার নিয়ে স্পিনিং ট্র্যাকে খেলা সাফল্যকে অনেকে খাটো করতে চাচ্ছেন।
তবে টাইগার দলের বোলিং কোচ কোর্টনি ওয়ালশ মনে করেন, দিন শেষে জয়টাই বড় কথা। আশির দশকের প্রতাপশালি ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে টেস্ট ম্যাচ জিততে মাঠে নেমেছিলাম। বাংলাদেশের জয়ের জন্য যেমন উইকেট, যেমন কম্বিনেশন দরকার তাই তো দিতে হবে। আমি এটা নিয়ে খুশি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ যে সময়টায় বিশ্বক্রিকেটে প্রতাপ দেখাতো, তখন কিন্তু তারাও চারজন ফাস্ট বোলার খেলাতো। এখন বাংলাদেশ চার স্পিনার নিয়ে প্রতাপ দেখাচ্ছে, এটা এটা ট্রেন্ড। উইকেট ফাস্ট বোলারদের সহায়ক ছিল না। আমরা মনে করেছিলাম, স্পিনাররা এখানে বড় ভূমিকা রাখবে, তাই হয়েছে।’
Advertisement
এবার পেসাররা তেমন সুযোগ পাননি। তবে মাস তিনেক পর রয়েছে নিউজিল্যান্ড সফর, যেখানে পেসারদেরই গুরুত্ব থাকবে বেশি। ওয়ালশ মনে করছেন, দলের পেসারদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। উইকেট বদলালে তাদের দিনও আসবে। বাংলাদেশ কোচের ভাষায়, ‘টেস্ট জিততে আমরা বেশি স্পিনার খেলিয়েছি। এই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আশা করি, আমরা যখন নিউজিল্যান্ড যাব, তখন পেসাররা ভালো সুযোগ পাবে। আমরা সম্ভবত আলাদা ধরণের উইকেট পাব, তাদের অবশ্যই সুযোগটা লুফে নিতে হবে।’
পেসাররা সুযোগ পাচ্ছেন না বলে কি তারা মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন? ওয়ালশ তেমনটা মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয়, তাদের এটা নিয়ে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। এতেই সব শেষ নয়। যখন আপনি টেস্ট সিরিজ জিতবেন, সেটা দলের জন্যই ভালো। মানসিকভাবে তাদের অনুশীলনে আরও বেশি শক্তি দেখাতে হবে। ওয়ানডে আসছে, পরে নিউজিল্যান্ড সফর। কেউ একজনকে বলতে হবে, আমি টেস্ট ম্যাচে সুযোগ পাইনি কিন্তু ভবিষ্যতে যেন এমন না হয়। যখনই পেস সহায়ক উইকেট পাব, আমার নামটা যেন আগে থাকে।’
এমএমআর/এমএস
Advertisement