জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীদের ৮৪ জন নির্বাচন কমিশনে (ইসি) আপিল করেছেন। সোমবার সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত সংক্ষুব্ধদের আপিল গ্রহণ করে কমিশন।
Advertisement
তবে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে কেউ আপিল করেননি। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে তার তিনটি আসনের মনোনয়নই বাতিল করা হয়। ইমরান এইচ সরকার কমিশনে আসলেও আপিল আর করেনি।
রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে এসব আপিল গ্রহণ করা হয়। সেসব প্রার্থীরা তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেতে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত কমিশনে আপিলের সুযোগ পাবেন। ৬, ৭, ৮ ডিসেম্বর আপিল শুনানি করে নিষ্পত্তি করবে নির্বাচন কমিশন।
এক শতাংশ ভোটার না থাকায়, ত্রুটিপূর্ণ মনোনয়ন, লাভজনক পদে থাকার জন্য, হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকায়, আয়কর রিটার্ন দাখিল না করায়, ঋণ খেলাপির অভিযোগ, দণ্ডপ্রাপ্ত এবং অন্যান্য কারণেও এদের মনোনয়নয়ন বাতিল করা হয়েছিল।
Advertisement
খালেদা জিয়ার আপিল সম্পর্কে বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির জাগো নিউজকে বলেন, খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলের ব্যাপারে সোমবার কোনো আপিল করা হয়নি। আগামীকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে আপিল করা হতে পারে।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএসএম কিবরিয়া ছেলে রেজা কিবরিয়া, গোলাম মাওলা রনি (পটুয়াখালী-৩), মো. মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান (কিশোরগঞ্জ-২), আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলম (বগুড়া-৪), ঢাকা-১ আসনের খন্দকার আবু আশফাক, চাপাইনবাবগঞ্জ-১ থেকে নবাব মোহাম্মদ শামছুল হুদা, বগুড়া-৭ থেকে খোরশেদ মিলটন, খাগড়াছড়ি থেকে আব্দুল ওয়াদুদ ভূঁইয়া, ঝিনাইদাহ-১ থেকে আব্দুল ওয়াহাব, ঢাকা-২০ থেকে তমিজউদ্দিন, সাতক্ষীরা-২ থেকে মোহাম্মদ আফসার আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ মো. তৈয়ব আলী, মাদারীপুর-৩ থেকে মো. আব্দুল খালেক, দিনাজপুর-২ থেকে মোকারম হোসেন, ঝিনাইদাহ-২ লেফটেন্যান্ট (অব.) আব্দুল মজিদ, দিনাজপুর-৩ থেকে সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম, জামালপুর-৪ থেকে ফরিদুল কবির তালুকদার, পটুয়াখালী-৩ থেকে মো. শাহাজাহান, পটুয়াখালী-১ থেকে মো. সুমন সন্যামাত, দিনাজপুর-১ থেকে পারভেজ হোসেন, মাদারীপুর-১ থেকে জহিরুল ইসলাম মিন্ট, সিলেট-৩ থেকে কাইয়ুম চৌধুরী, ঠাকুরগাঁও-৩ থেকে এসএম খলিলুর রহমান ও জয়পুরট-১ থেকে মো. ফজলুর রহমান প্রমুখ আপিল করেন।
আপিলকারী মীর নাছির উদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। সরকারের চাপে রিটার্নিং কর্মকর্তা বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। আপিলে প্রার্থিতা দেবে আশা করি।
গোলাম মাওলা রনি বলেন, সামান্য ভুলের কারণে বাতিল হয়েছে। এটা বাতিলের মতো ভুল ছিল না, যেখানে ইসি থেকে ছোট ভুলের জন্য বাতিল না নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে আশবাদী। কমিশনের প্রতি আস্থা আছে। আশা করি, আমি নির্বাচন করার সুযোগ পাবো।
Advertisement
হিরো আলম বলেন, আশা করি নির্বাচন কমিশনে ন্যায়বিচার পাব। অন্যথায় আমি আদালতে যাব। মন্ত্রী-এমপিরা চায় না। রাজারা চায় না প্রজারা রাজা হোক। জিরো থেকে হিরো হয়েছি। ষড়যন্ত্র করে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত লড়াই করে যাবো।
ইসির আইন শাখার কর্মকর্তারা জানান, বিকেলে আপিলকারীদের মধ্যে একজন রয়েছেন যিনি অন্যের মনোনয়নপত্র বাতিল করার জন্য স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ২ ডিসেম্বর ছিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন। সারাদেশে দাখিল করা ৩ হাজার ৬৫টি মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের পর ২ হাজার ২৭৯টি মনোনয়নপত্র বৈধ এবং ৭৮৬টি মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। আগামী ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ এবং ৩০ ডিসেম্বর ভোট হবে।
এইচএস/জেএইচ/আরআইপি