সিলেটের গোায়াইনঘাটে আবারও বন্যা দেখা দিয়েছে। কয়েক দিনের টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে করে উপজেলার অধিকাংশ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। অনেকের বসত ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় গবাদি পশু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। আবার কেউ কেউ গবাদি পশু সঙ্গে নিয়ে অন্যত্র আশ্রয় খুঁজছেন। পাশাপাশি উপজেলার প্রায় ৩ হাজার ৫শ হেক্টর বোনা আমন ও ৯৫ হেক্টর বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। উপজেলা কৃষি অফিস বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পিয়াইন ও সারী নদী দিয়ে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত উপজেলার পুর্ব জাফলং, আলীরগাঁও, রুস্তমপুর, ডৌবাড়ী, লেঙ্গুড়া, তোয়াকুল ও নন্দীরগাঁও ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রামের রাস্তাঘাট ও বাড়ি ঘর পানিতে প্লাবিত হয়। এতে করে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলো তলিয়ে গেছে। ফলে উপজেলা সদরের সঙ্গে এসব এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন রয়েছে। অপরদিকে ভারত থেকে পাহাড়ি ঢলের তোড়ে উপজেলার নয়াগাঙ্গের পাড় ও বাউরবাগ হাওড় গ্রামের নদীর তীরবর্তী কয়েকটি বসত ঘর নদী ভাঙনে বিলীন হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আরো কয়েকটি বসত বাড়ি ভাঙনের কবলে রয়েছে। পাশাপাশি এ এলাকার নদীর তীর সংরক্ষণ ও ফসলি জমি রক্ষায় বেড়িবাঁধগুলোও রয়েছে হুমকির মুখে।এদিকে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পর্যটন এলাকা বিছনাকান্দি ও জাফলং এ দুটি পাথর কোয়ারির সকল প্রকার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। বন্যার কারণে প্রায় ৫০ হাজার কোয়ারি শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এখনো বন্যার পানি বৃদ্ধি পাওয়া অব্যাহত রয়েছে। তবে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।গোয়াইনঘাটের কৃষি কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান জাগো নিউজকে জানান, নতুন করে বন্যা দেখা দেওয়ায় গোয়াইনঘাটের প্রায় ৩ হাজার ৫শ হেক্টর বোনা আমন ও ৯৫ হেক্টর বীজতলা পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। তবে দুই একদিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলে তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাটের উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম চৌধুরী জাগো নিউজকে জানান, বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থদের সহযোগিতার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরে যোগাযোগ রাখছি।ছামির মাহমুদ/এমজেড/আরআইপি
Advertisement