আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের দুই মেয়াদের জনপ্রিয় প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক। দ্বিতীয় মেয়াদে নিজের আয় কমলেও স্ত্রীর আয় বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। কৃষিজমি থেকে শুরু করে স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির পাশাপাশি পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অন্য সম্পদের পরিমাণও। নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
Advertisement
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে জমা দেয়া হলফনামা থেকে জানা যায়, পলকের বর্তমান আয় হিসাবে কৃষিখাত থেকে ৪৮ হাজার, ভাড়া থেকে ৬০ হাজার, প্রতিমন্ত্রী হিসেবে ১১ লাখ ৪ হাজার, ব্যাংক ইন্টারেস্ট এবং টকশো থেকে ৬ লাখ ৩০ হাজার ৪৯ টাকা। যা ২০১৩ সালে ছিল কৃষিখাত থেকে ৪২ হাজার, ভাড়া থেকে ৬০ হাজার, ব্যবসা থেকে ১ লাখ, শেয়ার থেকে ১ লাখ ৬৩ হাজার ২৫২ টাকা, আইন পেশা থেকে ১৪ লাখ ১৭ হাজার ৫০০ ও টিভি টকশো থেকে ২০ হাজার টাকা।
প্রথম মেয়াদে প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন আয় কিছুটা বেড়েছিল সংসদ সদস্য হওয়ার আগে। ২০০৮ সালে দেয়া হলফনামা থেকে জানা যায়, পলক কৃষি খাত থেকে ১০ হাজার ও ভাড়া থেকে ৪৮ হাজার টাকা আয় করলেও এ সব খাত থেকে স্ত্রীর কোনো আয় ছিল না।
এবারের ফলফনামায় থেকে জানা যায়, পলকের স্ত্রীর বর্তমান আয় কৃষিখাত থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার, ভাড়া থেকে ৪৫ হাজার, ব্যবসা থেকে ৯ হাজার ৮৪০, চাকরি থেকে ২ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ ও অন্যান্য খাত থেকে ৮ লাখ ৬ হাজার ৯২৩ টাকা। যা ২০১৩ সালে ছিল কৃষিখাত থেকে ৩৫ হাজার, ব্যবসা থেকে ৪ লাখ ৬৫ হাজার ৫০০, শেয়ার থেকে ৬২ হাজার ৫০০ ও চাকরি থেকে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৩০০ টাকা।
Advertisement
হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে পলকের নিজ নামে ৯ লাখ ১৭ হাজার ২৪৩ টাকা, ৭ হাজার ৬০০ ইউএস ডলার, ৪ হাজার ৪৫০ ভারতীয় রুপি, ৩ হাজার ৫০০ রিংগিত, ৬২ লাখ ২৭ হাজার ৬৬৯ টাকা জমাকৃত অর্থ, ৭০ লাখ ৩৯ হাজার ৪৮০ টাকা স্থায়ী আমানত, ৭০ লাখ টাকার জিপ গাড়ি, ৪১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ২ লাখ ৯০ হাজার টাকা মূল্যের শর্টগান ও একটি পিস্তল। স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পদ ৬ লাখ ৭৯ হাজার ৫৬০ টাকা নগদ, ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৩২ টাকা জমা, ৬৮ লাখ ৩৫ হাজার ৭৯৬ টাকা স্থায়ী আমানত, ৪৫ লাখ টাকার একটি নিশান গাড়ি, ৬৯ ভরি স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে।
২০১৩ সালে হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে পলকের নিজ নামে ২ লাখ টাকা নগদ, ৪ লাখ ৬১ হাজার ৪০৪ জমাকৃত অর্থ, ৬ লাখ ৯৯ হাজার টাকার শেয়ার, ৪৪ লাখ ৫৪ হাজার ৬২২ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি, ৪১ তোলা স্বর্ণালঙ্কার ছিল। আর স্ত্রীর নামে ১০ লাখ নগদ, ব্যাংকে জমাকৃত ৩ লাখ ৮০ হাজার ৮৭৩ টাকা, ভিশন বিল্ডার্স লিমিটেডের ৮০ শতাংশ শেয়ার, স্থায়ী আমানত ২০ লাখ টাকা, ২৩ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ব্যাংকে দায়বদ্ধ একটি গাড়ি ও ১০৩ তোলা স্বর্ণালঙ্কার ছিল।
২০০৮ সালের হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে পলকের নিজ নামে ৩০ হাজার নগদ টাকা, ব্যাংকে জমাকৃত ২০ হাজার টাকা, ১৮ হাজার টাকার স্থায়ী আমানত ছিল। আর স্ত্রীর নামে নগদ ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংকে জমাকৃত ১০ হাজার ও ১০ ভরি স্বর্ণালঙ্কার যার মূল্য হিসেবে ৭০ হাজার টাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
হলফনামায় স্থাবর সম্পাদ হিসেবে পলকের নিজ নামে ৭ বিঘা ১২ শতাংশ কৃষি জমি যার মূল্য ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, পূর্বাচলে রাজউকের ১০ কাঠার প্লট যার মূল্য ৩৫ লাখ টাকা, ৪ শতাংশ জমির উপর দোতলা পৈত্রিক বাড়ি, যার নিচে তলায় ৪টি দোকান ও একটি গুদাম, যার মূল্য ১৫ লাখ টাকা। আর স্ত্রীর নামে ৮ দশমিক ৭১০ একর কৃষি জমি, যার মূল্য ২৫ লাখ ৬৫ হাজার, ১ দশমিক ২৯ একর অকৃষি জমি; যার মূল্য ৫ লাখ টাকা, শেওড়াপাড়ায় দুটি দোকান, যার মূল্য ৩৬ লাখ টাকা ও স্বামীর বাড়িতে ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ।
Advertisement
২০১৪ সালের হলফনামা থেকে জানা যায়, পলকের স্থাবর সম্পদ হিসেবে ৭ বিঘা ১১ শতাংশ কৃষি জমি; যার মূল্য ৩ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, ৪ শতাংশ অকৃষি জমি দান সূত্রে; মূল্য অজ্ঞাত, দোতলা বিল্ডিং, ৪টি দোকান, মূল্য ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। স্ত্রীর নামে ৫ দশমিক ৬২ একর কৃষি জমি ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্য, ১ একর অকৃষি জমি দান সূত্রে পাওয়া।
এইউএ/এনডিএস/এমএস