মধ্যরাতে ফোনে উত্যক্ত করা ও শ্লীলতাহানীর প্রতিবাদ ও বিচার চাওয়ার অপরাধে বখাটে ও তার সহযোগী এক গৃহবধূর উপর হামলা চালিয়ে আহত করেছেন। সেই সঙ্গে প্রাণনাশের চেষ্টা চালিয়েছেন। এসময় ভাঙচুর করা হয়েছে তার বসত বাড়ি। এ ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের নেপারদর্গা এলাকার পাঠানপাড়া গ্রামে। আহত গৃহবধূ রাশিদা এখন কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গৃহবধূর অভিযোগে জানা যায়, তার স্বামী শামছুল হক ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করেন। দুই ছেলে রাকিব (৮) ও রেদোয়ানকে (৬) নিয়ে তিনি শ্বশুর বাচ্চু মিয়ার বাড়ির পাশে পৃথক বাড়িতে থাকেন। একা থাকার সুযোগে প্রতিবেশী খান মোহাম্মদ ফজলুর বখাটে ছেলে জুলফিকার (২৫) তাকে রাত-বিরাতে প্রায়ই উত্যক্ত করতেন। প্রায় সময় মোবাইল ফোনে অশ্লীল কথা বলতেন। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে পরপর তিনবার মোবাইল ফোনে তাকে কুপ্রস্তাব দেন জুলফিকার। বাড়ির বাইরে আসতে বলেন। এ ঘটনায় রাশিদা রাজি না হওয়ায় জুলফিকার ও তার সহযোগী নাজমুল (২৬) তার বাড়ির বেড়া কেটে ঢুকে শ্লীলতাহানীর চেষ্টা চালান। চিৎকার-চেঁচামেচি শুনে প্রতিবেশীরা জড়ো হলে তারা পালিয়ে যান। সকালে রাশিদা এ ব্যাপারে প্রতিবেশীদের কাছে বিচার দাবি করেন। তখন আরো ক্ষিপ্ত হয়ে জুলফিকার বুধবার বিকেলে রাশিদার উপর হামলা চালান। তার গলা চিপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। কিল ঘুষিতে শরীরের নানা জায়গায় জখম করে দেন। এসময় তার সঙ্গীরা বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর চালান। জুলফিকার এলাকার প্রভাবশালীর ব্যক্তির ছেলে বলে কেউ এগিয়ে আসেননি। কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় চিকিৎসাধীন রাশিদার পাশে কেউ নেই। দুটো ছেলেকে নিয়ে একাই কাতরাচ্ছেন হাসপাতালের বিছানায়। ভয়ে তার শ্বশুরও আসেননি। রাশিদা জাগো নিউজকে বলেন, বাড়ি গেলে ওরা আবার হামলা করবে। আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। এ ঘটনার ন্যায় বিচার না পেলে আমি আত্মহত্যা করবো। এমন লজ্জা নিয়ে বেঁচে থাকার চেয়ে মরা ভালোবুধবার সরেজমিন ঘটনাস্থলে দেখা যায়, ভাঙচুরের নানা চিহ্ন রয়েছে বাড়িতে। হাসপাতালে রয়েছেন গৃহবধূ ও তার দুই ছেলে। তার সৎ মা মাবিয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জাগো নিউজকে জানান, তারা এখনো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তার সঙ্গে কথা বলার সময় ছুটে আসেন জুলফিকার। রাত ১২টায় ফোন করার কথা স্বীকার করে জাগো নিউজকে বলেন, রাশিদা আমার ফুপাতো বোন। আমি কথা বলতেই পারি। আমার মেয়ে সংক্রান্ত কোনো রিপোর্ট নেই। আমি কখনো মেয়ের উপর লোভ দেই না। আমার টাকা আছে মেয়ের অভাব নাই। তিনি দাবি করেন, তার উপর মিথ্যা কলঙ্ক দেয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ভাঙচুর চালিয়েছেন। কুড়িগ্রাম সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুর্শেদুল করিম এহতেশাম জাগো নিউজকে জানান, কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমান উদ্দিন মঞ্জুর মাধ্যমে ঘটনাটি শুনেছি। ভিকটিম কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগপত্র দাখিল করেননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এমজেড/আরআইপি
Advertisement