আইন-আদালত

পুলিশ দেখে পালালেন আমানসহ বিএনপির ১৬৯ নেতাকর্মী

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ আমান। রোববার সকালে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাশকতার মামলায় হাজিরা দিতে আসেন। তার সঙ্গে ছিলেন আরও ১৬৮ নেতাকর্মী। হাজিরা দেয়ার আবেদনও দাখিল করেন তাদের আইনজীবী।

Advertisement

কিন্তু আদালত চত্বরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন দেখে তারা হাজিরা দিতে আসেননি এজলাস কক্ষে। পুলিশ দেখে হাজিরা না দিয়ে তারা পালিয়ে গেছেন বলে বিচারককে জানান তাদের আইনজীবী।

রোববার দুপুর ১২টার দিকে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাইরুজ তাসনীম কেরানীগঞ্জ থানায় করা নাশকতার দুই মামলায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আমানউল্লাহ আমানসহ ১৬৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গ্রেফতার-সংক্রান্ত তামিল প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন আদালত।

Advertisement

এদিন দুপুর ১২টার দিকে বিচারক এজলাস কক্ষে ওঠেন। এ সময় আদালতের আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। বিচারক এজলাসে ওঠার পর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, মামলাটির অভিযোগপত্র আমলে গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। আসামিরা হাজিরার আবেদন দিয়েছেন।

এ সময় আসামিদের আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, আসামিদের জন্য সময়ের আবেদন দাখিল করেছি। তারা এ মামলায় জামিনে রয়েছেন। তারা আদালতে হাজিরা দিতে এসেছিলেন। কিন্তু অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন দেখে তারা ভয়ে আদালত চত্বর থেকে পালিয়ে গেছেন।

তখন বিচারক বলেন, প্রথমে হাজিরা দিলেন। এখন আবার সময়ের আবেদন। এরপর মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন দেখে আমরা বুঝতে পেরেছি আদেশ কী হবে। তাই আসামিরা চলে গেছেন। এছাড়া বিচারকের চেহারা দেখেও বোঝা যায় আদেশে কী থাকবে।

আসামিদের আরেক আইনজীবী খুরশিদ আলম বলেন, আদালতে এত পুলিশ কেন? এতে আদালতের পরিবেশ তো থাকে না। তাদের আরেক আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, হাজিরা দেয়ার জন্য সময় নির্ধারণ ছিল সকাল ১০টায়।

Advertisement

এটা পিছিয়ে করা হয়েছে দুপুর ১২টায়। পুলিশ দিয়ে ঘেরা সারা আদালত। এতে বোঝা যায় আদেশ কী হবে।

আদালত পরিদর্শক আসাদুজ্জামান আসাদ বিচারককে উদ্দেশ করে বলেন, স্যার একসঙ্গে এত আসামির হাজিরা। অতিরিক্ত পুলিশ তো থাকতেই পারে। এরপর বিচারক বলেন, আমি আদেশ পরে দেব। তবে যা দেব তা আপনাদের জন্য ভালোই হবে। এরপর বেলা ২টার দিকে বিচারক আদেশ দেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেন আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আনোয়ারুল কবির বাবুল ।

তিনি বলেন, ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনে করা মামলার অভিযোগপত্র আমলে নেয়ার দিন ধার্য ছিল আজ। কিন্তু আমানসহ ১৬৯ জন আদালতে হাজির না হয়ে সময়ের আবেদন দাখিল করেন। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ জুন ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা এলাকায় নাশকতার অভিযোগে মামলাটি করা হয়। ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর আমানউল্লাহ আমানসহ ১৬৯ জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি চার্জশিট দেয় পুলিশ।

মামলার অন্যতম আসামি হলেন আমানউল্লাহ আমান। অপর আসামিরা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।

জেএ/জেডএ/জেআইএম