প্রবাস

সুষ্ঠু নির্বাচনের আশায় প্রবাসীরা

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রবাসেও চলছে নানা গুঞ্জন। শুরু হয়েছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। যদিও ভোট দেয়ার স্বাদ মিটছে না তাদের। সব দলের অংশগ্রহণে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনের আশায় অধীর অপেক্ষায় রয়েছেন বিভিন্ন দেশে অবস্থিত বাংলাদেশিরা।

Advertisement

দল-মতের ঊর্ধ্বে যার যার পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে ইতোমধ্যেই প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। কেউবা বাড়িতে ফোন করে পরিবারকে জানিয়ে দিচ্ছেন পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে। আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যে আগ্রহ দেখা যাচ্ছে, তার উত্তাপ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের মাঝেও বিরাজ করছে।

বাংলাদেশ সরকারের হিসেব মতে, এক কোটিরও বেশি ভোটার দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। উন্নত জীবন, ভালো কর্মসংস্থানের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পাড়ি জমিয়েছেন এসব মানুষ। এর মধ্যে মালয়েশিয়ায় বসবাস করছেন প্রায় ১০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি।

ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার পি এইচডি গবেষক খালেদ শুকরান বলেন, সবখানে যখন একটা উৎসবমুখর পরিবেশ তখন প্রবাসীদের মনের দীর্ঘশ্বাস লক্ষ্য করা যায়। কেননা, বিদেশ থেকে তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন না। এই চাপা দুঃখ প্রবাসীরা নিজেদের মধ্যে লুকায়িত রেখে সর্বদা দেশের মঙ্গল কামনা করে যান।

Advertisement

তিনি বলেন, সদিচ্ছা এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে বর্তমান ডিজিটাল যুগে প্রবাসীদের এ অধিকার পূরণ খুব কঠিন কিছু নয়। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হলে দ্রুতই প্রবাসী ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভব। খালেদ শুকরান বলেন, বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় ৭০ শতাংশ দেশ তাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার ব্যবস্থা করে থাকে। এমনকি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত আকারে এত বড় হওয়া সত্ত্বেও তারা প্রবাসীদের জন্য ভোট দেয়ার ব্যবস্থা করে থাকে। পাকিস্তান হাইকমিশনের মাধ্যমে প্রবাসীর ভোটাধিকার নিশ্চিত করে। অথচ আমাদের দেশে সেই সুযোগ নেই।

ইউনিভার্সিটি পুত্রা মালয়েশিয়ার পি এইচ ডি গবেষক আব্দুর রউফ শিবলু বলেন, মালয়েশিয়ার বাংলাদেশি গবেষক, ছাত্রছাত্রী এবং সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। সবাই প্রত্যাশা করে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি হবে। যেখানে সবাই তাদের ভোট উৎসবমুখর পরিবেশে দিতে পারবেন।

শিবলু মনে করেন, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনারের মুখ্য কাজগুলোর একটি হবে সুষ্ঠুভাবে ভোটদানে পরিবেশ তৈরি করা। প্রায় এক দশক পরে আবার বিএনপি-সহ ছোট বড় সব দলগুলো নির্বাচনে আশায় সবার আগ্রহে বিশেষ মাত্রা পেয়েছে। ধর্ম নিরপেক্ষতা এবং জনমানুষের নিরাপত্তা বাস্তবায়নে সবদলের অংশগ্রহণ জরুরি ছিল।

সরকারকে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে আরো সহযোগিতামূলক আচরণ করতে হবে। প্রতিদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকায় এবং টেলিভিশনে জনসাধারণের উৎসাহ ও উদ্দীপনা দেখে মনে হচ্ছে এবারের নির্বাচন বেশ প্রতিযোগিতাপূর্ণ হবে।

Advertisement

বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে বলে মনে করছেন প্রবাসীরা। এই নির্বাচনে বিজয়ী দল যেন দেশের চলমান অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রেখে আরও সমৃদ্ধিশালী দেশ গড়তে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়- এমন প্রত্যাশা প্রবাসীদের।

এমআরএম/পিআর