সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫৩ হাজার ৬৮৯টি ল্যাপটপ এবং ২২ হাজারের বেশি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করা হয়েছে। ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল ডিভাইস বিতরণ করা হবে। ডিজিটাল ক্লাসরুম তৈরিতে এসব কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) ২০১৮ বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
Advertisement
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশের অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৬৫ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৬৮৯টি ল্যাপটপ এবং ২২ হাজার ১৭৫টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ করা হয়। এছাড়া ২০১৯ শিক্ষাবর্ষে আরও ৫ হাজার ২৩২টি ল্যাপটপ বিতরণ করা হবে। এ লক্ষ্যে যেসব বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ নেই সেখানে সংযোগ স্থাপনের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই এসব ল্যাপটপ বিতরণ করা হবে। পাশাপাশি নতুন করে ৩৬ হাজার ৭৪৬টি মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর এবং ৫১ হাজার সাউন্ড সিস্টেম কেনার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।
ডিপিইর ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বত্র ই-মনিটরিং সিস্টেম চালুর লক্ষ্যে ৩ হাজার ৭০০টি ট্যাব সংগ্রহের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। খুব শিগগিরই এসব ট্যাব বিতরণ করা হবে। এছাড়া ১২টি নতুন পিটিআইয়ের মধ্যে ১১টিতে আইসিটি ল্যাব স্থাপন করা হয়েছে। পুরাতন ৫৫টি পিটিআইয়ের আইসিটি ল্যাবে আরও ১০টি করে নতুন ডেস্কটপ কম্পিউটার ও ২টি করে এসি সরবরাহ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে আইসিটি বিভাগ থেকে প্রস্তৃতকৃত প্রাথমিকের ১ম থেকে ৫ শ্রেণি পর্যন্ত ২১টি বইয়ের ডিজিটাল কন্টেন্ট ব্যবহারের নিমিত্তে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ডিজিটাল কন্টেন্টের ডিভিডি পাঠানো হয়েছে। ৬০ হাজারের বেশি বিদ্যালয় শিক্ষকদের আইসিটি কন্টেন্ট তৈরির বিষয়ে ১২ দিনব্যাপী মৌলিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে।
Advertisement
সেই সঙ্গে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ২০২২-২৩ অর্থবছর পর্যন্ত বাস্তবায়নের জন্য চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা ও এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের বিভিন্ন বিষয় এ প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চলতি বছর থেকে ৬৩ হাজার ৯৮১টি বিদ্যালয়ে শিখন-শেখানো কার্যক্রম উন্নতকরণ, শ্রেণিকক্ষের উন্নয়নসহ স্লিপ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ৪০ হাজার করে মোট ২৫৫ কোটি ৯২ লাখ ৪০ হাজার টাকা ব্যয় করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৭ সালে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয়েছে। এর মাধ্যমে সারাদেশের ১ কোটি ৪০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপ-বৃত্তির অর্থ দেয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে সারাদেশে ভুয়া শিক্ষার্থীর হিসেব সনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষাকে ডিজিটালাইজেশন করতে দেশের সব সরকারি বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর বিতরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ডিজিটাল ক্লাস তৈরিতে ইতোমধ্যে সাড়ে ৫৩ হাজারের বেশি বিদ্যালয়ে এসব ইলেট্রেনিক্স ডিভাইজ দেয়া হয়েছে। বাকিগুলোতে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, ক্লাসরুম ডিজিটালকরণে শুধু ল্যাপটপ ও প্রজেক্টর নয়, শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল ডিভাইস (ট্যাব) বিতরণ করা হবে। প্রথম পর্যায়ে ৫ হাজারের বেশি ট্যাব কেনা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সরকারি প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষার্থীকে ডিজিটাল ডিভাইস তুলে দেয়া হবে।
Advertisement
এমএইচএম/এমএমজেড/পিআর