আইন-আদালত

দণ্ডিতরা নির্বাচন করতে পারবেন না : মাহবুবে আলম

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিচারিক আদালতে দণ্ডিতরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

Advertisement

শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

এদিন সকালে বিচারিক আদালতে দণ্ডিত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার চেয়ারম্যান ও জাতীয় নির্বাচনে যশোর-২ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী সাবিরা সুলতানার সাজা ও দণ্ড স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত।

আরও পড়ুন >> সাবিরা সুলতানার দণ্ড স্থগিতের আদেশ আটকে গেল চেম্বারে

Advertisement

ওই আদেশের ফলে বিচারিক আদালতের দেয়া সাজা কিংবা দণ্ড হাইকোর্টে স্থগিত হলেও ওই ব্যক্তিসহ দণ্ডিত সবারই নির্বাচনে অংশ নেয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়।

মাহবুবে আলম বলেন, যশোর-২ আসন থেকে বিএনপি মনোনিত প্রার্থী সাবিরা সুলতানাকে ঢাকার একটি বিশেষ আদালত দুদক আইনের দুটি ধারায় তিন বছর করে সাজা দিয়েছিলেন। সেই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করে তিনি হাইকোর্ট থেকে এর আগে জামিন নিয়েছিলেন। এরপর জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পুনরায় তিনি হাইকোর্টে আবেদন করে তার ওই দুর্নীতি মামলার সাজা ও দণ্ড স্থগিত চেয়ে আবেদন জানান। পরে হাইকোর্টের একটি একক বেঞ্চ তার সাজা ও দণ্ড স্থগিত করেন। এর বিরুদ্ধে আমরা চেম্বার জজ আদালতে আবেদন জানাই।

‘এরও আগে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ দণ্ডিতরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে আদেশ দিয়েছিলেন। তাই আমরা হাইকোর্টের ওই একক বেঞ্চের আদেশের স্থগিত চেয়ে চেম্বার আদালতে আবেদন জানাই।’

আরও পড়ুন >> হাইকোর্টের আদেশ সংবিধান পরিপন্থী : অ্যাটর্নি জেনারেল

Advertisement

‘চেম্বার আদালত আমাদের (রাষ্ট্রপক্ষ) আবেদনের ওপর উভয় পক্ষের শুনানি শেষে সাবিরা সুলতানার সাজা ও দণ্ড স্থগিত করে হাইকোর্টের একক বেঞ্চের দেয়া আদেশ স্থগিত করেন এবং আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে আগামীকাল রোববার শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন। ফলে, সাজা ও দণ্ড স্থগিত করা হাইকোর্টের ওই একক বেঞ্চের আদেশ আর বহাল রইলো না।’

অ্যাটর্নি জেনারেল আরও বলেন, ‘আগামীকাল (রোববার) সকাল সাড়ে ১১টায় বা তার আগে আমাদের এ আবেদনের ওপর শুনানি হবে।’

চেম্বার আদালতের আজকের স্থগিতাদেশ কতদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে- এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘আবেদনটির ওপর এখন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি হবে। শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ যতক্ষণ পর্যন্ত রদবদল না করেন ততক্ষণ পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে।’

“এর আগেও দুই বছরের অধিক দণ্ডিত ব্যক্তির সাজা বা দণ্ড স্থগিত হলেও তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বলে হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগ ‘নো অর্ডার’ (কোন আদেশ নয়) দিয়ে বহাল রেখেছিলেন”- বলেও জানান মাহবুবে আলম।

আরও পড়ুন >> দণ্ড স্থগিত হলে ব্যক্তি নির্বাচন করতে পারবে : হাইকোর্ট

সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে তাড়াহুড়া করে ছুটির দিনে আদালত বসিয়ে এ ধরনের স্থগিতাদেশ দিতে বাধ্য করেছেন- সাবিরা সুলতানার আইনজীবীদের এমন বক্তব্যের জবাবে মাহবুবে আলম বলেন, ‘তাদের মুখে এ ধরনের কথা শোভা পায় না। কারণ, পঞ্চম সংশোধনী নিয়ে বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক যখন রায় দিয়েছিলেন তখন তারা রাত ২টার সময় বিচারপতির বাসায় গিয়ে স্থগিতাদেশ নিয়েছিলেন। আজ আমার আপিল বিভাগে যাওয়ার কারণ হলো, সাজা বা দণ্ড স্থগিত নিয়ে হাইকোর্টে দুই ধরনের রায় হয়ে যাচ্ছে। হাইকোর্টের এমন রায়ের মাধ্যমে সৃষ্ট দ্বন্দ্ব নিরসনে আমরা চেম্বার আদালতে যায়।’

‘আজ আমরা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালতে যাওয়ার বিষয়ে গতকাল (৩০নভেম্বর) সাবিরা সুলতানার আইনজীবীদের ফোন করে জানাই। আজ সকালে তার আইনজীবীরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন’- জানান রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা।

এফএইচ/এমএআর/পিআর