জাতীয়

বাংলাদেশে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই : ব্রিটিশ পার্লামেন্ট

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্স বলেছে বাংলাদেশের আসন্ন সংসদ নির্বাচনের জন্য সবার সমান সুযোগ সৃষ্টি বা ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নেই। দেশটির এমপিদের অবগতির জন্য তৈরি ‘রিসার্চ ব্রিফিং’ নামে পরিচিত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।

Advertisement

১৩ পৃষ্ঠার বাংলাদেশ বিষয়ক হালনাগাদ ওই প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার প্রকাশ করা হয়। এতে গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপি নেতাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টিও স্থান পেয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজনসহ কোনো দাবি পূরণ না হওয়া স্বত্বেও নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণের ঘোষণা অপ্রত্যাশিত। অনেকেই মনে করছেন, এর ফলে নির্বাচন তুলনামূলক বিশ্বাসযোগ্য হবে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নিচ্ছে। অন্যদিকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন তীব্রই রয়ে গেছে। তাই এবারের নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

Advertisement

এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের এমন সিদ্ধান্তের কারণ হচ্ছে- আন্তর্জাতিক মহলে এই নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ আছে। তবে তারা (ইইউ) দুই সদস্যের ‘এক্সপার্ট মিশন’ পাঠাবে। আর পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে কমনওয়েলথ এখনও কিছু বলেনি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, খালেদা জিয়ার মুক্তি, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আয়োজনসহ কোনো দাবি পূরণ না হওয়া স্বত্বেও বিএনপি অপ্রত্যাশিতভাবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ বা সমান সুযোগ নিশ্চিতের বিষয়টি অনেক দূরে।

‘প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিদ্বন্দ্বিতার নিয়মের প্রতি (রুলস অব গেইম) সার্বিক আস্থার মাত্রা তলানিতেই আছে। এর ফলে নির্বাচনী প্রচারকালে বা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরপর সংঘাত ও অস্থিতিশীলতা শুরুর আশঙ্কা রয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার বলেছে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্বাচনের ১৫ দিন আগে সেনা নামবে।

হাউস অব কমন্সের এই প্রতিবেদনে বিএনপির দাবি-দাওয়া, খালেদার মামলা ও সাজা, সংলাপের আয়োজনসহ সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।

Advertisement

রাজনৈতিক দলগুলোর আদর্শিক পরিবর্তনের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মাধ্যমে বিএনপি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকে স্বাগত জানিয়েছে। বিপরীতে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির জোরালো দাবিদার আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট সম্প্রতি রক্ষণশীল ইসলামি দলগুলোর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।

এছাড়া প্রতিবেদনে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে।

সেই সঙ্গে কোটা বিরোধী আন্দোলন এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমনে পুলিশের বলপ্রয়োগ এবং ছাত্রলীগের হামলাসহ প্রখ্যাত আলোকচিত্রী শহিদুল আলমকে প্রায় সাড়ে ৩ মাস কারাবন্দী রাখার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয়েছে।

এমএমজেড/এমএস