দেশজুড়ে

এবার কাকে সমর্থন দেবে জেএসএস

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবান ৩০০নং আসনে ভোটের রাজনীতিতে তৃতীয় অবস্থানে আছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস)। এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় কোনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি জেএসএস। আওয়ামী লীগ নাকি বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দিচ্ছে দলটি সে ব্যাপারে কৌতূহল আছে স্থানীয় ভোটারদের মাঝে। তবে বিষয়টির আনুষ্ঠানিক ঘোষণার জন্য কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে জেএসএস।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতা মং প্রু মার্মাকে অপহরণের জন্য জেএসএসকে দায়ী করা হয়। আর এ ঘটনায় জেএসএস নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের করা অপহরণ মামলায় ঘরছাড়া ছিলেন জেএসএসের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা। ফলে বিগত উপজেলা নির্বাচনে জেএসএস বিএনপির প্রার্থীদের ও সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী প্রসন্ন কান্তি তংচঙ্গ্যাকে সমর্থন করে। এমনকি পৌরসভা নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন করে। এবারও সংসদ নির্বাচনে দলীয় কোনো প্রার্থী দেয়নি জেএসএস। তবে অন্য কোন দলের বা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেবে সেই ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সংগঠনটি।

এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক জলি মং মার্মা বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আগের চেয়ে অনেক ভালো। তবে কাকে সমর্থন দেব সেটা কেন্দ্রের ওপর নির্ভর করছে।

জানা গেছে, বান্দরবানের প্রতিটি নির্বাচনে জেএসএসের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অংশগ্রহণ থাকে। এবারও তার ব্যতীক্রম হবে না। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগবিরোধী যেকোনো শক্তিকে দলটি সমর্থন দিতে পারে। এমন মত স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। এক সময়ের রাজনীতির ঘনিষ্ঠ মিত্র পার্বত্য জনসংহতি সমিতির বিরোধিতা করলে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া আওয়ামী লীগের পক্ষে কিছুটা কঠিন হবে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

Advertisement

জেলার রাজনীতিতে ইতোমধ্যে জেএসএসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সম্পর্কের উন্নয়ন হচ্ছে। দুটি দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে যোগাযোগ বেড়েছে। স্থানীয় নেতাদের মধ্যে একাধিকবার বৈঠকও হয়েছে। এছাড়া জেএসএস নেতাদের মামলা প্রত্যাহারে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়টি নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রতি অনেকটা পজিটিভ অবস্থানে আছে জেএসএস।

তবে বিএনপি ও জেএসএস নেতাদের মধ্যে কোনো বৈঠক বা আলাপ হয়নি। জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বিএনপির প্রার্থী সাচিং প্রু জেরী বলেন, জেএসএসের সঙ্গে এখনো কোনো ধরনের আলাপ হয়নি। আগে আমাদের ঘর গোছাই। তারপর বিষয়টি ভেবে দেখব।

পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সূত্রে জানা গেছে, বান্দরবান আসনে জেএসএস কোন রাজনৈতিক দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সমর্থন দেবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন জেএসএস কেন্দ্রীয় সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বান্দরবান জেলার নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে তারা দলীয় সমর্থনের ব্যাপারে ঘোষণা দিতে পারেন।

বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীর বলেন, শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য নীতিগতভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেয়া প্রয়োজন। আমরা আশা করি জেএসএস আওয়ামী লীগকে সমর্থন দেবে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, বান্দরবানে আওয়ামী লীগ থেকে পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং, বিএনপি থেকে সাচিং প্রু জেরী, মাম্যাচিংসহ মোট ৯ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

সৈকত দাশ/এফএ/এমএস