খেলাধুলা

ঘরোয়াতে যেভাবে খেলি, সেভাবেই খেলেছি : সাদমান

‘যাক ভালো খেলছে। রান না করলে কথাটা তো আমাদেরই শুনতে হয় যে ভালো খেলোয়াড় নিতে পারি না।’- কিছুটা আক্ষেপ ও কিছুটা স্বস্তি নিয়ে অভিষিক্ত সাদমান ইসলামের ব্যাপারে কথাগুলো বলছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। সাদমানের তখনো পঞ্চাশ হয়নি। তবে নিজের ব্যাটিং দিয়ে মুগ্ধ করে ফেলেছেন ক্রিকেট বোদ্ধাদের। তাই স্বস্তি দেখা দেয় বাশারের কণ্ঠে।

Advertisement

অবশ্য স্বস্তি না পেলেই বরং অস্বাভাবিক হতো বাশারের জন্য। কেননা ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজের জাত চিনিয়েছেন সাদমান। সবশেষ জাতীয় ক্রিকেট লিগে করেছেন টুর্নামেন্ট সর্বোচ্চ ৬৪৮ রান। তার তথা নজরে থাকা খেলোয়াড়দের পরখ করে নিতে কখনো বগুড়া, কখনো রাজশাহী কিংবা কখনো কক্সবাজার ছুটেছেন বিসিবির নির্বাচকরা। সেখান থেকেই নেয়া হয়েছে সাদমানকে।

নিজের অভিষেক ইনিংসেই ১৯৯ বলে ৭৬ রানের ধৈর্য্যশীল ইনিংস খেলে সাদমানও প্রমাণ করেছেন তাকে দলে নেয়ার সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা। ২২০ মিনিটের ইনিংসে বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন মাত্র ৬টি, ডট খেলেছেন ১৪৮টি। উইকেটের চারপাশে বাহারি শটের বদলে, বেসিক ক্রিকেটীয় শটের দিকেই ঝুঁকে ছিলেন তিনি। বেশিরভাগ শট খেলেছেন ‘ভি’ এর মধ্যে। তাকে যতোই প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করেছে ক্যারিবীয় বোলাররা, একবারও মাথা গরম করে আকাশে তোলেননি বল।

ঘরোয়া ক্রিকেটে তার খেলা যারা দেখেছেন বা খোঁজখবর রেখেছেন, তাদের সবারই জানা তিনি মূলত এমনই রয়েসয়ে খেলার ব্যাটসম্যান। যিনি রান করার চেয়ে উইকেটে টিকে থাকতেই বেশি পছন্দ করেন। তাই তো প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে তার স্ট্রাইক রেট মাত্র ৪৫.৯০। একই ধারা বজায় রেখেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও। অভিষেক ইনিংসে রান করেছেন মাত্র ৩৮.০৯ স্ট্রাইক রেটে।

Advertisement

দিন শেষে সাদমান নিজেও জানিয়েছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে যেভাবে খেলেছেন এতোদিন, ঠিক সেভাবেই খেলেছেন আজকের ইনিংসেও। সংবাদ সম্মেলনে নিজের ইনিংস সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আমি সাধারণত যেরকম ব্যাটিং করি সেভাবেই করেছি। আমি চিন্তা করেছি যে বল আসবে, আমি যেভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলি ঠিক সেভাবে এখানে খেলতে হবে। আর কিছু আমি চিন্তা করিনি।’

টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে দুই দিনের প্রস্তুতি ম্যাচের দলে ছিলেন সাদমান। সে ম্যাচেও ১৬৯ বলের লম্বা ইনিংসে ৭৩ রান করেছিলেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক ইনিংসে সেই ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে বলে জানিয়েছেন সাদমান।

‘হ্যাঁ। প্রস্তুতি ম্যাচের অভিজ্ঞতা কাজে দিয়েছে। আমার ওদের বোলার সম্পর্কে জানা ছিল। আমি যেভাবে পরিকল্পনা করেছিলাম শেষ ম্যাচে (প্রস্তুতি ম্যাচে), ওই পরিকল্পনা এখানে কাজে লেগেছে।’- বলছিলেন সাদমান।

এসময় দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের সাথে ব্যাটিং করার অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে সাদমান বলেন, ‘উনারা (সিনিয়র ক্রিকেটাররা) তো আমার থেকে অনেক অভিজ্ঞ। আমাকে সব সময় বলছিলেন যে তুমি যেভাবে ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাটিং করো, তুমি যেগুলো পারো ওরকম ভাবেই খেল। বাড়তি কিছু করতে যেও না। তুমি সব সময় যেভাবে ন্যাচারাল শটস খেল ঠিক সেভাবেই তোমার খেলাটা খেল।’

Advertisement

এসএএস/পিআর