ঝালকাঠিতে লবণ মিলের মালিকানা নিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে সংঘর্ষে নয়জন আহত ও দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ওইদিন বিকেল সাড়ে চারটায় শরীফ সল্ট মিলের মালিক পক্ষের সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন রূপালী ভাণ্ডার মিলের মালিক পক্ষ। বুধবার দুপুরে শহরের থানা রোডস্থ সানাই কমিউনিটি সেন্টারে মেসার্স রূপালী ভাণ্ডার এ সংবাদ সম্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে মেসার্স রূপালী ভাণ্ডারের মালিক মো. ফজলুল হক হাওলাদার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পুত্রবধূ সোহেলী লিয়া। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফজলুল হক হাওলাদারের মেয়ে মুকুল বেগম, আফরোজা আক্তার, জামাতা যুবলীগ নেতা মামুন হোসেন লাভু, ব্যবসায়ীক অংশীদার অলিউর রহমান হিরু। লিখিত বক্তব্যে সোহেলী লিয়া বলেন, এককালের ঐতিহ্য ঝালকাঠির লবণ শিল্প হাতে গোনা কয়েকজন টাউট-বাটপারদের কারণে ধ্বংসের মুখে। তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ঝুঁকি নিয়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। দীর্ঘদিন সুনামের সঙ্গে পরিচালিত নুর সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজের মিথ্যা ও অনৈতিক অংশীদার দাবি করে ছালেক শরীফ মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বিভিন্ন দফতরে হয়রানিমূলক অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৮ আগস্ট মঙ্গলবার ঝালকাঠি বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে আলোচনার জন্য চিঠি প্রদান করেন। চিঠির প্রেক্ষিতে ফজলুল হক ও রিয়াজুল ইসলাম সোনা বিসিক কার্যালয়ে উপস্থিত হলে সাবেক অংশীদার ছালেক শরীফ পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার ছেলে জামাল শরীফ এবং জেলা ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি শফিক তার ক্যাডারদের নিয়ে বিসিক ভবনের আশপাশে অবস্থান নেন। বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপকের কক্ষে আলোচনা শুরু হলে অতর্কিতভাবে দু`দফা হামলা চালিয়ে রিয়াজুল ইসলাম সোনা, ম্যানেজার অশোক চক্রবর্তি, ক্যাশিয়ার রনজিৎ সরকারসহ ৭/৮ জন শ্রমিক আহত হন। এসময় ছালেক শরীফের শফিক বাহিনী আড়দ্দারপট্টিস্থ ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে নগদ সাত লক্ষ টাকা, ব্যাংকের পাঁচটি চেক বই, প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, জমির দলিল, পর্চা, লুট-পাট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ছালেক শরীফ, তার ছেলে জামাল শরীফ, তাদের বাহিনীর বাহাদুর, হেলাল, পলাশ, শফিক, মধু, মনির, উজ্জলসহ অর্ধশতাধিক ক্যাডার এ হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় অংশ নেন বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ফজলুল হক হাওলাদারকে গুরুতর আহতাবস্থায় বিসিক কার্যালয় থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। সে সময়েও হামলাকারীরা তাদের দলবল নিয়ে তৃতীয় দফায় হামলা চালিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগের হুমকি দিয়ে চলে যান। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সোহেলী লিয়া বলেন, ঝালকাঠি পৌরসভা থেকে বৈধ ট্রেড লাইসেন্সের নামে আইন-কানুন ও নিয়ম-নীতি মেনে সঠিকভাবে অলিউর রহমান হিরু এবং ফজলুল হক হাওলাদার যৌথ অংশীদার হিসেবে নুর সল্ট ইন্ডাষ্ট্রিজ পরিচালনা করতেন। প্রকৃতপক্ষে ছালেক শরীফ নুর সল্টের কোনো অংশীদার নন। ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, আমাদের উপরে হামলা চালিয়ে আহত করা হলো এবং আমাদের লোকদেরকেই গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। হামলাকারীরা বহাল তবিয়তেই রয়েছেন। তাদেরও আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে। এমজেড/এমআরআই
Advertisement