রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অস্থায়ী সব দোকানপাটকে বিকেল ৫টার মধ্যে এবং স্থায়ী দোকানগুলো ৮টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাবি প্রশাসন। এই নির্দেশ আগে থেকে দেওয়া থাকলেও বর্তমানে তা বাস্তবায়ন শুরু করেছে। এতে ছিনতাইয়ের ঘটনা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থীরা।এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদি রাজ বলেন, যারা হলে থাকে তারা প্রায় সময় প্রাইভেট, টিউশনি বা নানা কারণে সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে ফিরে। কিন্তু এতো তাড়াতাড়ি যদি দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায় তবে ক্যাম্পাসে একটা থমথমে অবস্থা বিরাজ করবে যেটা ছিনতাইয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। পুরি-সিঙ্গারা বিক্রেতা সেলিম বলেন, আমি বিকেল ৫টায় দোকান খুলতাম। সাড়ে ৫টার মধ্যে পুরি-সিঙ্গারা-চপ তৈরি হলে বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু গত তিন-চারদিন আগে পুলিশ এসে আমার দোকান বন্ধ করে দিল। প্রথমে আমার কাছ থেকে চার্জারের লাইট নিয়ে নেয়। তারপর পুলিশের গাড়ির সামনে ডেকে নিয়ে বলল, ৫টার পর যেন আর দোকান খোলা না রাখি। তাই এখন আর বিকেলে দোকান খুলি না। অর্ডার দিলে আবার খুলবো।বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তুহিন বলেন, ৫টা, ৫টা করতে করতে এখন আমাদের সবকিছু সন্ধ্যার মধ্যেই প্যাক-আপ করতে হয়। আর ৬টার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় গোরস্থানে পরিণত হতে থাকে। রাতে কোনো বিশেষ প্রয়োজনেও চলাচল করলে বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের হয়রানির শিকার হতে হয়। এখন দেখা যাচ্ছে খেতে হলেও যেতে হবে অনেক দূর।এসব বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক মো. তারিকুল হাসান বলেন, পুরি-সিঙ্গারার দোকানগুলো অবৈধ। এগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকারই কথা না। আমরা এদের বিকল্প ব্যবস্থা করে তুলে দিবো। আর যতদিন বিকল্প ব্যবস্থা না হচ্ছে ততদিন তারা বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকানপাট খোলা রাখতে পারবে। কারণ ৫টার পর প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। তারপর সেখানে বহিরাগত ও বিভিন্ন গ্রুপের ছেলেমেয়েরা বসে। ফলে বিভিন্ন ধরনের ঝামেলা তৈরির সম্ভাবনা থাকে।দোকানপাট বন্ধের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের মতো শিক্ষকরাও নেতিবাচকভাবে দেখছেন। পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ নাসের বলেন, ক্যাম্পাসের লাইব্রেরি-ল্যাব-দোকানপাট সবই সারারাত খোলা রাখতে হবে। এটাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আদর্শ। শিক্ষার্থীরা রাত জেগে পড়বে, গবেষণা করবে, দোকানপাট খোলা না থাকলে খাবে কোথায়।এমএএস/এমআরআই
Advertisement