বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেছেন, ‘রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বিগত সাড়ে পাঁচ বছরে বাংলাদেশের পোশাক খাত যে অগ্রগতি করেছে তা পশ্চিমা বিশ্বের মিডিয়াগুলোতে প্রচার করতে বিজিএমইএর সঙ্গে একত্রে কাজ করবে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল ফেডারেশন (আইএএফ)।’
Advertisement
রাজধানীর কারওয়ানবাজারে অবস্থিত বিজিএমইএ ভবনে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএএফের সভাপতি হ্যান বেক্কে ও মহাসচিব ম্যাথিজস ক্রিয়েত্তে।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘রানা প্লাজার পর বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে, বিগত সাড়ে ৫ বছরে আমরা অনেক অগ্রগতি করলেও তা পশ্চিমা মিডিয়াগুলোতে উঠে আসছে না। এ সুযোগে কিছু কিছু এনজিও আমাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং ক্রেতাদের বিভ্রান্ত করছে।’
‘আইএএফ সভাপতি মনে করেন পশ্চিমা বিশ্বে আমাদের আগ্রগতিগুলো যথাযথা ভাবে প্রচার করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিজিএমইএ এবং আইএএফ এক সঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপ ও ঢাকায় আমরা পৃথক ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে শিল্পের অগ্রগতিগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব,’ বলেন বিজিএমইএ সভাপতি।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘প্রতিবছর আমাদের উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত চার বছরে উৎপাদন খচর বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। সম্প্রতি ন্যূনতম মজুরি ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার কথা রয়েছে। আর ২০১০ সাল থেকে এ পর্যন্ত মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৮১ শতাংশ। এর ফলে আমাদের খরচ আরও বৃদ্ধি পাবে।’
কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যাপক বিনিয়োগ করা হলেও প্রতিবছর পণ্যের দাম কমছে এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিগত সাড়ে পাঁচ বছরে কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আমাদের কারখানাগুলো ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু আমাদের পণ্যের মূল্য কমেছে প্রতিবছর। একটি টেকশন শিল্প বিনির্মাণে টেকশন মূল্যের বিকল্প নেই। এ বিষয়টিতে পশ্চিমা ক্রেতাদের সামনে তুলে ধরতে বা তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আইএএফ আমাদের সঙ্গে কাজ করবে।’
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। ফলে জিএসইপি প্লাস আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া বেক্সিটের পর যুক্তরাজ্যের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা অব্যাহত রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের তৃতীয় বৃহৎ বাজার। এ বিষয়গুলোতে আইএএফ আমাদের তথ্য, পরামর্শ দেয়াসহ ও অন্যান্য সহযোগিত করবে বলে আশ্বাস দিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ২০২০ সালে আইএএফ কনভেনশন ঢাকায় আয়োজনের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আইএএফ সভাপতি বিষয়টি আইএএফ বোর্ডে আলোচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন এবং ঢাকায় এ কনভেনশন আয়োজনের বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।’
Advertisement
আইএএফের সভাপতি হ্যান বেক্কে বলেন, ‘বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের পোশাক শিল্প অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। তাই আমাদের নতুন মিশন সরবরাহ ব্যবস্থা স্মার্ট এবং স্থিতিশীল করা। এ লক্ষ্যে আমরা আমাদের সদস্য ৪৫টি দেশে কাজ করছি। আমাদের কোর মেম্বার হিসেবে আছে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাপারেল অ্যান্ড নিটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশন।’
এমএএস/এনডিএস/পিআর