টেলিভিশন টক শোতে নারী সাংবাদিককে কটূক্তি করার মানহানির মামলায় গ্রেফতার ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে বোর্ড গঠন করে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বিএসএমএমইউ) এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলেছেন আদালত। একই সঙ্গে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন আগামী ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এই আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মইনুল হোসেনের চিকিৎসা চেয়ে করা এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আজ ব্যারিস্টার মইনুলের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী জিনাত হক।
Advertisement
এর আগে গত ১০ নভেম্বর বিশেষায়িত হাসপাতালে ব্যারিস্টার মইনুলের চিকিৎসা ও রংপুর আদালতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় সরকারের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
মইনুল হোসেনের স্ত্রী সাজু হোসেন এ রিট করেন। সেই রিটের শুনানি নিয়ে রংপুর কারা কর্তৃপক্ষ ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে মইনুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। যার ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার বোর্ড গঠন করে মইনুলকে চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট।
অপরদিকে নারী সাংবাদিককে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের বিরুদ্ধে করা মামলায় অভিযোগপত্র (চার্জশিট) গ্রহণ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মাদ আস সামছ জগলুল হোসেন অভিযোগপত্র গ্রহণ করে মইনুলের অধিকতর জামিন শুনানির জন্য ৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এদিন মামলাটির অভিযোগপত্র গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। এছাড়া মইনুলের মামা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন তার জামিনের আবেদন করেন। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করে অধিকতর জামিন শুনানির জন্য আগামী ৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
Advertisement
এদিন শুনানির আগে মইনুলকে কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৬ অক্টোবর একাত্তর টেলিভিশনের টকশোতে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টির এক প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি ‘চরিত্রহীন’ বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’
মইনুলের এ ধরনের বাক্য ব্যবহারে সমালোচনা শুরুর পর তার বিরুদ্ধে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি এলাকায় মানহানির মামলা হয়। এর মধ্যে কয়েকটিতে তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন।
গত ২২ অক্টোবর এ ঘটনায় রংপুরের করা একটি মামলায় মইনুকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। এ মামলায় ২৩ অক্টোবর ঢাকা মহানগর হাকিম (এসিএমএম) কায়সারুল ইসলাম তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
এফএইচ/জেডএ/জেআইএম