রাজনীতি

মনোনয়ন ফরমই কিনিনি : ড. কামাল

‘নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন কিনা?’ জবাবে বললেন, ‘নির্বাচন করতে হলে মনোনয়ন ফরম কিনতে হয়। আমি মনোনয়ন ফরমই কিনিনি, নির্বাচন করবো কীভাবে?’

Advertisement

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। তার নির্বাচনে অংশ নেয়া নিয়ে নানা জল্পনা ছিল রাজনীতিতে। আজই শেষ হলো মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময়সীমা।

গত ১২ নভেম্বর জাগো নিউজ’র সঙ্গে এক আলাপচারিতায় ‘নির্বাচন করবেন না’ বলে সাফ জানিয়েছিলেন নির্বাচন ঘিরে উদ্ভূত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে শীর্ষ নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া ড. কামাল হোসেন।

আরও পড়ুন >> নির্বাচন করবেন না ড. কামাল

Advertisement

কী কারণে নির্বাচনে অংশ নিলেন না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বয়সের কারণে আমি নির্বাচনে অংশ নিতে অনীহা প্রকাশ করেছি। তবে জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য লড়াই করে যাব।’

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু ড. কামালের নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ব্যাপারে বলেন, ‘তিনি (ড. কামাল) আগে থেকেই নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে প্রত্যাশা করা হয়েছিল তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন। কিন্তু সভাপতি (ড. কামাল) বয়সের কারণে আর সম্মতি দেননি। তবে তার সুচিন্তিত পরামর্শ নিয়েই ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনের সব সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে।’

গণফোরাম কয়টি আসন পেতে পারে- এমন প্রশ্নের জবাবে মন্টু বলেন, ‘ঐক্যফ্রন্টের দলগুলো স্ব স্ব অবস্থান থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে। কৌশলগত অবস্থানের কারণে আমরা আসন ভাগাভাগির বিষয়টি পরে প্রকাশ করব।’

জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে ব্যাপকভিত্তিক যে বিরোধী রাজনৈতিক জোট গঠন হয়েছে, তার শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন। তিনি এটিকে রাজনৈতিক জোট উল্লেখ না করে বলেছিলেন, ‘একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জোট হয়েছে। যদিও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্বে বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোটও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দেয়ায় রাজনীতির চিত্রও বদলে গেছে।’

Advertisement

ড. কামাল হোসেন ১৯৩৭ সালের ২০ এপ্রিল বরিশালের শায়েস্তাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জুরিসপ্রুডেন্সে স্নাতক (সম্মান) এবং ১৯৫৮ সালে ব্যাচেলর অব সিভিল ল’ ডিগ্রি লাভ করেন। লিংকনস ইনে বার-অ্যাট-ল’ অর্জনের পর আন্তর্জাতিক আইন বিষয়ে পিএইচডি করেন ১৯৬৪ সালে।

এই রাজনীতিক বাংলাদেশের সংবিধানের প্রণেতা হিসেবেই বেশি পরিচিত। রাজনীতিতে তিনি ছিলেন সবসময়ই সোচ্চার। ১৯৭০ সালের পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তান থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তিনি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তি পান। একই বছর স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান রচনা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭২ সালে আইনমন্ত্রী এবং ১৯৭৩ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ড. কামাল হোসেন জাতিসংঘের স্পেশাল রিপোর্টারের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয়।

১৯৯১ সালে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয় আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা এবং ড. কামালের মধ্যে। ১৯৯৩ সালে আওয়ামী লীগ ত্যাগ করে তিনি ‘গণফোরাম’ প্রতিষ্ঠা করেন।

সম্প্রতি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রে আসেন ড. কামাল হোসেন।

এএসএস/এমএআর/জেআইএম