আন্তর্জাতিক

সমুদ্রের লবণাক্ত পানি পানের উপযোগী করছে ভারত

ভয়াবহ খরায় আর বুকের ছাতি ফেটে যাবে না পানির অভাবে। পানীয় জলের খোঁজে আর হন্যে হয়ে তল্লাশ করতে হবে না মানুষকে। পানির খোঁজে ভূ-গর্ভের গভীরে একটি শিলাস্তর থেকে আরেকটি শিলাস্তরে নেমে যৎসামান্য পানির ভাঁড়ার দেখে আর হতাশ হয়ে পড়তে হবে না। দুর্গম দ্বীপে পানীয় জলের জন্য আর অপেক্ষায় থাকতে হবে না।

Advertisement

ওপরের কথা শুনে মনে হতে পারে এটা অসম্ভব। কিন্তু এসব আর অসম্ভব থাকছে না। আধুনিক সভ্যতার কল্যাণে এবার এসব বিপদ থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে যাচ্ছে মানুষ। কারণ, দুরূহ এসব কাজ সম্ভব করে তুলেছেন ভারতীয় বিজ্ঞানীরা। অসম্ভব লবণাক্ত সমুদ্র বা মহাসাগরের পানিকে খাওয়ার উপযোগী করতে প্ল্যান্ট বানিয়ে তা শোধন করা হবে দেশটিতে। যা বিশ্বে প্রথম। আর এই পানীয় জলের উৎপাদন খরচ হবে প্রতি লিটারে মাত্র ৬৫ পয়সা থেকে ১ টাকা!

ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশান টেকনোলজির (এনআইওটি) একটি গবেষকদলের বানানো ওই প্ল্যান্টের নাম ‘লো-টেম্পারেচার থার্মাল ডিস্যালিনেশন প্ল্যান্ট’ বা ‘এলটিটিডি’। শুধু ভাবনায় বা গবেষণাপত্রে না রেখে, ইতোমধ্যেই তারা সেই প্ল্যান্ট বসানোর প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।

সাগর-মহাসাগরের নোনা জলকে এনআইওটির বিজ্ঞানী-গবেষকরা এত সহজে পানীয় জলে বদলে ফেলার পথ দেখিয়েছেন যে, সেই পানীয় জল বানাতে খরচও হবে যৎসামান্যই। ফলে, স্বল্প মূল্যেই কিনতে পারবে সাধারণ মানুষ।

Advertisement

এনআইওটির সমুদ্রবিজ্ঞানী রামান্না মূর্তি বলেন, বলেছেন, ‘সমু্দ্র-এলাকার ৬০০ মিটার পরিধির সমুদ্রগর্ভের ৪০০ মিটার নিচ থেকে খুব ঠান্ডা ও অসম্ভব লবণাক্ত জল তুলে এনে তার সঙ্গে মেশানো যাবে ভূস্তরের পানিকে। এই প্রক্রিয়াতেই সাগরের অসম্ভব নোনা পানি পরিণত হবে পানীয় জল হয়ে উঠবে। এমনকি, ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও চালানো যাবে সেই প্ল্যান্ট।’

এনআইওটি-র প্রধান আত্মানন্দ জানিয়েছেন, পাইপ বসিয়ে দ্বীপ লাগোয়া সমুদ্র থেকে পানি তুলে আনা হবে। যা অসম্ভব লবণাক্ত। গভীর সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা হবে ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। তার পর নানা ধরনের ক্লোরাইড ও ক্লোরেট দিয়ে সেই পানিকে পরিশোধনের জন্য পর পাঠানো হবে নাইট্রেট, নাইট্রাইট যৌগ এবং অক্সাইড ও নাইট্রেট যৌগের প্ল্যান্টগুলোতে। লবণ প্রায় পুরোপুরি শুষে নেওয়ার পর সেই পানি পাঠানো হবে ভূগর্ভস্থ জল রাখা রয়েছে এমন একটি প্ল্যান্টে। সেখানে সমুদ্রের পরিশোধিত পানির সঙ্গে মেশানো হবে ভূগর্ভস্থ জলকে। পরীক্ষা করা হবে তার গুণমান। তার পর তা সরবরাহ করা হবে।

সূত্র : আনন্দবাজার

এসএ/এমএস

Advertisement