দেশজুড়ে

উদ্বোধন থেকে বাদ পড়ছে কাজির বাজার সেতু

শেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন থেকে বাদ পড়েছে সিলেটের সুরমা নদীর ওপর নির্মিত কাজির বাজার সেতু। বৃহস্পতিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সিলেটের তিন সেতুসহ দেশের ৭টি সেতু উদ্বোধনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ করে নগরের কাজির বাজার গার্ডার ব্রিজ উদ্বোধন থেকে বাদ পড়েছে।বৃহস্পতিবার বেলা ১১ টায় গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সেতু দু’টির উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি­ সফর উদ্বোধনে কোনো প্রভাব ফেলবে কিনা এখনো তা নিশ্চিত হতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা।সূত্র জানায়, সিলেটে বাস্তবায়নাধীন সরকারের এই বৃহৎ প্রকল্পটির উদ্বোধন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে করা নিয়ে এক ধরনের অস্বস্তি তৈরি হয়েছিল। নীরবের চেয়ে সরবে উদ্বোধনই চেয়েছিলেন সিলেটবাসী। চারলেন বিশিষ্ট এই সেতু নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতের ইচ্ছেও তাই। এ জন্যই শেষ মুহূর্তে এসে ভিডিও কনফারেন্সে উদ্বোধন থেকে বাদ পড়েছে কাজির বাজার গার্ডার সেতুর নাম। এলাকার নামে পরিচয় উপস্থাপন হলেও এখনো সেতুটির আনুষ্ঠানিক নাম ঘোষণা হয়নি। নামকরণ নিয়ে বিভিন্ন দাবি রয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ চাচ্ছে মহান মুক্তিযোদ্ধের ৪ নম্বর সেক্টরের বেসামরিক কমান্ডার সাবেক মন্ত্রী প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী সেতু অথবা প্রয়াত স্পীকার হুমায়ুন রশীদের নামে সেতুটির নামকরণ হোক।সিলেট সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী চন্দন কুমার বসাক বুধবার দুপুরে জানান, কাজিরবাজার সেতুসহ সিলেটের তিনটি সেতু উদ্বোধনের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চিঠি এসেছিল। শেষ মুহূর্তে এসে কাজির বাজার সেতুর নাম বাদ পড়েছে। বাকি দুই সেতুর উদ্বোধন নির্ধারিত সময়েই হবে। তবে কী কারণে কাজির বাজার সেতুর নাম উদ্বোধন থেকে বাদ পড়েছে তা তার জানা নেই। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আকস্মিক দিল্লি­ সফর করলেও উদ্বোধনের দিনক্ষণ এখন পর্যন্ত আগেরটাই রয়েছে।সূত্র জানিয়েছে, সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কের চন্দরপুর সেতু ও সুনামগঞ্জের সুরমা সেতুর উদ্বোধন সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, আইন-বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেন গুপ্তের থাকার কথা।সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, ২০০৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রয়াত অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমান সিলেট নগরীর শেখঘাট এলাকায় সুরমা নদীর ওপর কাজির বাজার সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে এর নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় লেগেছে ১০ বছর।সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যে স্টিল আর্চসহ (খুঁটি) বোরড পাইল ফাউন্ডেশনের ওপর প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার এই সেতুর প্রথমে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল ৪৪ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ৩৬৬ মিটার এবং প্রস্ত ১৯ মিটার।২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্প সংশোধন করে। ২০১২ সালে পুনরায় সেতুর কাজ শুরু হয়। স্টিলের আর্চ ছাড়াই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৮৯ কোটি টাকা। ঢাকার মেসার্স কামাল অ্যাসোসিয়েটস প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, নকশা সংশোধন ও সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য কাজিরবাজার সেতুতে ১০০ ফুট করে চারটি স্টিলের আর্চ নির্মাণের কথা ছিল। এ কাজের অংশ হিসেবে সেতুর পাইলিংয়ে অতিরিক্ত প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়। কিন্তু বিপুল এ অর্থ ব্যয়ের পরও আর্চ সংযুক্ত হয়নি।এ ব্যাপারে সওজের কর্মকর্তারা জানান, ডিজাইন অনুযায়ী ৭০০ টনের আর্চ লাগানোর কথা। কিন্তু এখন ৯০০ টন ওজনের আর্চ লাগাতে হবে। সেতুর ওজন বেড়ে যাবে বলে তা লাগানো হয়নি।ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর

Advertisement