আন্তর্জাতিক

ছেলের বিয়েতে জীবনদায়ী উপহার চাইলেন বাবা

‘উপহার নয়, আশীর্বাদ করুন’; বিয়ের আমন্ত্রণপত্রে এখন প্রায়ই চোখে পড়ে এমন অনুরোধ। কিন্তু ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী গণেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলের বিয়ের আমন্ত্রণপত্রে অনুরোধটা ছিল একেবারেই অন্যরকম!

Advertisement

ভারতীয় একটি গণমাধ্যম বলছে, ছেলের বিয়ের বউভাতে আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে উপহার নয়, রক্তদানের অনুরোধ জানিয়েছিল বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার। অনুরোধে সাড়া দিয়ে রোববার উত্তর ২৪ পরগনার সোদপুরের ঘোলায় বিয়ে বাড়িতে রক্তদান করেন প্রায় ৫০ জন। যাদের মধ্যে ১৭ জন কনেযাত্রী। সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বিয়েতে রক্ত সংগ্রহ করে।

এমন অভিনব উদ্যোগে আপ্লুত নববধূ রূপা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘এভাবে বউভাত হবে আমি কল্পনাও করতে পারিনি! তবে আমি গর্বিত এবং সম্মানিত। সকলের পাশে থাকাটাই তো জীবনের সত্য। যারা রক্ত দিলেন তাদের সেই দানে মুমূর্ষু রোগীরা বেঁচে উঠুক। শুভদিনে এটাই কামনা।’

আরও পড়ুন : ককপিটে পাইলটের বেঘোর ঘুম, গন্তব্য ছেড়ে ৫০ কিলোমিটার গেল বিমান

Advertisement

রূপার স্বামী অঞ্জন বলেন, এটি তার বাবা গণেশের উদ্যোগ। তিনি বলেন, ‘বাবার জন্য গর্বিত। সকলের সামাজিক দায়বদ্ধতা পালন করা উচিত। আমরা সেই চেষ্টাই করেছি। আশা করি, আরো অনেকে এমন কাজে এগিয়ে আসবেন।’

রক্তদান শিবিরের পাশাপাশি ছিল খাওয়ার ব্যবস্থা। রক্তদাতা এবং রক্ত সংগ্রহকারীরা একসঙ্গে বসে খেয়েছেন। নববধূ রক্তদাতা সকলের হাতে তুলে দিয়েছেন স্মারক হিসেবে রক্ত গোলাপ।

রক্তদান কর্মসূচিতে যুক্ত ডি আশিস বলেন, ‘এমন উদ্যোগ ঘরে ঘরে শুরু হলে কোনো সংকট থাকবে না। বিয়ের অনুষ্ঠানে এমন উপহার গ্রহণের কথা ক’জন আর জোর দিয়ে বলতে পারেন!’

আরও পড়ুন : বিমান চুরি করল দুই কিশোর! বরের বাবা গণেশের উদ্যোগে বউভাতে রক্তদানের আয়োজন করা হয়। তিনি জানান, চিকিৎসার অভাবে নিজের এক সন্তানের মৃত্যুই তার সামাজিক দায়বদ্ধতাকে বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ‘আমি চাই বাড়ির অনুষ্ঠানে, বিবাহবার্ষিকী, উপনয়ন, জন্মদিন, গৃহপ্রবেশ, বিবাহের মতো সব সামাজিক অনুষ্ঠানেই হোক রক্তদান। যা পাশে দাঁড়ানোর আন্তরিক বার্তা। যা পরস্পরের মধ্যে বন্ধনও।’

Advertisement

এসআইএস/পিআর