খেলাধুলা

ক্রীড়াঙ্গনে আলোচনার শীর্ষে আরিফ খান জয়ের ‘পরাজয়’

পরাজয়ই তো! মন্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র আরিফ খান জয়ই যে পাননি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন। রোববার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২৩০ জন নৌকার মাঝি ঠিক করেছেন। অনেক প্রভাবশালী নেতা এবার দলীয় মনোনয়ন থেকে বাদ পড়েছেন।

Advertisement

তবে মন্ত্রীদের মধ্যে একমাত্র বাদ পড়া নাম- যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়। তাইতো বেশি আলোচনায় সাবেক এ ফুটবলার। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিতও নেই এবারের নির্বাচনে। তবে তাকে বাদ দেয়া হয়নি, নিজ থেকেই অবসর নিয়েছেন রাজনীতি থেকে।

২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনে প্রথমবারের মতো আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সংসদ সদস্য হওয়ার পর সাবেক এ ফুটবলারকে যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক এ অধিনায়কের এমপি ও মন্ত্রী হওয়াটা ছিল রাজনীতিতে বড় ধরনের চমক। কিন্তু এক মেয়াদ না যেতেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নৌকা থেকে নেমে যেতে হলো তাকে। সোমবার ক্রীড়াঙ্গনের মানুষের প্রধান আলোচনাই যাদের অন্যতম অভিভাবক আরিফ খান জয়ের দলীয় মনোনয়ন না পাওয়া।

ক্রীড়া উপমন্ত্রী হওয়ার সুবাদে আরিফ খান জয় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান। এ দফতরের চেয়ারম্যান ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদার। সোমবার জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের এক কর্মকর্তার প্রশ্ন, ‘জানেন নাকি ভাইস চেয়ারম্যান মহোদয়কে কেন মনোনয়ন দেয়া হয়নি?’ অন্যান্য ক্রীড়া ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা হলেও এ দিনের প্রধান আলোচ্য বিষয় যেন আরিফ খান জয়। অনেকে দু:খ করেও বলছেন- ‘এটা ক্রীড়াঙ্গনের জন্য ভালো খবর হলো না। কোনো মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীকে নৌকা থেকে নামতে হলো না, শুধু আমাদের মন্ত্রীর বেলায়ই হলো।’

Advertisement

তবে আরিফ খান জয় যে এবার নৌকায় চড়তে পারবেন না তা অনেকটা অনুমিতই ছিল। উপমন্ত্রীর দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই বিতর্কিত কর্মকান্ড যেন পিছু ছাড়ছিল না তাঁর। মন্ত্রী হয়েও তৃতীয় বিভাগ ফুটবল লিগের ডাগআউটে দাঁড়ানো, খেলার মাঠে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রবেশ, পুলিশের এসআইকে মারধর, ব্যানারে নাম না থাকায় নিজ মন্ত্রণালয়ের এক যুগ্ম সচিবের কক্ষ ভাঙচুর থেকে শুরু করে অনেক বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছেন আরিফ খান জয়।

চাকরি কিংবা অন্য কাজ পাইয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজ নির্বাচনী এলাকার (নেত্রকোনা-২) মানুষের সঙ্গে অর্থনৈতিক প্রতারণার অভিযোগের অনেক খবরও তার বিরুদ্ধে প্রকাশ হয়েছে মিডিয়ায়। সেই সঙ্গে সহোদরদের বেপরোয়া আচরণেও সমালোচিত হয়েছেন আরিফ খান জয়।

খেলোয়াড়ী জীবনে রাফ অ্যান্ড টাফ ছিলেন আরিফ খান জয়। মন্ত্রিত্বের বেলায়ও যেমন তাই। একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. বীরেন শিকদারের সঙ্গেও সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল তার। ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলেও সময়মতো উপস্থিত না হওয়া এবং না আসার অভিযোগ অনেক আরিফ খান জয়ের বিরুদ্ধে।

৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের জন্য নৌকার প্রার্থী হিসেবে যে ২৩০ জনকে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ- তাদের মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই আছেন। তবে ফুটবলার মাত্র একজন- তিনি আবদুস সালাম মুর্শেদী। খুলনা-৪ আসনে নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন তিনি।

Advertisement

মাশরাফি মনোনয়ন পাওয়ায় ক্রিকেটের পাল্লা ভারী হয়েছে এবারের নির্বাচনে। আরিফ খান জয় বিতর্কিত না হলে হয়তো নৌকায়ই থাকতেন তিনি। কিন্তু তাকে নামিয়ে দিয়ে নেত্রকোনা-২ আসনে অন্য প্রার্থী দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ । তিনি অবশ্য নতুন নন-সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান খসরু।

আরআই/এসএএস/এমএস