রাজধানীর গুলশানের হলি আর্টিসানে জঙ্গি হামলার মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এর মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
Advertisement
সোমবার (২৬ নভেম্বর) সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। অভিযোগ গঠন করে মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আগামী ৩ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত।
অভিযোগ গঠনের সময় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের কোনো আইনজীবীই ছিলেন না ট্রাইব্যুনালে।
অভিযোগ গঠনের সময় আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে শোনান বিচারক। এসময় আসামিদের জিজ্ঞাসা করা হয় আপনারা দোষী না নির্দোষ? জবাবে ছয় আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এ সময় বিচারক তাদের জিজ্ঞাসা করেন, আপনারা আইনজীবী নিয়োগ দেন না কেন?
Advertisement
তখন তারা বলেন,আমরা গরীব মানুষ। আইনজীবী নিয়োগের টাকা নেই আমাদের।
তখন বিচারক বলেন, লিগ্যাল এইডে যান। তারা বিনা টাকায় মামলা পরিচালনা করেন। তখন আসামিরা বলেন, লিগ্যাল এইড আমাদের মামলা নেয় না। এর আগে ছয় আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
গত ৮ আগস্ট হলি আর্টিসান মামলায় ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন ট্রাইব্যুনাল। শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।
গত ২৩ জুলাই আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর। আসামিদের মধ্যে ছয়জন কারাগারে এবং দু’জন পলাতক রয়েছেন।
Advertisement
কারাগারে থাকা ছয় আসামি হলেন- জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগান, রাশেদুল ইসলাম ওরফে র্যাশ, সোহেল মাহফুজ, মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান এবং হাদিসুর রহমান সাগর।
পলাতক দু’জন হলেন- শহীদুল ইসলাম খালেদ ও মামুনুর রশিদ রিপন।
অভিযোগপত্রে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা চাওয়া হলে ট্রাইব্যুনাল তাদের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করেন।
এ ছাড়াও বিভিন্ন অভিযানে ১৩ জন নিহত হওয়ায় তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তাদের মধ্যে আটজন বিভিন্ন অভিযানে ও পাঁচজন হলি আর্টিসানেই নিহত হন।
গুলশানের হলি আর্টিসানে সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টে’ নিহত পাঁচ হামলাকারী হলেন- রোহান ইবনে ইমতিয়াজ, মীর সামেহ মোবাশ্বের, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ওরফে উজ্জ্বল ও খায়রুল ইসলাম ওরফে পায়েল।
বিভিন্ন ‘জঙ্গি আস্তানায়’ অভিযানে নিহত আটজন হলেন- তামীম আহমেদ চৌধুরী, নুরুল ইসলাম মারজান, তানভীর কাদেরী, মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলাম ওরফে মুরাদ, রায়হান কবির তারেক, সারোয়ান জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান ওরফে চকলেট ও মিজানুর রহমান ওরফে ছোট মিজান।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। এ সময় তাদের গুলিতে দুই পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। পরে অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। ওই ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গুলশান থানায় একটি মামলা করে পুলিশ।
জেএ/এনএফ/জেআইএম/এমএস