প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, নির্বাচনের দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওইদিন অত্যন্ত সতর্কতার সাথে ম্যাজিস্ট্রেটদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। অনেক সময় বিব্রত ও বিভ্রান্তিকর অবস্থায় পড়তে হয়। আপনাদের (ম্যাজিস্ট্রেট) বিচলিত করতে অনেকে উসকানিমূলক কথাবার্তা বলতে পারে। যাকে বলা যায় ‘মিসগাইডিং’। এ ক্ষেত্রে আপনারা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, ক্ষিপ্রতা, ম্যাজিস্ট্রেসি মানসিকতা দিয়ে অবস্থা বুঝে দায়িত্ব পালন করবেন।
Advertisement
সোমবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটগণের উদ্দেশ্যে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা সংক্রান্ত এক ব্রিফিংয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি বলেন, সুষ্ঠু অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দায়িত্ব আপনাদের। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখা, ভোটাররা যেন নির্বিঘ্নে ভোটদান শেষে বাড়িতে গিয়েও নিরাপদে থাকেন -তা নিশ্চিত করার দায়িত্বও আপনাদের। নির্বাচনকালে আপনারা বিজিবি, সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশের সাথে দায়িত্ব পালন করবেন। কেউ বললো, ১০০ কিংবা ৫০ গজ দূরে ঝামেলা শুরু হয়েছে। তখন আপনারা আগে সত্যি-মিথ্যা যাচাই করবেন, এরপর অ্যাকশন। নির্বাচন কমিশনের সাথে আপনাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ থাকবে। আপনাদের নম্বার থাকবে জেলা ও নির্বাচন কমিশন অফিসে। সেখান থেকে অবস্থা জানাবেন।
রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সাথে আপনাদের কাজ। যারা দেশের শাসনভার গ্রহণ করবেন। যারা সংসদ সদস্য হবেন, মন্ত্রী হবেন, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার হবেন। প্রত্যেকেই সম্মানিত। প্রত্যেকের সাথে সমান আচরণ করতে হবে। তারা কখনো আপনাদের বিভ্রান্তকর অবস্থায় ফেলতে চাইবে না। তাদের কথা ধৈর্য সহকারে শুনতে হবে -বলেন সিইসি।
Advertisement
তিনি বলেন, কখনো ধৈর্যচ্যুতি হলে চলবে না। বুঝে, জেনে শুনে অ্যাকশনে যেতে হবে। কখন অ্যাকশনে যাবেন তাও বুঝতে হবে। অনেক সময় চেষ্টা করবেন নিয়ন্ত্রণ করতে। অ্যাকশনে যত কম যাবেন নির্বাচন তত নির্বিঘ্ন হবে, প্রশ্নাতীত হবে। আমরা চাই না নির্বাচনে কোনো সংঘাত হোক, প্রাণহানি হোক, রক্তপাত হোক। এগুলোকে দেখভাল করার ক্ষেত্রে আপনাদের দায়িত্ব অপরিসীম। কারণ, নির্বাচনের আগে ও পরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
সিইসি বলেন, কয়েক হাজার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। জেলা, উপজেলা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসক তথা রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী ও উপ-সহকারী ও পুলিশ সুপার, পুলিশের ঊর্ধ্বোতন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আজকে পর্যন্ত ৬৯১ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ওরিয়েন্টেশন হলো। এরপর জুডিশিয়াল ইনকুয়ারি কমিটি ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের সাথে ওরিয়েন্টেশন হবে।
কে এম নূরুল হুদা বলেন, আচরণবিধি আপনাদের ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে। এমন কিছু করবেন না যাতে নিয়ন্ত্রণহীন পরিস্থিতির তৈরি হয়। নির্বাচনের পরিবেশ ব্যাহত হওয়ার মতো কিছু করবেন না। এ বছরের নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সকল দল অংশ নিচ্ছে। সে জন্য সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আপনারা ক্ষিপ্রতা, দক্ষতার সাথে ধৈর্য্য সহকারে দায়িত্ব পালন করবেন, বিচলিত হবেন না।
নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার, মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী (অব.) ও নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোস্তফা ফারুক উপস্থিত ছিলেন।
Advertisement
জেইউ/আরএস/জেআইএম