আন্তর্জাতিক

অযোধ্যায় মন্দির নির্মাণ নিয়ে ফের উত্তেজনা

ভারতের অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের দাবিতে কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন শিবসেনা ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদ রোববার থেকে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করায় ফের উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৯২ সালে যা ঘটেছিল তারই পুনরাবৃত্তি হবে কি-না এই আশঙ্কাতেই ভুগছেন স্থানীয় মানুষজন। কেননা রোববারের পৃথক দুটি সমাবেশে কয়েক লক্ষ মানুষ রামমন্দির তৈরির দাবি নিয়ে হাজির হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Advertisement

মহারাষ্ট্র থেকে বিশেষ ট্রেনে চেপে কট্টর হিন্দু সংগঠন শিবসেনার কয়েক হাজার সমর্থক হাজির হয়েছেন সেখানে। শনিবার বিকেলে অযোধ্যায় পৌঁছেছেন শিবসেনা প্রধান। অন্য দিকে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) সহযোগী ও কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদও (ভিএসপি) রাম মন্দির কীভাবে তৈরি করা যায় তা নিয়ে জনমত জানতে রোববার বিশাল ধর্মসভা ডেকেছে।

শিবসেনা প্রধান বলেন, ‘মোদী সরকার কুম্ভকর্ণের মতো না ঘুমিয়ে থেকে জেগে উঠুক আর রাম মন্দির নির্মাণ করতে অর্ডিন্যান্স তৈরি করুক। আমরা রাম আর মন্দির নিয়ে রাজনীতি করতে চাই না। কেবল মন্দিরই চাই।’ বিশ্ব হিন্দু পরিষদের দাবি রোববারের সমাবেশে যোগ দেবেন তিন লাখ ভক্ত।

আর এই পরিস্থিতিতেই অযোধ্যার মানুষের মনে নতুন করে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে, আবারও সেই ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বরের মতো ঘটনা না ঘটে। ইশতিয়াক আহমেদ নামে অযোধ্যার এক বাসিন্দা বিবিসিকে বলেন, ‘যেভাবে ভিড় বাড়ছে, তাতে আমাদের মনে একটাই সন্দেহ আবার ৯২’র মতো কিছু ঘটে কি-না। অনেকেই বাড়ির ছোট বাচ্চা ও নারীদের বাইরে পাঠিয়ে দিয়েছে। ঘরে খাবার মজুদ করে রেখেছি আমরা সবাই।’

Advertisement

সংঘর্ষ এড়াতে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, তার জন্য লাখ খানেক নিরাপত্তা কর্মী অযোধ্যায় মোতয়েন করা হয়েছে। রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ ছাড়াও কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশকেও নিয়ে আসা হয়েছে। তারপরও ওই এলাকায় বসবাসকারী উভয় ধর্মের সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।

সমাবেশ ডাকা দুটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠনেরই দাবি এখানে রাম মন্দির গড়তে হবে। তারা ঘোষণা করেছে, এটাই হবে মন্দির তৈরির আগে শেষ সমাবেশ। এরপর আর কোনও ধরনের আলোচনা কিংবা সভা-সমাবেশ নয়। সরাসরি মন্দির নির্মাণের কাজে এগোনো হবে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে ধর্মের জিগির তুলে নিজেদের অবস্থান আরও পোক্ত করতেই এক হয়েছে শিবসেনা ও ভিএইচপি। এমনিতেই নানা বিষয়ে মতবিরোধ থাকলেও রামমন্দির নিয়ে তাদের এ ঐক্য বিজেপির ওপরও তুমুল চাপ সৃষ্টি করবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

এসএ/জেআইএম

Advertisement