লাইফস্টাইল

হাতের লেখাই বলে দেবে আপনি কেমন মানুষ!

কারো হাতের লেখায় আমরা মুগ্ধ হই, আবার কারো হাতের লেখার পাঠোদ্ধারই দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের প্রতিটি মানুষের হাতের লেখা আলাদা। আর গ্রাফোলজিস্টদের মতে, এর সূত্র ধরেই বুঝে ফেলা সম্ভব, কে কেমন ধরনের মানুষ! গ্রাফোলজি বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে মানবচরিত্র নির্ণয়ের এই পদ্ধতিতে চাইলে জানতে পারেন নিজের সম্পর্কেও। জেনে নিন আপনার সই করার পদ্ধতি ও হাতের লেখা কী ইঙ্গিত করছে আপনার সম্পর্কে-

Advertisement

আরও পড়ুন: নিজেকে একা লাগে? জেনে নিন সমাধান

সই করার সময় কি কেবল নিজের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে তারপর পদবী লেখেন? বিশেষজ্ঞ অ্যানেট পয়েনজারের মতে, এমনটা যারা করেন, তারা আসলে জীবনে গোপনীয়তাকে গুরুত্ব দেন। ব্যক্তিগত জীবন ও নিজের পরিচয় গোপন রাখতে ভালোবাসেন বলেই এমনটা করেন তারা।

আপনার হাতের লেখায় প্রতিটি অক্ষরের ক্ষেত্রেই কি কোণ তৈরি হয়? একঝলক দেখলে মনে হয়, লেখার টানে প্রতিটি অক্ষরই নানা ভাবে জ্যামিতিক কোণের জন্ম দিয়েছে। এমন হলে সেই মানুষ বুদ্ধিমান ও তার বিশ্লেষণী ক্ষমতা অন্য সবার চেয়ে বেশি বলে মনে করছে হাতের লেখার বিজ্ঞান।

Advertisement

অনেকের লেখায় গোল গোল আকার থাকে বেশি। প্রতিটি অক্ষরের মধ্যেই একটা বৃত্তাকার টান থাকে। মন দিয়ে খেয়াল করলে বোঝা যায়, গোল বড় অক্ষরগুলির মাঝে ছোট অক্ষরগুলি যেন গুটিসুটি মেরে রয়েছে। এমন লেখার মালিকরা আসলে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন, আত্মরক্ষার দিকে থাকে তাদের কড়া নজর। তবে এরা খুব আবেগী হন।

ইংরেজিতে কিছু লেখার সময় বেশির ভাগ সময় সব বড় হাতের অক্ষরই ব্যবহার করতে ভালবাসেন? তা হলে আপনি নির্ঘাৎ স্বাধীনচেতা। যে কোনো সিদ্ধান্ত নিজে নিতেই ভালোবাসেন। বিশ্ববিখ্যাত কমিক চরিত্র ‘দ্য সিম্পসন’-এর স্রষ্টা ম্যাট গ্রোয়েনিংয়ের হাতের লেখাও ঠিক এমনটাই। স্বাধীনচেতা মানুষ হিসাবে তারও কম পরিচিতি নেই!

একেক সময় একেক রকম হাতের লেখায় লেখেন আপনি? অক্ষরের গঠন, মাপ, আকার সবই বদলে বদলে যায়? কখনো হয়তো সোজা লিখছন, কখনো আবার বেঁকিয়ে! এমন করলে সেই মানুষ বেজায় মুডি এবং তাদের আবেগের নানা বাঁক আছে। সেই প্রভাবই পড়ে হাতের লেখায়। তবে বেঁকিয়ে লেখা ও লেখার পংক্তি ক্রমে উপরের দিকে উঠে গেলে আপনি উচ্চাকাঙ্ক্ষী।

পয়েজনারের মতে, কোনো কোনো মানুষ আবার এমনভাবে লেখেন যেখানে অক্ষরগুলো অনেকটা কুঁচকে আছে বলে মনে হয়। মানসিক চাপে থাকাই এমন লেখার লক্ষণ। কিছু মানুষ স্বভাবজাত ভাবেই দুশ্চিন্তা ভোগেন, সাধারণত, তাদের লেখাই এমন হয় বলে মত বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement

পাতা বা কলমের উপর কতটা চাপ দিয়ে লেখেন, তাও নির্ধারণ করে আপনার ব্যক্তিত্ব। গ্রাফোলজিস্টদের মতে, তুলনায় বেশি সংবেদনশীল মনের অধিকারী হলে, লেখার সময় পাতার উপর কম চাপ দেন তিনি। যে কোনো আবেগতাড়িত বিষয়ে এরা বেশি জড়িয়ে পড়েন। কলমের উপরেও যেন চাপ দিতে কষ্টই হয় এদের!

খুব ফাঁকা রেখে লেখেন কি? লেখার সময় প্রতিটি শব্দ ও অক্ষরের মধ্যে যদি বেশি ফাঁকা রাখেন কেউ, তা হলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা একটু কঠিন বিষয়। চার পাশের সঙ্গে একটু বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতেই তিনি ভালবাসেন। ব্যক্তিগত স্পেস নিয়েও তিনি ওয়াকিবহাল। আবার কম ফাঁকা রাখলে তার সঙ্গে সহজেই যোগাযোগ সম্ভব ও তিনি খুব মিশুক হন।

খুব খুদে খুদে হাতের লেখায় লেখেন অনেকে। খুঁটিয়ে না পড়লে বোঝাই দুষ্কর কী লিখেছেন, তেমন মানুষরা ব্যক্তিগত জীবনে খুবই অন্তর্মুখী হন। নিজেদের সব কিছু হাট করে কারও সঙ্গেই মিশতে পছন্দ করেন না তারা। তাদের মনঃসংযোগও অন্যদের চেয়ে বেশি হয়।

বড় বড় অক্ষরে লেখেন কি? গ্রাফোলজির যুক্তিতে তা হলে আপনি আলাদা করে মনোযোগ চাইছেন অন্যের। শুধু তা-ই নয়, বড় বড় হাতের লেখার অধিকারীরা নিজেদের মত সম্পর্কেও খুব সচেতন, এবং তা ঘন ঘন পাল্টান না। বরং যে কোনো ঘটনায় তাদের মতামত খুব ব্যতিক্রমী উদাহরণ হয়ে দাঁড়ায়।

একেবারে বইয়ের পাতায় ছাপা অক্ষরের মতোই আপনার লেখা? তা হলে কিন্তু আপনি মানুষটা বেশ গতানুগতিক ধারণায় বিশ্বাসী। খুব নিয়মানুবর্তী ও সব কাজেই পারফেক্ট থাকতে পছন্দ করেন।

আরও পড়ুন: বসের সামনে যে ৭টি কথা বলবেন না

কোনো কোনো মানুষ বেশ জড়িয়ে লেখেন ও লেখার মাঝে বার বার কাটাকুটি করেন। সেই কাটার কায়দাও বেশ ছবির আকারে। এমন হাতের লেখার মানুষ সৃজনশীল না হযে যান না। মনের মধ্যে সব সময়ই এক শিল্পীসত্ত্বা পোষণ করেন তিনি। উদাহরণ? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর!

এইচএন/পিআর