প্রবাস

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিরা সম্মানের জায়গা করে নিয়েছে

প্রবাসীরা বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠালগ্নে মুক্তি সংগ্রামসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ও রাজনৈতিক সংকটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। রেমিটেন্স যোদ্ধাদের অব্যাহত প্রচেষ্টায় দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এবার প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য নিয়ে এসেছে নিরাপদ বিনিয়োগের সুযোগ।

Advertisement

আর এই সুযোগ তথা বিনিয়োগ বান্ধব পরিবেশ-পরিস্থিতি মালয়েশিয়ায় বসবাসরত (কর্মরত) বাংলাদেশিদের জন্য উপস্থাপন করতে এনআরবি আয়োজন করেছিল ‘কাম অ্যান্ড বিল্ড ইয়োর মাদারল্যান্ড’ (এসো গড়ি মাতৃভূমি) শীর্ষক সেমিনার।

২৪ নভেম্বর বিকেলে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের পেসিফিক রিজেন্সি অভিজাত হোটেলে সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারপারসন এম এস সেকিল চৌধুরীর সঞ্চালনায় কনফারেন্সে প্রধান অতিথি ছিলেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহা.শহীদুল ইসলাম।

আলোচক হিসেবে ছিলেন- মালয়েশিয়ার তেনাগা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড.নওশাদ আমিন, ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. আব্দুল কুদ্দুছ, মাহাশা ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল বাশার। সেমিনারে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুটি পৃথক বাণী পড়ে শুনানো হয়। হাইকমিশনার মুহা. শহীদুল ইসলাম প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিরা সম্মানের জায়গা করে নিয়েছেন। দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক।তিনি বলেন, মালয়েশিয়া আমাদের বন্ধু প্রতীম দেশ। বাংলাদেশ এখন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে বিশ্বে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে অর্থনৈতিক, সামাজিকসহ সবক্ষেত্রে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্ববাসী বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করছে। গত বছর বাংলাদেশ ৬.৫১ ভাগ জিডিপি গ্রোথ অর্জন করেছে।

Advertisement

তিনি বলেন, গত ১০ বছরে গড় জিডিপি অর্জন ছিল ৬ ভাগ। চলতি বছর ৭.২ ভাগ অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের রফতানি এখন ৩২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি, দেশের ৫০ বছর পূর্তিতে ২০২১ সালে রফতানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত করতে আমাদের সরকার বিস্তারিত কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশের বিনিয়োগ বান্ধব নীতির ফলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আসতে শুরু করেছে।

বিনিয়োগকারীদের সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী ইতোমধ্যে দেশের বিভন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। এগুলোর বাস্তবায়নের কাজ এগিয়ে চলছে।

মালয়েশিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে চাহিদা মোতাবেক সরকার সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করবে। সেমিনারে হাই কমিশনার আরো বলেন, মালয়েশিয়া সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রী এমপি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ এবং উন্নয়নের কথা তুলে ধরেছি। তারা বাংলাদেশের বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ উল্লেখ করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও দু’দেশের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য বৃদ্ধির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এজন্য উভয় দেশের বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান ও জানিয়েছেন তারা।

আগামীতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় উন্নত দেশের মর্যাদা লাভ করবে। সেমিনারে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগের ওপর তত্ত্ব বহুল ও শিক্ষামূলক দুটি প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন এনআরবির চেয়ারম্যান। এম এস সেকিল চৌধুরী।

Advertisement

ক্বারী জাকারিয়ার সুললিত কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে শুরু হওয়া কনফারেন্সে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ সরকারের অতিরিক্ত সচিব ও হাই কমিশনের শ্রম কাউন্সিলর মো. সায়েদুল ইসলাম, হাইকমিশনের ডিফেন্স উইং প্রধান এয়ার কমডোর মো. হুমায়ূন কবির।

উপস্থিত ছিলেন- হাইকমিশনের মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. রইস হাসান সারোয়ার, প্রথম সচিব (কন্স্যুলার) মো: মাসুদ হোসাইন, প্রথম সচিব (বাণিজ্য) মো. রাজিবুল আহসান, ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতা অহিদুজ্জামান ওহিদ, ওয়ালি উল্লাহ জাহিদ।

এ ছাড়া আলোচনায় অংশ নেন, ডা. শংকর চন্দ্র পোদ্দার, ব্যবসায়ী নেতা রাশেদ বাদল, শাহ আলম হাওলাদার, সাংবাদিক আহমাদুল কবির, সেগী ইউনিভার্সিটি অ্যান্ড কলেজের স্টুডেন্ট বৃষ্টি খাতুন সাবা, এনামুল হক, সালাহ উদ্দিনসহ অন্যান্যরা। সেমিনারে স্থানীয় ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, সাংবাদিকসহ দেশটিতে বসবাসরত বিভিন্ন পেশার এনআরবিরাও উপস্থিত ছিলেন।

এমআরএম/জেআইএম