আন্তর্জাতিক

নির্বাচনী উত্তাপ : পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমদের দলে ভেড়াচ্ছে বিজেপি

ভারতের মধ্যপ্রদেশে ভোটব্যাংকের মন পেতে সেখানে কংগ্রেস যেমন গো-ভজনায় মেতেছে, ঠিক তেমনই পশ্চিমবঙ্গেও মানুষের মন পেতে তারা যে মুসলিম বিরোধী নয়, তা বোঝাতে উঠেপড়ে লেগেছে বিজেপি। সম্প্রতি দলটির একেবারে সর্বোচ্চ স্তরে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দেশটির একটি গণমাধ্যম দাবি করেছে।

Advertisement

এতে বলা হয়েছে, সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক পুরোপুরি ‘ছেড়ে রেখে’ যেকোনোভাবে পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়া যাবে না, তা এতদিনে টের পেয়েছেন অমিত শাহরা। তাই আগামী লোকসভা ভোটের আগেই যত বেশি সম্ভব সংখ্যালঘুদের দলে টানার নির্দেশ তারা দিয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে।

সংখ্যালঘু নেতা-কর্মীদের ‘রাজনৈতিক ওজন’ যাচাই না-করে যেনতেন প্রকারে তাদের দলে টানাই এখন বিজেপির উদ্দেশ্য। যাতে পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু মুসলিমদের কাছে এই বার্তা পৌঁছায় যে, বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল নয়।

আরও পড়ুন : খালে তলিয়ে গেল বাস, নিহত ২৫

Advertisement

শনিবার দিল্লিতে ‘সেভ বেঙ্গল’ শীর্ষক এক আলোচনা সভা হয়েছে। এতে দিলীপ ঘোষ-সহ দিল্লির অনেক বিজেপি নেতা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেও পশ্চিমবঙ্গের শাসক দলের সন্ত্রাসের কারণে যে সংখ্যালঘুরাই সব থেকে বেশি আক্রান্ত তা পরিসংখ্যান-সহ তুলে ধরা হয়। পাশাপাশি, আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে বিজেপি যে ‘রথযাত্রা’ শুরু করছে, তা নিয়ে সংখ্যালঘুদের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। সেটা দূর করতে বিজেপি রথ শব্দটি যাত্রা থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তও নিয়েছে।

দলীয় সূত্রগুলো বলছে, ছয় মাসে বিভিন্ন জেলায় যতজন গেরুয়া শিবিরে নাম লিখিয়েছেন তার অন্তত ৫০ শতাংশ সংখ্যালঘু। বিজেপি বলছে, পঞ্চায়েত ভোটের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত তিন হাজার সংখ্যালঘু বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন নদিয়ায়। ইসলামপুরের দাপুটে তৃণমূল নেতা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরিকেও বিজেপি নিজেদের শিবিরে টেনে নিয়েছে।

বিজেপির দাবি, মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে সব মিলিয়ে প্রায় দশ হাজারের বেশি মানুষ কংগ্রেস এবং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। দুই বছর আগেও এ রাজ্যে বিজেপির কৌশল ছিল সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের মাধ্যমে সংখ্যাগুরু ভোট এককাট্টা করা। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে সেই কট্টর হিন্দুত্ববাদী ‘লাইন’ নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন ছিল বিজেপির ভেতরে।

আরও পড়ুন : থানে ধর্ষণ মামলা প্রত্যাহার করতে গিয়ে এসআই’র ধর্ষণের শিকার

Advertisement

বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা বলেন, ‘মোদির সরকার সব চেয়ে বেশি কাজ করছে সংখ্যালঘুদের জন্যই। সেটা এ রাজ্যের সংখ্যালঘুরাও বুঝেছেন। তাই তারা বিজেপিতে আসছেন। সংখ্যালঘুদের যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিছকই ভোটের স্বার্থে ব্যবহার করছেন সেই প্রচার চালানো হবে। এতে সংখ্যালঘুদের সমর্থন আমাদের দিকে আসবে।’

বিজেপির সূত্রগুলো বলছে, মুকুল রায় দলে আসার পর থেকেই নিয়ম করে দিল্লির নেতাদের বুঝিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের পুরোপুরি দূরে ঠেলে রেখে পশ্চিমবঙ্গ থেকে তৃণমূলকে উৎখাত করা কোনোভাবে সম্ভব নয়। মুকুলের ‘ছকে’ দেয়া এই কৌশল মেনে নিয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

এসআইএস/জেআইএম