এবারের নির্বাচনকে বিএনপির অস্তিত্বের লড়াই উল্লেখ করে এতে জয়ী হতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে প্রচেষ্টা চালাতে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে নির্বাচনে লড়াই করব। ৩০ ডিসেম্বরের পর থেকে দেশে স্বাধীন মানুষের পতাকা উড়বে।
Advertisement
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে বিএনপির আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ এখন কঠিন সময় পার করছে। এই অবস্থা থেকে উত্তরণে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধের দেয়াল তৈরি করে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির সঞ্চালনায় এবং দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট সেলিনা হোসেন, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন প্রমুখ।
Advertisement
মির্জা ফখরুর বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সামগ্রিক তৎপরতায় সরকার প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেছে। তাই তারেক রহমানকে দলীয় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ থেকে বিরত রাখতে স্কাইপ বন্ধ করেছে। তফসিল ঘোষণার পরও চারদিকে বিএনপির নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এ থেকে আমাদের মুক্তি চাইলে সব অস্ত্র ব্যবহার করতে হবে। আর সে অস্ত্র হলো ভোটের অস্ত্র। সবাই মিলে ভোট দিয়ে এই দানব সরকারকে হঠাতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণকে শক্তি হিসেবে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে। এর বিকল্প নেই। মামলার ভয়ে পালিয়ে না বেড়িয়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইতে হবে। আমাদের এই ভোট আন্দোলনকে চূড়ান্ত জয়ের দিকে নিয়ে যেতে হবে। আমরা সবাইকে নিয়ে এ নির্বাচনে জয়যুক্ত হব এবং ৩০ ডিসেম্বরের পর এদেশে স্বাধীন মানুষের পতাকা উড়বে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ বলেন, এই নির্বাচনকে আন্দোলন হিসেবে নিয়েছি। তারেক রহমান আজ দেশের বাইরে এবং খালেদা জিয়া কারাগারে। এই অমানবিক অবস্থায় আর থাকতে হবে না। সবাই মিলে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না দাবি করেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে ভেতরে সাগরের মতো ফুঁসছে সারাদেশের মানুষ। পরিবর্তনের জন্য তারা কেবল একটি সুযোগের অপেক্ষায়। আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে সেই পরিবর্তনের সুযোগ এসেছে। যেহেতু নির্বাচনের হুইসেল (তফসিল) বেজেছে তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বর আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচনের রায় ঘোষণা করব। এ নির্বাচনে এই জালিম সরকারের পতন ঘটানো হবে। নির্বাচনের আগে ২১ দিন প্রচারণার সুযোগ পাব, তখন সারাদেশ চষে বেড়াব।
Advertisement
তিনি বলেন, লন্ডন থেকে একটা মানুষ (তারেক রহমান) স্কাইপে কথা বলে আর এখানে ঢাকায় বসে ক্ষমতাসীনরা কাঁপে। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে মনে রাখতে হবে আমরা যখন অন্য নেতাকর্মী, সাধারণ মানুষের কাছে যাব, তখন তারা যেনভাবে আমাদের জন্য সুন্দর বাংলাদেশ ওরাই গড়ে দেবে।
বর্তমান ব্যবস্থায় আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিলে তা শুধু একটি প্রহসন হবে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে সবচেয়ে আতঙ্কিত যে ব্যক্তি তিনি হলো তারেক রহমান। সে কারণেই তারা আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে নিয়ন্ত্রিত বিচারব্যবস্থা দিয়ে একের পর এক তার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করছে। আমাদের দুঃখ হয় বিচারবিভাগ স্বাধীন থাকলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হতো না আর খালেদা জিয়াকেও কারাগারে থাকতে হতো না। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনকে একটি আন্দোলনের অংশ হিসেবে নিয়ে পরিবর্তনের আগে আরেকটি পরিবর্তন এনে এই দানব সরকারের হাত থেকে মুক্তি পেতে হবে।
এফএইচ/জেডএ/আরআইপি