‘জাতীয় পার্টি থেকে এবার অনেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। পার্টি সাংগঠনিক রূপ নিয়েছে, যা ধরে রাখতে হবে। অনেক দুঃসময় পেরিয়ে জাতীয় পার্টি আবার জেগে উঠেছে’- এমন মন্তব্য করেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান ১ নম্বরে অবস্থিত ইমানুয়েলস মিলনায়তনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
Advertisement
আরও পড়ুন >> মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নিচ্ছে জাতীয় পার্টি
এ সময় উপস্থিত মনোনয়ন প্রত্যাশীরা একযোগে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার দাবি তোলেন। নেতাকর্মীদের শান্ত করে এরশাদ বলেন, ‘আমার ওপর ছেড়ে দাও।’ প্রাথমিকভাবে ৩০০ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে অন্য জোটে যেতে হলে সেই সিদ্ধান্ত আমি নেব।’
এরশাদ আরও বলেন, ‘আজ এতো লোক আমার সঙ্গে। জাপার দুঃখ ঘুচেছে। জাপা বিলীন হয়নি, তার প্রমাণ আজ আপনারা। চেয়ারম্যান হিসেবে আমাকে কঠিন দায়িত্ব পালন করতে হবে। সবাইকে প্রার্থী হিসেবে দিতে পারবো না। আমি যাকে যোগ্য ভাববো সে মনোনয়ন পাবে। আর এটা সবাইকে মেনে নিতে হবে।’
Advertisement
‘জাতীয় পার্টি বিলীন হয়ে যায়নি। এজন্য ৩০০ আসনে প্রার্থী আছে কিনা তা দেখতে চেয়েছিলাম। আমরা সফল হয়েছি’- মন্তব্য করেন এরশাদ।
সমাপনী বক্তব্যে পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ বলেন, ‘আজ আমাদের আনন্দের দিন। অনেক নবীন এখানে উপস্থিত। দেখে বেশি খুশি হলাম। জাপার ক্ষমতার সময় যে উন্নয়ন হয়েছে, তা আর কেউ করতে পারেনি।’ তিনি বলেন, ‘সবাই তো আর মনোনয়ন পাবেন না, এক এলাকায় একজন প্রার্থী হবেন, বাকি সবাইকে জাপার প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে একযোগে কাজ করতে হবে।’
গত ১১ নভেম্বর থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু হয়। চলে পাঁচদিন। এরই ধারাবাহিকতায় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ আজ শুরু হয়েছে।
জাপা থেকে এবার দুই হাজার ৮৬৫ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। প্রাথমিকভাবে সেখান থেকে বাছাই করে ৭৮০ প্রার্থীর সাক্ষাৎকার নেয়া হবে। সেখান থেকে ৩০০ আসনের প্রার্থী নির্ধারণ হবে।
Advertisement
তবে রাজনৈতিক কারণে দলের চেয়ারম্যান যে সিদ্ধান্ত নেবেন তা সবাই মেনে নেবেন- মনোনয়ন পওয়ার ক্ষেত্রে এমন শর্তও যুক্ত করে দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর গুলশান ১ নম্বরে অবস্থিত ইমানুয়েলস মিলনায়তনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ কার্যক্রম শুরু হয়। এ উপলক্ষে সকাল থেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশীরা তাদের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে ইমানুয়েলস মিলনায়তনের বাইরে ভিড় করতে থাকেন। তবে মিলনায়তনের ভেতরে শুধু মনোনয়ন প্রত্যাশীরাই প্রবেশ করতে পারেন।
দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মিলনায়তনে প্রবেশ করেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের এবং মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার।
সাক্ষাৎকার গ্রহণ কার্যক্রমের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্ধারণে যে ধরনের সিদ্ধান্ত নেবেন তা পার্টির সকলে মেনে নেবেন। একই সাথে পার্টির চেয়ারম্যানকে আশ্বস্ত করেন, যেকোনো সিদ্ধান্তে পার্টির কেউ তাকে (এরশাদ) ছেড়ে যাবেন না। কারণ আপনাকে সবাই বিশ্বাস করেন।
জাপা মহাসচিব আরও বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে মহাজোট কিংবা অন্য কোনো জোটে আপনি (এরশাদ) যাবেন কিনা- সেটা একান্ত আপনার সিদ্ধান্ত। আপনি নির্ভুল পথে হাঁটছেন।
এএস/এইউএ/এমএআর/পিআর