আন্তর্জাতিক

যৌন মিলনের বিনিময়ে পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি!

ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডসের সদস্য লর্ড লেস্টারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনেছেন স্বনামধন্য এক অধিকার কর্মী। অভিযোগ, ১২ বছর আগে তাকে যৌন মিলনের আমন্ত্রণ জানিয়ে ‘ব্যারোনেস’ উপাধি দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন ওই লর্ড।

Advertisement

নারী অধিকার কর্মী জাসবিন্দর সাংঘেরা তার অভিযোগে জানিয়েছেন, কেবল যৌন হয়রানি করেই ক্ষান্ত হননি লেস্টার। পাশাপাশি তার সাথে যৌন মিলনে লিপ্ত হতে বলেছিলেন এবং তা না হলে এর ফলাফল ভয়াবহ হবে বলে হুমকিও দিয়েছিলেন লেস্টার।

আরও পড়ুন : খাশোগির লাশ টুকরো করার ছবি ফাঁস

পার্লামেন্টারি তদন্তে এ অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। লেস্টারের বয়স এখন ৮২ বছর। সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। পার্লামেন্টারি কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে। আধুনিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ইতিহাসে এর আগে এত দীর্ঘ সময়ের জন্য কাউকে অব্যাহতি দেয়া হয়নি।

Advertisement

জনপ্রিয় লেখক এবং কার্মা নির্ভানা চ্যারিটির প্রতিষ্ঠাতা সাংঘেরা নারীদের জোরপূর্বক বিয়ের বিরুদ্ধে মূলত প্রচারণা চালান। ১২ বছর আগে লেস্টারের সঙ্গে আইনের খসড়া নিয়ে কাজ করছিলেন তিনি। একদিন পার্লামেন্টের বৈঠক শেষ হতে অনেক রাত হয়ে যাওয়ায় তিনি শেষ ট্রেনটি মিস করেন।

আরও পড়ুন : জীবন সংগ্রামে ভিক্ষার থালা হাতে স্নাতক পাস বৃদ্ধা

লেস্টার তাকে বাড়িতে পৌঁছে দেয়ার প্রস্তাব দিলে তিনি গাড়িতে ওঠেন। সামনে ড্রাইভার আর পেছনে তারা দু’জন ছিলেন। এসময় লেস্টার তার শরীরের স্পর্শকাতর অংশে ক্রমাগত স্পর্শ করতে থাকেন। বার বার প্রতিবাদ করেও কোন লাভ হয়নি।

এরপর তাকে বাসায় নিয়ে যান লেস্টার। সেখানে তার স্ত্রী ছিলেন। কিন্তু পরদিন সকালে লেস্টারের স্ত্রী অফিসে চলে গেলে তাকে নানাভাবে যৌন হয়রানি করেন লেস্টার এবং তার সঙ্গে বিছানায় যাওয়ার আমন্ত্রণ জানান। সাংঘেরাকে প্রস্তাব দেন, যদি তিনি তার সাথে যৌন মিলন করেন, তবে এক বছরের মধ্যে তাকে ‘ব্যারোনেস’ বানিয়ে দেবেন লেস্টার। আর যদি তা না করেন, তবে হাউস অব লর্ডসে যাতে কোনোদিন কোনো আসন না পান, সেটা নিশ্চিত করবেন।

Advertisement

আরও পড়ুন : বিয়ের পরপরই পরীক্ষার হলে দে দৌড় কনের

সাংঘেরা জানান, এই ঘটনা তাকে ভীষণভাবে বিধ্বস্ত করলেও কাউকে জানাতে সাহস পাননি। কেননা তার ধারণা ছিল, লেস্টার উচ্চ পদস্থ এবং মান-মর্যাদায় তার অবস্থান উঁচুতে হওয়ায় অভিযোগগুলো কেউ বিশ্বাস করবে না।

কিন্তু পরে তার মনে হয়েছে এই কথাগুলো সবার জানা দরকার। তাই ২০১৭ সালে লেস্টারের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন তিনি। স্বতন্ত্র তদন্তের পর তদন্ত কমিটি একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। এছাড়া ব্রিটিশ আইনপ্রণেতারা গত মঙ্গলবার আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন, সেখানে কর্মীরা খুব সহজেই তাদের বিরুদ্ধে হওয়া যৌন হয়রানির ঘটনা নির্ভয়ে বলতে পারেন। ডিডব্লিউ।

এসআইএস/আরআইপি