ধর্ষণ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের হরিয়ানা প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। সম্প্রতি বিধানসভায় এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শাসিত হরিয়ানায় ধর্ষণ এবং শ্লীলতাহানির ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৪৭ শতাংশ।
Advertisement
এই প্রতিবেদন প্রকাশের পরপর কংগ্রেস-সহ অন্যান্য বিরোধীদল তীব্র সমালোচনা শুরু করে। সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। তিনি বলেছেন, ঝগড়া-বিবাদে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া প্রেমিককে ফিরে পেতেই নারীরা ধর্ষণের অভিযোগ করেন। তার এই মন্তব্যের পর আক্রমণ আরও তীব্র করেছে বিরোধীরা।
শুক্রবার পাঁচকুলা জেলার কালকা এলাকায় একটি জনসভায় খট্টর বলেন, ‘৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে পরিচিতদের মধ্যে। দীর্ঘদিন ধরে একসাথে ঘোরাফেরা, মেলামেশা করে। কখনও ঝগড়াঝাঁটি করে ছাড়াছাড়ি হলো। তারপরই এফআইআর করে দেয়, যে আমাকে ধর্ষণ করেছে।’
আরও পড়ুন : তাজমহল মসজিদে পূজা দিলেন ৩ নারী (ভিডিও)
Advertisement
খট্টর আরও বলেন, ‘আগেও ধর্ষণের ঘটনা ঘটতো, কিন্তু তা নিয়ে এত হইচই হতো না। দুঃখের বিষয়, এখন সেটাই হচ্ছে।’ কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা টুইটে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্য অত্যন্ত অপমানজনক, নিন্দনীয়। খট্টর সরকারের নারীবিরোধী নীতির পর্দাফাঁস হয়েছে। নারীর সম্ভ্রম রক্ষা করতে না পেরে তাদের ঘাড়েই দোষ চাপাচ্ছে রাজ্য সরকার।’ একই সঙ্গে তার প্রশ্ন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর মনোভাবই যদি এ রকম হয়, তাহলে সে রাজ্যে নারীরা নিরাপদ থাকবেন কীভাবে।’
২০১৪ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। ভূপিন্দর সিংহ হুডার পর মুখ্যমন্ত্রী হন আরএসএস প্রচারক খট্টর। সম্প্রতি হরিয়ানা বিধানসভায় ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি নিয়ে একটি প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।
আরও পড়ুন : মার্কিন নির্বাচনে লড়বেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিকি হ্যালি
এতে বলা হয়, রাজ্যে ২০১৪-১৫ সালের পর থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে ৪৭ শতাংশ। নারীদের অপহরণ বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। শ্লীলতাহানির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে ২৬ শতাংশ।
Advertisement
খট্টর অবশ্য আগেও শ্লীলতাহানি-ধর্ষণ নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছিলেন। ২০১হা৪ সালে শ্লীলতানি-ধর্ষণের জন্য নারীদের দায়ী করে তিনি বলেন, ছোটখাটো পোশাক পরে নারীরাই ধর্ষণে প্ররোচনা দেন।
ওই সময় তিনি বলেন, ‘নারীরা ভদ্র পোশাক পরলে ছেলেরা তাদের দিকে খারাপ নজরে দেখবেই না। তারা যদি এতই স্বাধীনতা চান, তাহলে নগ্ন হয়ে ঘুরতে পারেন।’ আনন্দবাজার।
এসআইএস/জেআইএম