‘সকল সাম্প্রদায়িক শক্তি এখন ধানের শীষে’-আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
Advertisement
তিনি বলেছেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেবের কথার আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমার প্রশ্ন, ড. কামাল হোসেন সাম্প্রদায়িক শক্তি? আ স ম আবদুর রব সাম্প্রদায়িক শক্তি? বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সাম্প্রদায়িক শক্তি? মাহমুদুর রহমান মান্না সাম্প্রদায়িক শক্তি? অলি আহমদ সাম্প্রদায়িক শক্তি? আমাদের মওদুদ আহমেদ, জমির উদ্দিন সাহেব সাম্প্রদায়িক শক্তি? যারা মুক্তিযোদ্ধা তারা সাম্প্রদায়িক শক্তি?’
‘একটা কথা আমি পরিষ্কার বলতে চাই, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে আপনারাই প্রশ্রয় দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন। এখন তাদের সঙ্গে বসে কওমি জননী হয়ে গেছেন, এটা সবাই জানে’ বলেন ফখরুল।
শনিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত আইনজীবীদের মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
Advertisement
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বিচার ব্যবস্থায় কোনো আইনের শাসন অবশিষ্ট নেই। সরকার তার ইচ্ছেমতো বিচার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করছে।’ আইন মন্ত্রণালয়ের একজন প্রভাবশালী সচিবের কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি যা হুকুম দেন আমাদের বিচারকদের তাই করতে হয়।’
ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, নিপুণ রায় চৌধুরীর প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এমন রাষ্ট্রে বাস করছি যে আইনজীবীরা পর্যন্ত মিথ্যা মামলায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। ড. কামাল হোসেন এটা কোর্টে তুলেছেন, এখনও আমরা সুরাহা পাইনি। যেই তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে, তার পর থেকে এখন পর্যন্ত সাড়ে ৪০০ গায়েবী মামলা হয়েছে। কীভাবে নির্বাচন করবেন? এভাবেই করতে হবে। এভাবেই মানুষকে নিয়ে এগিয়ে গিয়ে এদের এই নির্যাতন, এদের এ নিপীড়ন, এদের এ নীলনকশা-চক্রান্ত বানচাল করে ভোট বিপ্লব ঘটিয়ে আমরা জয়লাভ করব।’
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘এ কমিশন স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলো সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনি, জাতীয় নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু অবাধ করবে? আমরা শুনতে পাচ্ছি, জানি না এটা সঠিক নাও হতে পারে, ফলাফল না কি বদলে তারা সেন্টারে নিয়ে যাবে। আমরা বলতে চাই, কেউই মানবে না। আমরা সাবধান করে দিচ্ছি নির্বাচন কমিশনকে, এটা করতে পারবেন না। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করুন, সবাইকে সমান সুযোগ দিতে হবে, অন্যথায় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।’
মহাসমাবেশে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, মওদুদ আহমদ, নিতাই রায় চৌধুরী, সুব্রত চৌধুরী, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোয়াজ্জেম হোসেন ডালিম, তৈমুর আলম খন্দকার, মীর নাসির উদ্দিন, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, ড. মো. শাহজাহান, মোহাম্মদ শাহজাহান, মজিবর রহমান সরোয়ার, বোরহানউদ্দিন, বদরুদ্দোজা বাদল, গরীবে নেওয়াজ, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, খোরশেদ মিয়া আলম, মহসিন মিয়া, গোলাম মোস্তফা খান, ফাহিমা নাসরিন মুন্নী, শফিউদ্দিন ভূঁইয়া, মনসুর রহমান, ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ বক্তব্য দেন। সমাবেশে উপস্থিত বক্তাদের আলোচনা থেকে গৃহীত ১১টি সিদ্ধান্ত তুলে ধরেন জাতীয় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
Advertisement
অনুষ্ঠানে কারাবন্দি খালেদা জিয়াকে নিয়ে লেখা ‘এসো ঐক্য, এসো ঐক্য, দেশমাতার ডাকে ঐক্য’ গান গেয়ে শোনান কণ্ঠশিল্পী বেবী নাজনীন। সমাবেশ থেকে সাত দফা দাবি পেশ করেন সংগঠনের আহ্বায়ক জয়নুল আবেদীন।
এফএইচ/এনডিএস/জেআইএম